Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

রাখব না সরাব, মমতার ছবি নিয়ে পুর-সঙ্কট

অফিসার থেকে ইঞ্জিনিয়ার— কেউই খোলসা করে কিছু বলতে চাইছেন না। অথচ, পুরসভার অন্দরে কানাকানি যে চলছে, তা বেশ ভালই বোঝা যাচ্ছে।

ফ্রেমবন্দি: মেয়রের ঘরে মুখ্যমন্ত্রীর সেই ছবি। —নিজস্ব চিত্র।

ফ্রেমবন্দি: মেয়রের ঘরে মুখ্যমন্ত্রীর সেই ছবি। —নিজস্ব চিত্র।

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:২৪
Share: Save:

ভাগ্যিস, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা পুরসভায় আসেন না!

কিন্তু তিনি কখনও চলে এলে কী যে হবে, ভেবেই ভয় পাচ্ছেন কর্তা-ব্যক্তিদের অনেকে।

অফিসার থেকে ইঞ্জিনিয়ার— কেউই খোলসা করে কিছু বলতে চাইছেন না। অথচ, পুরসভার অন্দরে কানাকানি যে চলছে, তা বেশ ভালই বোঝা যাচ্ছে।

হলটা কী? কান পাততেই জানা গেল আসল গল্প। বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে থাকা নিজের যে ছবিটি দেখে মুখ্যমন্ত্রী খানিক ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন, পুর ভবনে মেয়র থেকে শুরু করে মেয়র পারিষদদের প্রায় প্রত্যেকের ঘরে সেই ছবিই রাখা আছে। সেই ২০১১ সাল থেকে। উল্লেখ্য, বিধানসভায় সে দিন পার্থবাবুর ঘরে ঢুকে নিজের ছবির দিকে এক ঝলক তাকিয়েই দলনেত্রী বলেছিলেন, ‘‘এই ছবিটা রেখেছেন কেন? আমি কি এতই মোটা!’’ এর পরেই পার্থবাবু দ্রুত বদলে ফেলেছেন ছবি। মমতার হালফিলের একটি ছবি এখন শোভা পাচ্ছে তাঁর ঘরে। দলের অন্য বিধায়ক ও মন্ত্রীরাও পড়ি কি মরি করে ছবি বদলাতে শুরু করে দিয়েছেন। এমনকী, দলের পক্ষ থেকেও ওই ছবি কোথাও না রাখতে বলা হচ্ছে।

আর এখানেই ব্যতিক্রম কলকাতা পুরসভা। মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহের কানন (মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়)-এর চেম্বারের ডান দিকের দেওয়ালে বড় করে বাঁধানো রয়েছে ওই ছবিটাই। একই ছবি রয়েছে ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদ, মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার, অতীন ঘোষ, দেবব্রত মজুমদার, তারক সিংহ-সহ অন্য মেয়র পারিষদদের ঘরেও।

আরও পড়ুন: ভোলবদল ৮ মাসেই, দার্জিলিঙে ফের স্বাগত মমতা

মুখ্যমন্ত্রী পার্থবাবুকে বলার পরেও কেন সতর্ক হলেন না? প্রশ্ন শুনেই ঢোঁক গিলতে শুরু করলেন মেয়র পারিষদেরা। এক জন বললেন, ‘‘কেন আর অস্বস্তি বাড়াচ্ছেন?’’ আর এক জন জিভ বার করে ক্ষমাপ্রার্থী, ‘‘এক্কেবারে ভুল হয়ে গিয়েছে।’’

আসলে সমস্যা হল, সব ছবি এক বারে সরাতে গেলে লোক জানাজানি বেশি হবে। আবার পুরনো ছবির বদলে কোন ছবি দেওয়া হবে তা-ও এখনও স্পষ্ট নয়। ফলে ছবি রাখা হবে না বদলানো হবে— রীতিমতো উভয়সঙ্কট। সবচেয়ে বড় কথা, কী করলে মুখ্যমন্ত্রী ‘রুষ্ট’ হতে পারেন, তা ভেবেই সকলে আকুল। তাই পদস্থ এক আমলার অনুনয়, ‘‘দোহাই, এ নিয়ে আর হইচই করবেন না।’’ আর মেয়র শোভনবাবু? প্রশ্ন শুনেই এক বার তাকালেন। তার পর একদম চুপ। কিছু যে বলতে চান না, তা-ও বললেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE