Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
ট্যাংরা

ঠাকুরমা খুন, গ্রেফতার নাতি

ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ঠাকুরমার নিথর দেহ। এক কোণে চুপচাপ, জুবুথুবু হয়ে বসে নাতি। জিজ্ঞেস করলেও উত্তর দিচ্ছে না। পরে সেই নাতিকেই ধরা হয়েছে ঠাকুরমাকে খুনের অভিযোগে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৩৬
Share: Save:

ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ঠাকুরমার নিথর দেহ। এক কোণে চুপচাপ, জুবুথুবু হয়ে বসে নাতি। জিজ্ঞেস করলেও উত্তর দিচ্ছে না। পরে সেই নাতিকেই ধরা হয়েছে ঠাকুরমাকে খুনের অভিযোগে। পুলিশ জেনেছে, মাদকাসক্ত, বছর উনিশের ওই তরুণ নেশার টাকা না পেয়ে ভারী কোনও জিনিস দিয়ে বারবার আঘাত করে তার ঠাকুরমাকে খুন করেছে। ওই তরুণের বাবাই ছেলের বিরুদ্ধে তাঁর মাকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার রাতে ট্যাংরার চিংড়িঘাটা লেনের ঘটনা।

পুলিশ জানায়, নিহত বৃদ্ধার নাম ছায়া চক্রবর্তী (৭২)। তাঁর নাতি, দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র প্রকাশকে বুধবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পড়শিদের একাংশ জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার রাতে তাঁরা চিৎকার শুনেছিলেন। তবে মাদকাসক্ত প্রকাশের বাড়িতে অশান্তি করা ছিল এক রকম নিত্যদিনের ঘটনা। তাই তাঁরা গা করেননি। করলে হয়তো ছায়াদেবীকে বাঁচানো যেত, এমনটাই মনে করছে পুলিশ।

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ময়না-তদন্তে ছায়াদেবীর দেহে ১৮টি ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘এতগুলি আঘাত থেকে বোঝা যাচ্ছে, কী তীব্র আক্রোশ কাজ করেছে খুনির মধ্যে।’’ হাতিয়ারটির খোঁজ করছে পুলিশ।

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, নেশার জন্য ঠাকুরমার কাছে ওই রাতে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিল প্রকাশ। ছায়াদেবী তা দিতে অস্বীকার করেন। কিছুটা বকাবকিও করেন নাতিকে। এর পরেই প্রকাশ এমন ঘটনা ঘটায়।

পুলিশ জানায়, ১২ নম্বর চিংড়িঘাটা লেনে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকে চক্রবর্তী পরিবার। ছায়াদেবীর ছেলে মিঠুবাবু একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। বছর দুয়েক আগে মিঠুবাবুর স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই প্রকাশ ধীরে ধীরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এক সময়ে সে পড়াশোনায় মেধাবী ছিল। অথচ গত বছর উচ্চ-মাধ্যমিকে পাশ করতে পারেনি সে। এর পরেই প্রকাশ মানসিক ভাবে আরও ভেঙে পড়ে, মাদকাসক্তিও বেড়ে যায় বলে জানান স্থানীয়েরা।

মিঠুবাবু জানান, মঙ্গলবার তিনি বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকে গিয়েছিলেন। রাতে ফিরে দেখেন, ঘরের মেঝেতে তাঁর মা রক্তাক্ত অবস্থা পড়ে। ঘরের বেশ
কিছু জিনিসে তিনি রক্তের ছাপ দেখতে পান। এর পরেই থানায় যোগাযোগ করেন তিনি। বুধবার প্রকাশকে আদালতে তোলা হয়। বিচারক ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Grandmother
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE