সূর্য সেন ভবনের সামনের ফুটপাথে রয়েছে দখলদারি।
জবরদখল সরাতে ফের উদ্যোগী হল কলকাতা পুরসভা।
যোধপুর পার্কের কাছেই সূর্য সেন ভবনের সামনে গজিয়ে ওঠা বেআইনি দোকান রাখা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। একই ভাবে লর্ডসের মোড়ে গাজিয়ে ওঠা রেস্তোরাঁ বা হোটেলের ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ।
পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় দোকানদারদের সঙ্গে তাঁরা প্রথমে আলোচনা করে তাঁদের সরে যেতে বলবেন। এর পরেও কাজ না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরোর অন্তর্গত গুরুত্বপূর্ণ এই জায়গা। এই বরোর গল্ফগ্রিন এলাকায় পুরসভা অভিযান চালিয়ে ইতিমধ্যেই জবরদখল সরিয়েছিল। কিন্তু সমস্যার এখনও সমাধান হয়নি বলে পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি।
শহীদ সূর্যসেন ভবনের সামনের রাস্তায় দোকান বসলে পথচারীদের যাতায়াতে অসুবিধা হয়। তা ছাড়া সামনেই রয়েছে একটি হাসপাতাল। ফলে এখানে গাড়ি এবং অ্যাম্বুলেন্স আসে অনবরত। রাস্তার পরিসর ছোট হওয়ায় অনেকেই অসুবিধায় পড়ছেন বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে হকাররা বসলে এবং জায়গা ছেড়ে দিলে কিছু বলার থাকে না। কিন্তু পুরসভার অনুমতি ছাড়া পাকাপাকি পরিকাঠামো নির্মাণ করে বসা যাবে না। আমি ইতিমধ্যেই গল্ফগ্রিন অঞ্চলে বেআইনি দোকান অভিযান করে সরিয়েছি।’’
লর্ডসের মোড়ে গজিয়ে ওঠা খাবারের দোকান।
লর্ডসের মোড়ে সমস্যা কোথায়? লর্ডসের মোড় ও প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের সংযোগস্থলে রাস্তার কার্ভ চ্যানেল ভঙ্গুর। মোড়ের মুখে কিছুটা গর্তও হয়ে রয়েছে। সেখানেই জল জমে থাকে। ফুটপাথের ধারেই সারি সারি খাবারের দোকান গজিয়ে উঠেছে। ফুটপাথে বেঞ্চি পেতে বসেই চলছে খাওয়া-দাওয়া। ফলে, হাঁটা চলায় অসুবিধায় পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। অটো বা বাস থেকে নামলেই বেশিরভাগ সময়েই রাস্তার ধারের জমা জলে পড়তে হয়। এমনকী খাবারের উচ্ছিষ্ট রাস্তার পাশেই ডাঁই করে রাখা থাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রবীণ অরুণ দত্ত বলেন, “এই রাস্তা এবং ফুটপাথ দিয়ে হাঁটাহঁটি করাই কষ্টদায়ক। ফুটপাথে পড়ে একবার পা-ও ভেঙেছি।” এখানকার দোকানদারদের একাংশের বক্তব্য, দোকানগুলি ফুটপাথ ছেড়েই করা। কিন্তু ছোট দোকানগুলির মধ্যে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। সেই কারণেই ফুটপাথের একাংশ ছেড়ে ছোট কাঠের বেঞ্চি পেতে ক্রেতাদের বসতে দেওয়া হয়। ক্রেতারা চলে যাওয়ার পরে বেঞ্চি তুলে রাখা হয়। তবে, নিকাশি না থাকায় রাস্তার ধারেই ব্যবহৃত জল ফেলে দেওয়া হয়। এমনকী, নির্দিষ্ট কোনও জলের কল না থাকার ফলে ফুটপাথের এক ধারে ড্রামে জল রেখে দেওয়া হয়। সেই জলেই বাসন ধোওয়া হয়।
তপনবাবু জানান, দোকানের সামনে যেখানে বেঞ্চ পেতে খাওয়াদাওয়া হয় সেটি জবরদখলের আশঙ্কা রয়েছে। দোকানদারদের বারবার জানিয়েও কাজ হয়নি বলে তপনবাবুর দাবি। কলকাতা পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, রাস্তায় এ ভাবে বসতে দেওয়া সম্ভব নয়। রাস্তা এবং ফুটপাথে জল পড়ে পিছল হয়ে যাচ্ছে। যে কোনও সময়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কলকাতা পুরসভা আগেই এই অঞ্চলের রাস্তা পরিষ্কার রাখতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নোটিশ দিয়েছিল। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, দোকানের ভিতরে বসে খাওয়ানোর ব্যাপারে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু ফুটপাথের উপর লোক বসানো যাবে না। আবর্জনা বা জলও রাস্তার উপরে ফেলা যাবে না বলেও পুরসভা
তাঁদের জানিয়েছেন।
ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy