নিউ টাউনের বাসিন্দাদের জন্য এ বার সম্পত্তি কর চালু করল রাজ্য সরকার। বিধাননগর-রাজারহাট পুরসভার মধ্যে পড়ে না কিন্তু পুর পরিষেবা পাওয়া যায়— নিউ টাউনের এমন এলাকার জন্য নিউ টাউন-কলকাতা উন্নয়ন পর্ষদের (এনকেডিএ) মাধ্যমে কর আদায় করা হবে। যার কাঠামো হবে কলকাতার মতোই। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম জানিয়েছেন, ইউনিট এরিয়া ধরে কার কত কর ধার্য হবে, তার মূল্যায়ন হতে আরও মাসছয়েক সময় লাগবে।
বিধানসভায় বুধবার পাশ হয়েছে ‘দ্য নিউ টাউন, কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৬’। পুরমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, এনকেডিএ-র আওতায় যে এলাকা আসবে, সেখানে ইউনিট এরিয়া ভিত্তিতে কর নেওয়া হবে। তাতে কোষাগারের আয় বাড়বে এবং পরিষেবার মানও উন্নত হবে। কত বর্গফুট এলাকা, রাস্তা থেকে কত দূরে বাড়ি, কী ধরনের পরিষেবা সেখানে পাওয়া যায়— এ সব মাপকাঠির ভিত্তিতে ইউনিট এরিয়া ঠিক করে কর ধার্য করা হবে। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘ইনস্পেক্টর রাজের বদলে আমরা নিউ টাউনে সুস্থ কর কাঠামো চালু করছি।’’
বামেরা অবশ্য এই বিলকে ‘অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক’ আখ্যা দিয়েছে। সিপিএম বিধায়ক এবং রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য সংবিধানের ধারা দেখিয়ে দাবি করেছেন, সম্পত্তি কর আদায় করতে পারে পঞ্চায়েত বা পুরসভার মতো নির্বাচিত সংস্থা। নিদেনপক্ষে নিউ টাউনকে ‘নোটিফায়েড এরিয়া’ ঘোষণা করলেও কর বসানো যেত। এর বাইরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকাতেও কর নেওয়ার সংস্থান আছে। কিন্তু নিউ টাউন এর মধ্যে কোনওটাই নয়!
অশোকবাবুর বক্তব্য, ‘‘উন্নয়ন পর্ষদ কোনও ভাবেই পুরসভার সমতুল নয়। সরকার তো নিউ টাউনের ওই এলাকায় পুরসভা গড়ে নির্বাচন করতে পারত। জয়ী হয়ে তৃণমূলই না হয় বোর্ড গড়ত এবং কর নিত! না জিতলেও দখল করে নিয়ে চালাতে পারত। যেমন অন্য নানা জায়গায় করেছে।’’ কিন্তু তা না করে রাজ্য সরকার যা করল, তাতে আইনি জটিলতা হবে এবং তার জেরে অন্যান্য পুরসভাও কর আদায়ে সমস্যায় পড়বে বলে প্রাক্তন মন্ত্রীর আশঙ্কা।
বর্তমান পুরমন্ত্রী পাল্টা বলেছেন, এতে কোনও আইনি জটিলতা নেই। বিষয়টি ২০০৭ সালে বাম আমলেই রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেয়ে গিয়েছিল। যে দাবি খারিজ করে অশোকবাবু আবার বলেছেন, এমন কোনও বিল আগে পেশ করাই হয়নি। সরকারি স্তরে কোনও ভাবনাচিন্তা হয়ে থাকলেও তা কার্যকর হয়নি সে সময়ে। প্রসঙ্গত, শিলিগুড়ির মেয়র অশোকবাবু ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী এ দিনই রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদের সঙ্গে কথা বলেছেন শিলিগুড়ি পুরসভার বকেয়া পাওনার বিষয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy