Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
বন্দর এলাকা

পুর-বন্দর দ্বন্দ্বে ঝুলে খন্দপথের মন্দ কপাল

রাস্তা তো নয়, দেখে মনে হবে পুকুর। অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে গিয়ে দিনের পর দিন জলমগ্ন হয়ে থাকে বন্দর এলাকার এই রাস্তা। নাম ট্রান্সপোর্ট ডিপো রোড।হাইড রোড থেকে তারাতলা রোড সংযোগকারী প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তার পুরোটাই খানাখন্দে ভরা।

ট্রান্সপোর্ট ডিপো রোড

ট্রান্সপোর্ট ডিপো রোড

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৬ ০০:২০
Share: Save:

রাস্তা তো নয়, দেখে মনে হবে পুকুর। অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে গিয়ে দিনের পর দিন জলমগ্ন হয়ে থাকে বন্দর এলাকার এই রাস্তা। নাম ট্রান্সপোর্ট ডিপো রোড।

হাইড রোড থেকে তারাতলা রোড সংযোগকারী প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তার পুরোটাই খানাখন্দে ভরা। বুধবার ট্রান্সপোর্ট ডিপো রোড ঘুরে দেখা গেল, পুরো রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত। হাঁটু সমান জলে গর্তের মধ্যে একের পর এক গাড়ির চাকা বসে যাচ্ছে। গর্তে চাকা আটকে দিন দুয়েক আগে একটি চার চাকার গাড়িও উল্টে যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান। দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় এলাকাবাসীরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বন্দর ও কলকাতা পুর-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তাঁদের অভিযোগ, বন্দর এলাকার এই রাস্তার বেহাল দশা দীর্ঘ দিনের। তবু মেরামতি নিয়ে বন্দর ও পুরসভা একে অন্যের উপরে দায় চাপায়। ভুগতে হয় সাধারণ নাগরিকদের।

ট্রান্সপোর্ট ডিপো রোডের মতো একই দুরবস্থা তারাতলা রোড, কোল ডক রোড, সোনাই রোড ও সোনাপুর রোডের। তারাতলা রোডের বেআব্রু দশাও চোখে পড়ার মতো। তারাতলা থানার সামনে, জিঞ্জিরাবাজার এবং নেচার পার্কের কাছে তারাতলা রোডের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত। অগস্টেই তারাতলা রোডে পথ দুঘর্টনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। রাস্তার বেহাল দশার জন্য জিঞ্জিরাবাজার মোড়ে তারতলা রোডের উপরে ট্রলার উল্টে এক ব্যক্তি মারা যান সপ্তাহ দুয়েক আগেই। বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, দুর্ঘটনার পরেও তারাতলা রোডের ওই অংশ সংস্কার করা হয়নি। দুর্ঘটনাস্থল ঘিরে দেওয়া হয়েছে শুধু কয়েকটি গার্ড রেল দিয়ে। জি়ঞ্জিরাবাজারের ব্যবসায়ী শ্যাম মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘দুর্ঘটনাস্থলে রাস্তার এক দিকে মাটি আলগা হওয়ায় ট্রলার এক পাশে কাত হয়ে উল্টে গিয়েছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার পরেও আজ পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে রাস্তা সারাই করা হল না।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর মহম্মদ আনোয়ার খানের অভিযোগ, ‘‘বন্দর এলাকার সমস্ত রাস্তা পোর্ট ট্রাস্টের অধীন। বেহাল রাস্তা সারাইয়ের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও কিছু লাভ হয়নি।’’ জিঞ্জিরাবাজার মোড়ে তারাতলা রোডে রাস্তার বিপজ্জনক অংশ মেরামতির কাজ কবে শুরু হবে, তা নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফেও কোনও সদুত্তর মেলেনি। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) রতন দে বলেন, ‘‘বন্দর এলাকার সমস্ত রাস্তা বন্দরের অধীনে রয়েছে। ওই রাস্তা সারাইয়ের দায় বন্দর কর্তৃপক্ষের।’’

তারাতলা রোড- ছবি: অরুণ লোধ

কী বলছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ?

ওই এলাকার রাস্তা সংস্কারের দায় বন্দর কর্তৃপক্ষের উপরে চাপানোয় ক্ষুব্ধ কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান এম টি কৃষ্ণবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘বন্দর এলাকার রাস্তা সারাইয়ের কাজ পুরসভার এক্তিয়ারে পড়ে। বন্দর পুরসভাকে সম্পত্তিকর দেয়। আমি এক সময়ে হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কমিশনার ছিলাম। কোনটা কার কাজ, এটা বুঝি।’’ তবু সাধারণ নাগরিকদের সুখ-স্বাচ্ছ্যন্দের কথা মাথায় রেখে বন্দরের রাস্তা সংস্কারের কাজে হাত দিতে চলেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। এম টি কৃষ্ণবাবুর কথায়, ‘‘রাস্তা সংস্কারের কাজ অক্টোবর মাসে শুরু হবে। এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১৫ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। সময় লাগবে এক বছর।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE