ছেলের সঙ্গে কৌশিক দাস। নিজস্ব চিত্র
মাঝরাতে শব্দবাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করায় পুলিশের সামনেই এক ব্যক্তিকে মারধর করার অভিযোগ উঠল একদল যুবকের বিরুদ্ধে। এমনকী, বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালানোর হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
রবিবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ, কালীঘাট থানা এলাকার ঈশ্বর গাঙ্গুলি স্ট্রিটের ঘটনা। সোমবার সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নিগৃহীত কৌশিক দাস। মুখ্যমন্ত্রীকেও অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। তবে ঘটনার সময়ে পুলিশকর্মীর উপস্থিত থাকার কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, কৌশিকবাবুর অভিযোগ, রবিবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ তাঁর বাড়ির সামনে শব্দবাজি ফাটাচ্ছিল একদল যুবক। বিকট শব্দে তাঁর ঘুম ভেঙে যায় এবং ভয়ে কেঁপে ওঠে তাঁর দেড় বছরের শিশুপুত্র। এর পরেই বিষয়টি জানিয়ে কালীঘাট থানায় ফোন করেন তিনি। কিছু ক্ষণ পরে ফের একই ভাবে জোরে শব্দ হয়। তখন তিনি বাইরে বেরিয়ে শব্দবাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করেন। তার পরেই শুরু হয় গোলমাল।
অসুস্থ কৃষ্ণা গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার, কালীঘাটে। নিজস্ব চিত্র
কৌশিকবাবু এ দিন জানান, জগন্নাথ নামের স্থানীয় এক যুবক ও আরও কয়েক জন সেখানে ছিলেন। আইপিএল-এ নাইট রাইডার্সের জয়ের কারণেই ওই শব্দবাজির তাণ্ডব বলে তাঁর অনুমান। জগন্নাথকে চিনতেন কৌশিকবাবু। তাঁকে শব্দবাজি ফাটাতে নিষেধ করেন সরাসরি। কিন্তু উল্টে তাঁকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকী, তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর করা হবে বলেও হুমকি দেয় জগন্নাথ। কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘জগন্নাথ বলছে ওকে থানা দেখিয়ে লাভ নেই। ভবানীপুর থানায় যেমন ভাঙচুর করেছিল তেমন আমার বাড়িতেও ভাঙচুর করবে!’’ সে সময়েই ঘটনাস্থলে আসেন এক পুলিশ কর্মী। তখন জগন্নাথ কৌশিকবাবুকে চড় মারে এমনকী ধাক্কা মারতে মারতে বাড়িতে ঢুকে দেয় বলে দাবি কৌশিকবাবুর। পুলিশের উপস্থিতিতে কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সেখানে কোনও পুলিশ কর্মী ছিলেন না। যদিও যে গাড়ি নিয়ে ওই পুলিশ কর্মী গিয়েছিলেন সেই নম্বরও অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেছেন কৌশিকবাবু।
এ দিন একই অভিযোগ করেন, আর এক স্থানীয় বাসিন্দা, ৭৩ বছরের বৃদ্ধা কৃষ্ণা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সবে হাসপাতাল থেকে ফিরেছি। ওই রাতে ঘুমোচ্ছিলাম। তার মধ্যে এমন শব্দে পুরো বাড়ি কেঁপে উঠল, যেন মনে হয় সব হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে। বুক ধড়ফড় করছিল।’’
নিয়ম অনুযায়ী, রাতে কোন শব্দবাজি ফাটানোই নিষিদ্ধ। সেখানে মাঝ রাতে এই ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন স্থানীয়রা। প্রতিবাদ করলেই এ ভাবে নিগৃহীত হতে হবে ভেবেই আতঙ্কে তাঁরা। সোমবার বিকেল পর্যন্ত আইনি পদ্ধতি চলেছে, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যায়নি এখনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy