Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

নবাব তিনি সাজতে চাননি। কিন্তু নবাব হয়ে চেষ্টা করেছিলেন অন্তত কিছু পরিবর্তন আনতে। ওয়াজিদ আলি শাহের সে চেষ্টা ব্যর্থ হয় ব্রিটিশের সুচতুর কৌশলে।

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

মেটিয়াবুরুজের নবাব

নবাব তিনি সাজতে চাননি। কিন্তু নবাব হয়ে চেষ্টা করেছিলেন অন্তত কিছু পরিবর্তন আনতে। ওয়াজিদ আলি শাহের সে চেষ্টা ব্যর্থ হয় ব্রিটিশের সুচতুর কৌশলে। লখনউয়ের তখ্‌তে তাঁর ন’বছরের নবাবিকে চরিত্রহননের কালিমায় ঢেকে দিতে কম চেষ্টা করেননি গভর্নর জেনারেল ডালহাউসি। ১৮৫৬ সালে কলকাতায় নতুন ঠিকানা খুঁজতে হল ওয়াজিদ আলিকে। এই অবধি বোধহয় সকলেরই জানা। কিন্তু তিনি যে কলকাতার উপকণ্ঠে মেটিয়াবুরুজে প্রায় ৩২ বছর কাটিয়ে মারা যান— সেই পর্বের কথা আমরা শ্রীপান্থের বইয়ের বাইরে কতটুকু জানি? সুদীপ্ত মিত্র এ বার আলো ফেলেছেন সেই দিনগুলির উপরে, তাঁর পার্ল বাই দ্য রিভার/ নবাব ওয়াজিদ আলি শা’জ কিংডম ইন এক্জাইল (রূপা) বইয়ে। শুধু ইতিহাসের ধারাবিবরণী নয়, নবাব কী ভাবে সমকালীন শিল্প-সংস্কৃতিতে ছাপ ফেলেছেন, সুদীপ্ত দেখাতে চেয়েছেন সেটাই। নবাবের মৃত্যুর পর ‘ছোট লখনউ’কে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়ে ব্রিটিশ চেষ্টা করেছিল নবাবের স্মৃতিকে মুছে দিতে। কিন্তু কিস্‌সা, গজল, মরসিয়া, মসনভি-র রচয়িতা, কত্থক নাচের প্রবক্তা ওয়াজিদ আলির হাত ধরেই যে ঠুম্‌রির বিস্তার কলকাতায়। তাঁর জন্যই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সেতার সরোদ সানাই তবলা এসরাজের মতো যন্ত্রসংগীত, দম পোখ্‌ত রান্না বিশেষ করে বিরিয়ানি, ঘুড়ি ওড়ানো আর বুলবুলির লড়াই। এমনকী নিজস্ব চিড়িয়াখানাও ছিল তাঁর। এ দিকে নজর ফিরিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন সুদীপ্ত মিত্র। সঙ্গের ছবিতে মেটিয়াবুরুজে ওয়াজিদ আলির সমাধি, বই থেকে।

শিল্পী-সংবর্ধনা

তাঁর নৃত্যচর্চার বয়স হল পঁয়ত্রিশ। পাঁচ বছর বয়স থেকে তিনি মণিপুরী নৃত্যে তালিম শুরু করেন। দেশে-বিদেশে সুনামের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন। প্রমিতা মল্লিকের মেয়ে পূর্বিতা মুখোপাধ্যায় মণিপুরী ঘরানায় প্রথম কয়েক বছর তালিম পান গুরু বিপিন সিংহের কাছে। তার পর নাড়া বাঁধেন নৃত্যগুরু কলাবতী দেবী-র কাছে। আজও তাঁর সাহচর্যে নৃত্যশিল্পী পূর্বিতা আপ্লুত। এ বার এই সত্তরোর্ধ্ব কলাবতী দেবীকেই ৬ জুন শিশির মঞ্চে সন্ধে সাড়ে ৬টায় সংবর্ধনা দেবে ‘ভবানীপুর বৈকালী অ্যাসোসিয়েশন’। নৃত্যে স্বয়ং কলাবতী দেবী ও অন্যরা। বৈকালীর এটিই প্রথম ধ্রুপদীনৃত্যের অনুষ্ঠান।

রবিবাসর

‘রবিবাসর’— ‘বঙ্গ সাহিত্যসেবিগণের মিলনসভা’— নীরবে ইতিহাস রচনা করে চলেছে। সাহিত্য-সংস্থাটির পথ চলা শুরু ২৪ নভেম্বর ১৯২৯ সালে, ‘মানসী ও মর্ম্মবাণী’ পত্রিকার কর্মাধ্যক্ষ সুবোধচন্দ্র দত্তের ৫ আশুতোষ মুখার্জি রোডের বাসভবনে। এখন সংস্থাটির বয়স ৮৮। রবীন্দ্রনাথ ১৯৩৬ সালে এর সদস্য ও অধিনায়ক হন। আর অমর্ত্য সেন বিশিষ্ট সাম্মানিক সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন ২০০০ সালে। দুই নোবেল বিজয়ীর যোগদান এমন সাহিত্য বাসরের ইতিহাসে বিরলতম ঘটনা। সম্প্রতি গানে কথায় কবিতায় রবীন্দ্রনাথের ১৫৬তম জন্মদিন পালিত হল দারভাঙা হলে। ছিলেন প্রথম নারী সর্বাধ্যক্ষ নবনীতা দেব সেন, অলোক রায় প্রমুখ। ‘রবিবাসর’কে নিয়ে পঁচিশ মিনিটের তথ্যচিত্রের শুটিং শুরু করলেন পরিচালক রাজা সেন।

রাজনৈতিক

কলকাতার বৌদ্ধিক পরিসরে আলোচনা চলে অনেক কিছু নিয়েই। কিন্তু, বৈদেশিক অর্থনীতি বা রাজনীতি? সে চল তুলনায় অনেক কম। ক্যালকাটা রিসার্চ গ্রুপ-এর উদ্যোগে তেমনই একটি চর্চার আয়োজন হচ্ছে। ৯ জুন বিকেল পাঁচটায় স্বভূমি রঙদরবারে আয়োজিত হবে একটি আলোচনাসভা। বক্তা পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এস আকবর জাইদি, আর নেপালের সাংবাদিক কনকমণি দীক্ষিত। প্রথম বক্তার আলোচ্য, চিন কি পাকিস্তানকে দখল করে নিয়েছে? ভারতের বিদেশ এবং প্রতিরক্ষানীতির সামনে আপাতত এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আর নেই। দক্ষিণ এশিয়ার প্রবেশদ্বার হিসেবে নেপালের গুরুত্বের কথা বলবেন দ্বিতীয় বক্তা।

প্রয়াসম

মানসিক পীড়নের পাশাপাশি লিঙ্গবৈষম্য, যৌন হয়রানি, পারিবারিক হিংসা, শিশু বা নারী পাচার লেগেই থাকে আমাদের দৈনন্দিনে। যারা এর শিকার সমাজে তারা প্রান্তিক হয়ে পড়ে। এদের নিয়ে এবং এদের উপরে নির্যাতন নিয়েই ছবি করেছে প্রয়াসম-এর কমবয়সিরা। প্রয়াসম-এর বেশ কিছুকালের প্রয়াস সমাজ-পরিবেশে এ নিয়ে মানসিকতা গঠনের, ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল থেকে আলোচনাচক্র ইত্যাদির ভিতর দিয়ে আঞ্চলিক জাতীয় আন্তর্জাতিক স্তরে, তাদের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট-এরও অঙ্গ এ ধরনের কাজ। তাদের চতুর্থ ‘ব্যাড অ্যান্ড বিউটিফুল ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ শুরু হচ্ছে এসআরএফটিআই-তে ৫ জুন— বিশ্ব পরিবেশ দিবসে, ফিল্মস ডিভিশন-এর সহায়তায়। বস্তিবাসী কমবয়সিরা তৈরি করেছে ছবিগুলি, তত্ত্বাবধানে প্রয়াসম-এর স্টুডিয়ো এবং কর্ণধার অম্লান গঙ্গোপাধ্যায়। সঙ্গে তার একটির পোস্টার।

স্থাপত্যকলা

এদেশে স্থাপত্যবিদ্যায় উৎকর্ষ বৃদ্ধির জন্য স্যার জে জে স্কুল অব আর্টের অধীনে ১৯১৭-র ১২ মে তৈরি হয়েছিল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস। সফল ভাবে পথচলার পর ১৯২৯-এ বর্তমানের এই নামেই পরিচিতি লাভ করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে তৈরি হয় তার পশ্চিমবঙ্গ শাখা। এ বছর এদের শতবর্ষ। এই উপলক্ষে বঙ্গীয় স্থাপত্যকলা শীর্ষকে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সল্টলেক সিটি সেন্টারের পাশে সুরেশ নেওটিয়া সেন্টার অব এক্সেলেন্স ফর লিডারশিপে, ৯-১১ জুন। প্রথম দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রকাশ পাবে প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস নিয়ে একটি বই নস্টালজিয়া শীর্ষকে। গাঁধীজির অনুপ্রেরণায় ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত ভারতীয় স্থপতি লরি বেকার হিমালয় অঞ্চলে স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে সামান্য খরচায় বাড়ি তৈরির দিশা দেখিয়েছিলেন। এই পথিকৃৎ মানুষটির জীবন নিয়ে ওঁর পৌত্র ভিনি রাধাকৃষ্ণন নির্মাণ করেছেন আনকমন সেন্স শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র। রাধাকৃষ্ণনের প্রাককথনের পর এদিন প্রদর্শিত হবে ছবিটি। ১০ তারিখে স্থপতি মনিকা খোসলা ভার্গব একটি কর্মশালায় শেখাবেন রীতি মেনে ফুল সাজাবার কৃৎকৌশল। শেষ দিন থাকবে তিনজন তরুণ স্থপতির উপস্থাপনা। এই সংস্থার স্থপতিদের সাম্প্রতিক কাজ নিয়ে একটি প্রদর্শনীও এই সঙ্গে চলবে তিনদিন।

চম্পারন শতবর্ষ

বেঙ্গল টেনান্সি অ্যাক্ট-এর বলে জমিদারেরা বিহারের চম্পারন জেলায় চাষিদের জোর করে নীলচাষে বাধ্য করে। একে বলা হত তিনকাঠিয়া। এতে নীলকর সাহেবরা উল্লসিত হয়ে অত্যাচার আরও বাড়িয়ে দেয়। ১৯১৭-য় লখনউয়ে কংগ্রেস অধিবেশনে এই প্রসঙ্গ ওঠে এবং গাঁধীজির হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করা হলে তিনি এই অঞ্চলে চাষিদের সংগঠিত করে প্রথম প্রয়োগ করেন সত্যাগ্রহ। আন্দোলনের ফল চাষিদের পক্ষেই যায়, প্রত্যাহৃত হয় তিনকাঠিয়া নীতি। এ বছর এই ঐতিহাসিক ঘটনার শতবর্ষ। এই আন্দোলনকে মনে রেখে আয়োজিত হয়েছে একটি অনুষ্ঠান ‘শিল্পিত ’১৭– আ ক্র্যাফটেড ওডিসি’ শিরোনামে। ২৯ মে সল্টলেক সিটি সেন্টারে অনুষ্ঠানটি হল আর্ট ইলিউমিনেটস ম্যানকাইন্ডের ‘দেশজ’ পোশাক ব্র্যান্ড এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন টেকনলজির যৌথ আয়োজনে। এদিন এখানে চম্পারন সত্যাগ্রহ কালেকশন শীর্ষকে দেখান হল সেই নীলে রাঙানো পোশাকের সম্ভার।

ভাবানুবাদ

এক টিভি চ্যানেল তাঁকে রবীন্দ্রসংগীতের হিন্দি অনুবাদ গাইতে অনুরোধ করে। শিল্পী শান্তনু রায়চৌধুরীর গুরু পণ্ডিত সুবীর চক্রবর্তী তা শুনে বলেছিলেন, ‘রবীন্দ্রসংগীতের অনুবাদ কোনও ভাষাতেই সম্ভব নয়, ভাবানুবাদ হতে পারে।’ ক’দিন পর সুবীরবাবু শুরু করলেন হিন্দি ভাবানুবাদ। প্রথম গান ‘মেঘ বলেছে, যাব যাব’। সেই শুরু (২০০৮) শান্তনুবাবুর হিন্দি রবীন্দ্রগীত নিয়ে পথ চলা। দশটি গান নিয়ে ২০১১ সালে ‘মুসাফির’ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। ২০১৩-য় আরও দশটি গান নিয়ে ‘দিওয়ানা’। আর ২০১৫-য় ‘ইন্ত্‌জার’। রবীন্দ্রনাথের মোট তিরিশটি গান এতাবৎ এই হিন্দি ভাবানুবাদে প্রকাশিত। আসিয়ান ইন্ডিয়া কালচারাল অ্যান্ড সিভিলাইজেশন লিংকস-এর দ্বিতীয় বিশ্বসম্মেলনে শোনা গেল এর ১৫টি হিন্দি রবীন্দ্রগীত। বিষয় ‘জাভা যাত্রীর পত্র’।

স্বপ্ন শিশির

আমরা কেই-বা অভিমন্যু নই, আদৌ বেরতে পারি কি চক্রব্যূহ থেকে? এমন এক প্রশ্ন থেকেই গোপাল বসুর নতুন ছবি ‘স্বপ্ন শিশির’। ইতিমধ্যেই তিনি সমাজ সংশ্লিষ্ট নানান জিজ্ঞাসা থেকে তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন বেশ কিছু, কাহিনিচিত্র এই প্রথম। তাঁর ছবির মূল চরিত্র সুমন নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন নিয়ে বাঁচে, স্বপ্ন যাতে সত্যি হয় তাই সে ছুটে যায় অনাবিল নিসর্গ, গ্রামীণ মানুষ, শিকড়ের সংস্কৃতির কাছে, অনুভূতিময় নারীর কাছেও, কিন্তু ঘন আঁধার যে চারপাশে... এমন এক জীবনের কথাই বুনে দিতে চেয়েছেন নিজের ছবিতে, জানালেন পরিচালক। লোকায়ত জীবন ও তার শিল্পশৈলী উঠে এসেছে ছবিটিতে। ৯ জুন কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে এ-ছবি, সঙ্গে একটি দৃশ্য।

প্রতিভা স্মরণ

প্রতিভা বসু বাড়িতে পূজা করবেন বলে লক্ষ্মীমূর্তি কিনে এনেছেন, ‘নাস্তিক’ বুদ্ধদেব রাজি নন। তর্কাতর্কির সময় বু.ব.-র হাতে লেগে মাটির মূর্তিটা ভেঙে গেল। সারাদিন কথা বন্ধ। রাতে অষ্টধাতুর লক্ষ্মীমূর্তি কিনে এনে স্ত্রীর মান ভাঙালেন বুদ্ধদেব। ত্রিপুরা থেকে প্রকাশিত ‘পূর্বমেঘ’ (সম্পা. মণিকা দাস) পত্রিকার ‘প্রতিভা বসু বিশেষ সংখ্যা’য় এই গল্প শুনিয়েছেন মীনাক্ষী দত্ত। স্মৃতিকথন, সাক্ষাৎকার, আলোচনা এবং পঞ্জিতে সমৃদ্ধ সংখ্যাটির আলোকচিত্রের অ্যালবামটি বাড়তি পাওনা। পত্রিকা সম্পাদনার পাশাপাশি মণিকা দাস প্রতিভা বসুকে নিয়ে প্রকাশ করেছেন চারশো পৃষ্ঠার মনোযোগী এবং গবেষণালব্ধ একটি বই জীবনশিল্পী প্রতিভা বসু (বুক ওয়ার্ল্ড, আগরতলা)। সাতটি অধ্যায়ে ও পরিশিষ্টে বিন্যস্ত বইটিতে গান, সাহিত্যচর্চা, পত্রিকা সম্পাদনা, এমনকি প্রতিভা বসুর ছবি আঁকার দিকেও আলোকপাত করেছেন লেখক। এসেছে নাটক অভিনয়ের কথাও। বাস্তবিক, আমাদের প্রতিভা বসু চর্চায় এমন পূর্ণাঙ্গ কাজ এই প্রথম। ২৩ মে জীবনানন্দ সভাঘরে ‘অহর্নিশ’ পত্রিকা আয়োজিত ‘নরেশ গুহ স্মৃতি তর্পণ’ অনুষ্ঠানে ‘পূর্বমেঘ’ পত্রিকার প্রতিভা বসু সংখ্যাটি প্রকাশ করলেন সুমিতা চক্রবর্তী। উপস্থিত ছিলেন প্রতিভা-কন্যা মীনাক্ষী দত্ত, জামাতা জ্যোতির্ময় দত্ত এবং আগরতলার ‘পূর্বমেঘ’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক রামেশ্বর ভট্টাচার্য।

অল্পশ্রুত

কাজি নজরুল ইসলামের জন্মদিনে, ২৬ মে তাঁর গান আর কবিতা নিয়ে একটি অ্যালবাম বেরল: ‘নিউয়েস্ট নজরুল’ (আশা অডিয়ো)। বেশ কিছু অল্পশ্রুত গান গেয়েছেন মানসী মুখোপাধ্যায়, ঝুমুর গান বা গজল, গেয়েছেন তাঁর পিতা মানবেন্দ্র-র গলায় শোনা সেই রোম্যান্টিক গানও: ‘ওই যেখানে পঞ্চমী চাঁদ’, যা এখনও রেকর্ডে অধরা। মানসীর গানগুলিকে সমকালীন মননের উপযোগী করে তুলেছে রাহুল চট্টোপাধ্যায়ের যন্ত্রানুষঙ্গ। তাঁর আর তাঁর সম্প্রদায়ের যন্ত্রানুষঙ্গের সুপরিকল্পিত ব্যবহারে কবি নজরুলের কবিতাগুলির ছন্দোময় আবৃত্তি শোভনসুন্দর বসুর কণ্ঠে। এ অ্যালবামে তাঁর আবৃত্তি করা ‘ছাত্রদলের গান’ বা ‘খেয়াপারের তরণী’ এর আগে রেকর্ড হয়নি। ‘নতুন প্রজন্মের কাছে নজরুলের সৃষ্টিকে পৌঁছে দেওয়ার জন্যেই এ প্রয়াস’, জানালেন মানসী আর শোভন দু’জনেই।

নৃত্যগুরু

মা  মালতী দেবী যখন বেহালা বাজাতেন, তখন তাঁর ছোট্ট কচি কচি পা দুটো হামেশাই নেচে উঠত। আর নেচে উঠত দিদিদের বাজানো হারমোনিয়মে তোলা গানের সুরেও। তা দেখে বাবা কলকাতা হাইকোর্টের ব্যারিস্টার প্রকাশচন্দ্র সেন ভাবলেন, ‘এ মেয়ে এক দিন নৃত্যপারদর্শী হবেই হবে। অতএব ওকে এখনই কোনও নৃত্য অনুশীলন কেন্দ্রে দেওয়া উচিত।’ যেই ভাবা সেই কাজ। চার বছর বয়সেই বাবার অনুপ্রেরণায় তিনি জয়পুর ঘরানায় জয়কুমারী দেবীর কাছে কত্থক নাচ শিখতে শুরু করেন। পরবর্তী কালে কত্থক নৃত্যের কিংবদন্তি নৃত্যগুরু লখনউ ঘরানার শম্ভু মহারাজের কাছে নৃত্য শিক্ষা করেন। শিক্ষিত, অভিজাত পরিবারের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বড় হয়েছেন কত্থক নৃত্যগুরু বন্দনা সেন। জন্ম ১৯৪৭-এ কলকাতায়। পড়াশোনা রমেশ মিত্র ইনস্টিটিউশন ও যোগমায়াদেবী কলেজে। তাঁর শৈল্পিক চেতনা প্রখর। তিনি তাঁর নাচের মধ্যে এক অনন্য আভিজাত্য এনেছেন সাবলীল ভাবে। দেশ-বিদেশে তিনি প্রচুর অনুষ্ঠান করে সমাদর পেয়েছেন। নৃত্যশ্রী, নৃত্য শিরোমণি, কত্থক কুইন ছাড়াও বিদেশ থেকে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন। এ বার তিনিই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমির উদয়শঙ্কর পুরস্কার (নৃত্য) পেলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE