অধিকাংশ এসি রেকের লজ্ঝড়ে হাল। তা সামাল দিতে গিয়েই রীতিমতো হিমশিম দশা মেট্রো কর্মীদের।
এ বারের সমস্যা দরজা নিয়ে। বন্ধ হতে না চাওয়া দরজার জেরে যখন-তখন পরিষেবায় সমস্যা হচ্ছে মেট্রোর। তা সামলাতে গিয়ে কার্যত নাওয়া-খাওয়া ভুলতে বসেছেন মেট্রো কর্মীদের একাংশ।
যাত্রীদের যদিও অভিযোগ, কলকাতা মেট্রোয় দরজা বন্ধ হওয়ার সমস্যা নতুন কিছু নয়। কিন্তু গত কয়েক মাসে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়েছে। মেট্রোর অন্দরের খবর, কখন কোন রেকের দরজায় সমস্যা হতে পারে, সেটুকুও আঁচ করতে পারছেন না কর্মীরা। জোড়াতাপ্পি দিয়ে ব্যবহার করা রেকগুলির যন্ত্রাংশ অমিল হওয়ায় সমস্যা চরমে পৌঁছেছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য নতুন আসা দু’টি এসি রেক এখনও ব্যবহার করা যায়নি। এপ্রিল-মে মাসের তীব্র গরমের কথা ভেবে মেট্রো কর্তৃপক্ষকেও এসি রেকগুলির রক্ষণাবেক্ষণে জোর দেওয়ায় দিনের পরিষেবায় নন এসি রেকের সংখ্যা বাড়াতে হয়েছে। ফলে খারাপ নন এসি রেকের উপরে চাপ বেড়েছে। মেট্রো সূত্রে খবর, কোনও স্টেশনে নন এসি রেকে এক বার সমস্যা দেখা দিলে ৩-৪ মিনিট মেট্রো থমকে যাওয়া কার্যত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রায়ই ১০-১৫ বার চেষ্টার পরে কোনও ক্রমে দরজা বন্ধ করে ছুটছে মেট্রো। এমনকী, পরের স্টেশনগুলিতেও সমস্যা ফিরে আসছে। ফলে দিনের ব্যস্ত সময়ে এক বার ওই সমস্যা দেখা দিলে তার সামগ্রিক প্রভাব এসে পড়ছে গোটা দিনের পরিষেবায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে নির্দিষ্ট নিউ গড়িয়া থেকে দমদম পর্যন্ত মেট্রোপথে বিভিন্ন স্টেশনে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের মোতায়েন করতে হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে ট্রেনেও চালকের সঙ্গী হচ্ছেন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এই কর্মীরা। তবে এতেও সমস্যা মিটছে না।
এ দিকে, দেরিতে মেট্রো চলায় প্রায়ই দিনের শেষ মেট্রো প্রান্তিক স্টেশনে পৌঁছতে গড়ে ২০-২৫ মিনিট দেরি করছে। ফলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজেও ব্যাঘাত ঘটছে। এক মেট্রো কর্মীর কথায়, “খারাপ রেক নিয়ে আতঙ্কে আছি। ঘনঘন সারিয়েও রেকগুলি সমস্যামুক্ত রাখা শক্ত।”
মেট্রো সূত্রে খবর, কলকাতা মেট্রোয় ১৩টি এসি এবং ১৪টি নন এসি রেক রয়েছে। দিনের পরিষেবায় পাওয়া যায় এর মধ্যের ১৭-১৮টি রেক। ১৩টি এসি রেকের মধ্যে ৫-৬ টি রক্ষণাবক্ষেণের কাজে আটকে থাকলেই নন এসি রেকের উপরে চাপ বাড়তে থাকে। এক মেট্রো কর্তার বক্তব্য, কলকাতা মেট্রো শুরুর প্রথম দিকে ঝাড়খণ্ড এবং কর্নাটকের যে দু’টি সরকারি সংস্থা ওই রেকগুলি সরবরাহ করেছিল, তারা আর মেট্রোর রেক তৈরি করে না। ফলে রেকগুলির খারাপ হয়ে যাওয়ায় দরজার যন্ত্রাংশ পাওয়া সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই কর্তা আরও জানান, এসি রেকে দরজার সমস্যা থাকলেও তা ততটা তীব্র নয়। যন্ত্রাংশও পাওয়া যায়। তবে এসি রেক নিয়েও এত সমস্যা কেন? ওই কর্তা বলেন, “পুরনো রেকগুলির সব ক’টি ধাপে ধাপে সরানো না গেলে গোটা পরিষেবাতেই সমস্যা চলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy