ক্রিকেট মাঠে আগ্রাসন বাড়ছে ব্যাটসম্যানদের। টি-টোয়েন্টির যুগে যার যত বেশি ছক্কা, তারই জয়।
সেই ছক্কার আঘাতে এ বার গুরুতর আহত হলেন কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবল। একটি বল কেড়ে নিয়েছে তাঁর ডান চোখ। শনিবার ইডেনে ‘জি’ ব্লকের আপার টিয়ারে ছিলেন অলোক আইচ (৫৩)। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের ডেভিড মিলারের ছক্কা সোজা গিয়ে লাগে অলোকবাবুর চোখে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চোখটা বাঁচানো যায়নি।
প্রশ্ন উঠেছে, মাঠে যেমন ক্রিকেটাররা প্রায়ই চোট-আঘাতে জর্জরিত, এমনকী, অঙ্কিত কেশরীর মৃত্যুর মতো মর্মান্তিক ঘটনাও ঘটছে, তেমনই কি খেলা দেখতে বসে নিরাপত্তার ঝুঁকি রয়েছে দর্শকেরও?
কলকাতা পুলিশের পঞ্চম ব্যাটালিয়ানের ডিসি দেবাশিস সরকারের গাড়ির চালক অলোকবাবু। সে দিন ডিসি-র সঙ্গেই মাঠে ছিলেন তিনি। খেলা শুরু হয় বিকেল চারটেয়। প্রথমে ব্যাট করছিল কিংস ইলেভেন পঞ্জাব। শেষ ওভারে বল করতে আসেন কেকেআর-এর অ্যান্ড্রু রাসেল। প্রথম বলটাই মিলার রাসেলকে মারেন লং অফ-এ। প্রচণ্ড গতিতে বলটি গিয়ে লাগে অলোকবাবুর চোখে। তাঁর সহকর্মীদের কথায়, ‘‘ঘটনাটা ঘটে সন্ধে ছ’টা নাগাদ।’’
চক্ষু বিশেষজ্ঞ শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘সাদা বল রাখা হয় যাতে দিন-রাতের খেলায় তা দৃশ্যমান হয়। কিন্তু ফ্লাড-লাইটে দর্শকেরা বল না-ও দেখতে পারেন।’’ তবে, বল লেগে চোখ বাদ দেওয়ার এই ঘটনা নজিরবিহীন বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরাও।
ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ঘটনাটি নিঃসন্দেহে মর্মান্তিক। কিন্তু, কাউকে কি এর জন্য দায়ী করা যায়? হেডিংলে-তে এক বার আমার হাঁকানো ছক্কাতেও এক দর্শকের মাথায় গুরুতর চোট লেগেছিল।’’
সে দিন অলোকবাবুকে নিয়ে ডিসি ও অন্যেরা যান সিএবি-র মেডিক্যাল সেন্টারে। সেখান থেকে আলিপুরের এক হাসপাতালে। চোখের ক্ষতির বহর দেখে শেষ পর্যন্ত তা বাদ দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা।
এখনও আইসিসিইউ-তে অলোকবাবু। তাঁর স্ত্রী জানান, শনিবার রাতে কেউ ফোন করে তাঁকে খবর দেন। ওই অবস্থায় স্বামী তাঁকে বলেছেন, ‘‘চিন্তা করো না, ঠিক আছি।’’ যুগ্ম কমিশনার (সদর) রাজীব মিশ্র জানান, তাঁরা বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। অলোকবাবু চোখ ফিরে না পেলেও তাঁকে অন্য কোনও কাজে বহাল করা হতে পারে বলে তিনি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy