Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

উৎসবের প্রস্তুতি

সব পাড়াতেই এখন পুজোর সাজ। চলছে মণ্ডপ তৈরি। প্রতিমা নির্মাণ। জমে উঠেছে উৎসবের প্রস্তুতি। কোন পাড়ায় কী হচ্ছে তার আগাম হদিস।সব পাড়াতেই এখন পুজোর সাজ। চলছে মণ্ডপ তৈরি। প্রতিমা নির্মাণ। জমে উঠেছে উৎসবের প্রস্তুতি। কোন পাড়ায় কী হচ্ছে তার আগাম হদিস।

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৪৮
Share: Save:

সঙ্ঘশ্রী

সময়ের সঙ্গে কলকাতার সংস্কৃতির যে সব ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে, তাদের মনে করিয়ে দিতেই আমাদের প্রয়াস ‘বাজলো তোমার আলোর বেণু’। বিশ্বরূপা, মিনার্ভা বা স্টার থিয়েটারের মতো মঞ্চগুলির আদলে হচ্ছে মণ্ডপ। এখানে দেবী দুর্গা স্বর্গীয় দেবতা নন। তাঁর মধ্যে থাকছে মানবিক লক্ষণ। ত্রিশূল ছাড়া কারওর হাতে কোনও অস্ত্র নেই, আছে নানা বাদ্যযন্ত্র। মণ্ডপের ভিতরে শোনা যাবে আবহসঙ্গীত। ছন্দোবদ্ধ ভাবে কাজ করবে আলো ও সুর। মণ্ডপের ভিতরের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বাবল্ র‌্যাপ, গ্লাস পেন্টিং। পিনাকী গুহর আলোকসজ্জা এবং আবহসঙ্গীত দর্শনার্থীদের মন কাড়বেই। প্রতিমার রূপদানে শিল্পী পরিমল পাল।

ভবানীপুর মুক্তদল

আমাদের পুজোর এ বার ৬৭তম বছর। থার্মোকল দিয়ে সাজছে মণ্ডপ। প্রবেশপথে মাথার উপরে থাকবে নীল আকাশ, স্রোতে ভাসমান ধ্যানমগ্ন নানা দেব-দেবী। মণ্ডপের ভিতরে যজ্ঞ-মন্ত্রপাঠ-ধুনোর গন্ধে তৈরি হবে সমাহিত পরিবেশ। দুর্গামূর্তির অসংখ্য হাত প্রার্থনার ভঙ্গীতে ঊর্ধ্বমুখী থাকবে। প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ। চতুর্থীর দিন উদ্বোধন। পঞ্চমী-ষষ্ঠীতে পাড়ার বাসিন্দারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন।

শিবমন্দির

এ বার আমাদের পুজোর ৭৯তম বছর। লোহা দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপের কাঠামো। অলঙ্করণ হিসেবে বেছেছি অফসেট প্রিন্টিং-এর প্লেট। রঙে বৈচিত্র আনতে থাকছে নতুন ও পুরনো প্লেট। নতুন প্লেটে তুলে আনছি পঞ্জিকার বিভিন্ন পাতা। মণ্ডপের মধ্যে অনেক ফ্রেমে থাকবে প্লেটগুলি। একচালার প্রতিমা দিয়ে পূর্ণ হবে ‘পঞ্জিকা পার্বণ’।

গড়িয়া নবদুর্গা

এ বছর আমাদের পুজোর ৭৫তম বছর। প্রতি বারের মতো পুরাণ থেকে মায়ের ১০৮টি রূপের মধ্যে থেকেই বেছে নেওয়া হয়েছে তাঁর রূপ। মণ্ডপ হচ্ছে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে। শিল্পী তপন ভট্টাচার্যের তৈরি সাবেক প্রতিমা হচ্ছে নয়ন ভোলানো। অষ্টমীতে ভোগের পাশাপাশি এখানে কুমারী পুজো হয়।

হাজরা ২২ পল্লি

৭১তম বর্ষের পুজোয় এ বার মণ্ডপ গড়া হচ্ছে জয়পুরের বিড়লা মন্দিরের আদলে। প্লাইউডের তৈরি মণ্ডপের ভিতরে থাকছে সুবিশাল ঝাড়বাতি। শিল্পী জিতেন পাল তৈরি করছেন সাবেক একচালার প্রতিমা। পুজো উদ্বোধনের দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও বস্ত্র ও কম্বল বিতরণ করা হয়। সপ্তমী থেকে নবমী পাড়ার সবার জন্যই ভোগ খাওয়ার বন্দোবস্ত থাকে।

বেহালা ক্লাব

৭১তম বর্ষে মধুবনী জেলার শিল্পে সাজছে মণ্ডপ। বাঁশ, কাঠ, লোহা, টালির কাঠামোর উপরে অলঙ্করণ হিসেবে থাকবে মধুবনী পেন্টিং, গোদনা পেন্টিং, শিক্কি ঘাসের পুতুল। কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি নানা জিনিসও ব্যবহার করা হবে। সাবেক প্রতিমায় দেখা যাবে লোকশিল্পের ছোঁয়া। তৃতীয়ার দিন উদ্বোধনী সন্ধ্যায় গান গাইবেন শ্রাবণী সেনের অ্যাকাডেমির সদস্যরা।

প্রগতি সঙ্ঘ (বেহালা)

আমাদের পুজোয় গড়ে উঠছে বাঁশের কেল্লা। পুজোর দিনে সেখানে বসবে পুতুলের রাজদরবার। মাটির পুতুলের সম্ভার তুলে ধরা হচ্ছে গোটা মণ্ডপে। শিল্পী সুব্রত মৃধা তৈরি করছেন পুতুলের গড়নের দেবী প্রতিমা। সোনার কেল্লা তো দেখেছেনই, এ বার চাক্ষুষ করুন বাঁশের কেল্লায় পুতুলের রাজসভা।

বড়িশা নেতাজি সঙ্ঘ

আমাদের মণ্ডপ নাটমন্দিরের আদলে। ছাদ হবে রঙিন টিন দিয়ে। বোতল, ছিপি ইত্যাদি দিয়ে ত্রিমাত্রিক গ্রাফিক্সও দেখা যাবে। প্রতিমাও আমাদের অস্ত্রবিহীন। দেবীর হাতে থাকবে শঙ্খ এবং পদ্ম। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দুঃস্থ শিশুরা আমাদের পুজোর উদ্বোধন করবে।

বাঘা যতীন উদয়ন

আমাদের এ বারের ভাবনা ‘চেতনা আনে আলো’। মণ্ডপ সাজাতে ব্যবহার করেছি বিভিন্ন মাপের কাচের বোতল। আসলে প্লাস্টিক বর্জন তথা দূষণ নিয়ন্ত্রণই আমাদের আসল উদ্দেশ্য। থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। থাকছে নাচ-গান, শাঁখ বাজানোর প্রতিযোগিতাও।

৭৭ পল্লি (ঢাকুরিয়া)

ঘরোয়া ভাবটাই আমাদের পুজোর ঐতিহ্য। সেই ভাবনা থেকেই মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। শিল্পী মাখন পাল তৈরি করছেন একচালার মায়ের মূর্তি। পাড়ার এই চারটি দিন সবাই মিলেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। থাকছে ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতাও।

২১ পল্লি (বালিগঞ্জ)

৬৯তম বর্ষে আমাদের ভাবনা দুই সতীন। সাবেক এবং থিম পুজোর যে চির বিরোধিতা, তাকে দূরে সরিয়ে ভক্তিই আমাদের পুজোর মূল চালিকাশক্তি। স্ট্র, টিন, মাটি, কাগজের বাক্স দিয়ে বানানো হচ্ছে মণ্ডপ। থাকছে ফাইবার গ্লাসের ফোটোফ্রেম, ছোট মূর্তিও। শিল্পী সনাতন পালের প্রতিমা আদতে সাবেক হলেও তাতে থাকছে আধুনিকতার ছোঁয়া।

পল্লি মঙ্গল সমিতি

‘মাটিতে আলোতে, মায়াবি খেলায়/ প্রাণ প্রতিষ্ঠা মাটির ঢেলায়’— এই ভাবনা থেকেই আমাদের মণ্ডপ তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে মাটির জিনিস। মণ্ডপের ভিতরে মাটি কেটে বেরিয়ে আসছেন দুর্গা। শিল্পী মলয় এবং শুভময়ের ভাবনায় পুরো মণ্ডপসজ্জা পূর্ণতা পেয়েছে। পুজোর চার দিন দর্শকদের মন মাতাবে বাউল ও ভাটিয়ালি গান।

সন্তোষপুর ত্রিকোণ পার্ক

আমাদের মণ্ডপে ঢুকলেই দর্শকেরা দেখতে পাবেন দুই মহাদেশের নয়ন-ভোলানো মেলবন্ধন। আফ্রিকার রোয়ান্ডার লোকশিল্পের সঙ্গে এখানে মিলমিশ ঘটেছে ওড়িশার রঘুরাজপুর, পঞ্জাবের লোকশিল্পের। শিল্পী রূপক বসুর ভাবনায় মণ্ডপ গড়তে ব্যবহার করা হচ্ছে মাটি, গোবর, কাঠ ইত্যাদি। আছে ওড়িশার মাটির পুতুল, ছবি, মূর্তিও। শিল্পী সৌমেন বসু গড়ে তুলছেন মানানসই প্রতিমা।

নিউ আলিপুর সাংস্কৃতিক পরিষদ

বরাবরের মতো ঘরোয়া, ছোট পুজো আমাদের। শিল্পী কাকলি পাল বানাচ্ছেন সাবেক ধাঁচের প্রতিমা। বাঁশ, কাপড় ইত্যাদি দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। পুজোর উদ্বোধনী সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পাশাপাশি, পুজোর দিনগুলিতে ভোগের আয়োজন তো আছেই।

নাকতলা অরবিন্দ সঙ্ঘ

থিমের ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের পুজো এ বার সাবেক। মূর্তি হচ্ছে কৃষ্ণনগর ঘরানার। মাঠে পুজো হওয়ার দরুণ বসবে মেলাও। ফলে উপরি পাওনা নাগরদোলনা, হরেকরকম খাবারের স্টল। পুজোর ক’দিন লেগেই থাকে মানুষের ঢল। ছোট একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছি আমরা। অষ্টমীতে সকলের জন্য থাকছে ভোগ। আর নবমীতে পাড়া-পড়শি সকলকে বসিয়ে খাওযার আয়োজন।

দ্য বেঙ্গল বয়েজ ট্রেনিং অ্যাসোসিয়েশন

প্রায় এক বছর পার করে মেয়ে তাঁর সন্তান-সন্ততিদের সঙ্গে আসেন বাপের বাড়ি। তাই এ বার পুজোয় মাকে আমরা বরণ করে নেব বরণডালা দিয়ে। মণ্ডপ সাজবে বরণডালার নানা সামগ্রী— সিঁদুর কৌটো, কড়ি, চুপড়ি, গাছ কৌটো, চাটাই দিয়ে। শিল্পী বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় ভাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করছেন দেবী প্রতিমা। ইনস্টলেশনের কাজ কিন্তু অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে।

ফাল্গুনী সঙঘ

আমাদের পুজোর এ বার ৭৪তম বর্ষ। সুরেন ঠাকুর রোডের এই পুজোমণ্ডপ তৈরিতে আমরা তো বাঁশ ব্যবহার করিই, কিন্তু এখানে বাঁশের ব্যবহার হবে অত্যন্ত নান্দনিক। বাঁশ দিয়েই তৈরি হচ্ছে সুবিশাল ঝাড়বাতি। প্রতিমা হবে সাবেক। প্রতিমার পোশাক-গয়না সবই মাটি দিয়ে
তৈরি হবে।

দিলীপ স্মৃতি সঙ্ঘ (রাসবিহারী মোড়)

আমরা বরাবর সাবেক পুজো করে থাকি। ৭৫তম বর্ষেও সেই ঐতিহ্য বজায় থাকছে। মণ্ডপ সাজানোর কাজে ব্যবহার করা হবে ঝুড়ি দিয়ে তৈরি নকশা। একচালা দেবীপ্রতিমা সাজবে শোলা দিয়ে। চতুর্থীতে উদ্বোধন। সে দিন মনোজ মুরলী নায়ার ও মনীষা মুরলী নায়ার গান গাইবেন। যোগ দেবেন পাড়ার বাসিন্দারাও। সপ্তমী থেকে নবমী সঙ্ঘের সদস্য ও অতিথিদের জন্য থাকে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা।

গল্ফ গ্রিন শারদোৎসব কমিটি (ফেজ ২)

আমাদের মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে প্যাগোডার আদলে। বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি নকশা আর ঝাড়বাতির সাজে সাজবে মণ্ডপ। চমক থাকছে সাবেক প্রতিমার চালচিত্রে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রং দিয়ে হাতে আঁকা হবে ফুল-পাতার নকশা আর শিবের মুখ। পুজোর
কাজ এগিয়ে গিয়েছে অনেকটাই। পঞ্চমীতে উদ্বোধন। সে দিন থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আর নবমীতে আমরা প্রবীণ নাগরিকদের নিয়ে পুজো পরিক্রমার ব্যবস্থা করি। থাকে বসে খাওয়ার ব্যবস্থাও।

কাশী বোস লেন

৭৮তম বর্ষে আমাদের ভাবনা ‘মেয়েবেলা’। জঠর থেকে বেরনো সদ্যোজাত শিশুকন্যার বড় হওয়া থেকে মা হয়ে ওঠার কাহিনি থাকছে এই পুজোয়। মণ্ডপে ব্যবহার হয়েছে সিলিকন থেকে তৈরি সিলেন জাতীয় আঠা, কাঠ, লোহা, পাইপ ইত্যাদি। মণ্ডপের ভিতরে ফুলকে গর্ভাশয় হিসেবে কল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে থাকছে শিশুর প্রতিরূপ। শিল্পী নবকুমার পাল থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বানাচ্ছেন প্রতিমা।

মিতালি কাঁকুড়গাছি

আমাদের পুজোর এ বার ৭৯তম বছর। বিহারের মৈথিলি শিল্প থিম। মৈথিলি পেন্টিং আর মডেলে সাজছে মণ্ডপ। পাল্‌কির মধ্যে দিয়ে মণ্ডপে ঢুকবেন দর্শনার্থীরা। কাঠামো তৈরির কাজ প্রায় শেষ। বিহার থেকে এসেছেন এক শিল্পী-পরিবার। তাঁদের হাতে দ্রুত সেজে উঠছে মণ্ডপ। মানানসই প্রতিমা তৈরির দায়িত্বে আছেন পরিমল পাল।

পূর্ব কলিকাতা ছাত্র সমিতি

ফেলে দেওয়া রঙের বালতি, কৌটো, তুলি, পেন্সিল এই সব জিনিস দিয়েই এ বার আমরা সাজাচ্ছি ‘রঙমহল’। ৬০ বছরের এই পুজোয় সব কিছুই রঙিন। প্রতিমাও বানানো হচ্ছে আমাদের মণ্ডপের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই। পাঁচ দিন নানা মজা ছা়ড়াও অষ্টমীতে থাকছে খাওয়া-দাওয়া।

সিআইটি পার্ক গোয়াবাগান

প্রকৃতিকে বাঁচানোর বার্তা দেবে আমাদের পুজো। তাই ভাবনা ‘বাতাস, জল, আকাশ, আলো/সবারে কবে বাসিবে ভালো’। মণ্ডপে ঢুকে দেখতে পাবেন পাহাড়ের বুকে রয়েছে প্রাচীন দুর্গামন্দির। তার নীচ থেকে একটি গাছ সেটিকে হেলিয়ে দিয়েছে। কিন্তু গর্ভগৃহ অক্ষত। খড়, বাঁশ, দড়ি, মাটি, প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে হচ্ছে মণ্ডপ। শিল্পী সনাতল পাল থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে প্রতিমা তৈরি করছেন, যা দেখতে হবে পাথরে তৈরি মূর্তির মতো।

সিঁথি ইয়ুথ অ্যাথলেটিক

হিংসার বিশ্বে শান্তির খোঁজে আমরা গৌতম বুদ্ধের শরণাপন্ন। তাই আমাদের ভাবনা ‘বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি’। পুজোমণ্ডপ প্যাগোডার আদলে। প্রতিমাতেও সেই আদল। দশভুজার হাতে থাকছে পদ্ম। মণ্ডপ জুড়ে থাকছে বুদ্ধের বিভিন্ন রূপ। বাজবে বৌদ্ধ স্তোত্র। ধর্মচক্র ছড়িয়ে থাকবে সারা মণ্ডপে়।

নাগরিক কল্যাণ কমিটি

আমাদের নাগরিক কল্যাণ কমিটি (ওয়েলিংটন)-এর পুজোয় এ বার তৈরি হচ্ছে গুজরাতি আবহাওয়া। কাচ, ঘোড়া, হাতি, কাপড়ের তৈরি গুজরাতি পাখা দিয়ে সাজছে মণ্ডপ। থাকবে গুজরাতি লোকশিল্প ও সংস্কৃতির নানা ছবি। শিল্পী পিন্টু সিকদারের ভাবনায় প্রতিমার রূপেও থাকছে গুজরাতি আদল। গত পাঁচ বছরে আমাদের পুজোর ভিড়টা বেড়েছে অনেক।

শ্যামবাজার পল্লি সঙ্ঘ

‘মাতৃরূপেণ সংস্থিতা’— এই ভাবনাকে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন ফলের বীজে সাজছে আমাদের মণ্ডপ। ব্যবহৃত হচ্ছে শসা, সবেদা, সুপুরির বীজ। শিল্পী নবকুমার পালের তৈরি প্রতিমা এ বার এক চালার। এই পুজো এ বার ৫৬ বছরে পড়ল।

যুববৃন্দ (উল্টোডাঙা)

মাটির ভাঁড়, থালা, ইটে সাজবে যাবে আমাদের মণ্ডপে। এই সবেই হচ্ছে নানা মডেল, মোটিফ, ভাস্কর্য ও ইনস্টলেশন। মাটির সাজের মণ্ডপ। প্রতিমা পোড়ামাটির। থাকছে না কোনও কৃত্রিম রং।

ইউনাইটেড ক্লাব (বাগুইআটি)

নারী নির্যাতন, কন্যা-ভ্রূণ হত্যা ইত্যাদি সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে বার্তা দেবে এই পুজো। প্লাইউডের উপরে রং করে হচ্ছে নানা মডেল, যা নারীশক্তির উত্থানের কথা বলবে। পৃথিবীর আকারের মণ্ডপে থাকবে মাতৃগর্ভে শিশুকন্যার মডেল। প্রতিমা এখানে রুদ্র রূপে।

৪৭ পল্লি যুবকবৃন্দ

শান্তির বার্তা দিতে আমাদের মণ্ডপ সাজছে প্যাগোডার ধাঁচে। পদ্মের উপরে আসীন থাকবেন এখানে দেবী দুর্গা। থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে শিল্পী কৌশিক পালের ভাবনায় তৈরি হচ্ছে প্রতিমা।

অধিবাসীবৃন্দ কানাই ধর লেন

এ বছর আমাদের মণ্ডপ সাজছে হরেক মনিহারি দ্রব্য দিয়ে। মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহার করা হবে কাচ-কাঠের চুরি, পুতুল ইত্যাদি নানা সম্ভার। মায়ের আগমন শুধু পুজো দিয়েই নয়, আমরা উদ্‌যাপন করি সবাই এক সঙ্গে। এলাকার দুঃস্থ শিশুদেরকে ব্যাগ, বই এবং পোষাক বিতরণের ভাবনা রয়েছে আমাদের। মণ্ডপের ভিতরের কাজ এগিয়ে গিয়েছে।

মানিকতলা সিআইটি পল্লি

মানুষ এখন ‘ভার্চুয়াল’ বিশ্বের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে সাবেক লক্ষণগুলি। সেই সময়কে ফিরিয়ে আনতে এ বারের প্রয়াস। ৫৪তম বর্ষে আমরা সাবেকিয়ানাকেই ধরে রাখছি। পাটের নানা সামগ্রী দিয়ে মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। শিল্পী বাসুদেব পাল করছেন সাবেক একচালার প্রতিমা।

২-এর পল্লি (জোড়াবাগান)

এ বার আমাদের মণ্ডপ জুড়ে থাকবে সারা ভারতের নানা দর্শনীয় স্থান। কোনার্ক, বদ্রিনাথ, দ্বারকা তৈরি হবে থার্মোকল আর বালিতে। ভাবনার সঙ্গে মানিয়ে হচ্ছে প্রশান্ত মিশ্রের প্রতিমা।

মেছুয়াবাজার সর্বজনীন

আমাদের এ বারের ভাবনা শিশুদের নিয়ে। প্রযুক্তির হাত ধরে কার্টুন জগতে প্রায় বিপ্লব এসে গিয়েছে। কিন্তু আমাদের এই মণ্ডপে থাকবে পুরনো দিনের কার্টুনগুলির কথা। মণ্ডপ সাজবে এলাকার শিশুদের আঁকা ছবি দিয়েও। সাবেক প্রতিমা করছেন স্বপন পাল।

বালক নবীন সঙ্ঘ

বালক নবীন সঙ্ঘ (মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের) এই পুজোয় প্রতিমা সাবেক হলেও মণ্ডপে থাকছে নানান সজ্জা। প্লাইয়ের উপরে থাকছে ময়ূরের পালকের মনোরম কাজ। এ ছাড়া মণ্ডপ জুড়ে থাকবে রামায়ণের নানা চরিত্র। একচালার প্রতিমার রূপদান করছেন শিল্পী গৌতম সেন।

বিডন স্ট্রিট সঙ্কেত

প্রতি বারের মতোই এ বারেও আমাদের পল্লিবাসীবৃন্দের পুজো সাবেক এবং ঘরোয়া। নানা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি পাড়ার মেয়ে-বৌয়েরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও করছেন। আর নবমীতে ভোগ বিতরণ তো থাকছেই।

বিবেকানন্দ সঙ্ঘ (বেলেঘাটা)

‘এক টুকরো শরৎ’-এর বার্তা দিতে হাজির সরকার বাজার বিবেকানন্দ সঙ্ঘ (বেলেঘাটা)। থার্মোকলের শিউলি ফুল আর জলের বোতল দিয়ে কাশফুল বানিয়ে মণ্ডপ সাজাব। মা দুর্গার কোলে থাকবেন গণেশ ও কার্তিক। কোনও দেবদেবীর হাতেই থাকবে না অস্ত্র। অস্ত্রের বদলে হাতে থাকছে পদ্মফুলের বাহার। মণ্ডপ সাজাচ্ছি আমরা সবাই।

দক্ষিণ রবীন্দ্রপল্লি সর্বজনীন

এ বার আমরা সাবেকি পুজো করছি। বাহুল্য বর্জিত মণ্ডপে সবুজ-সোনালি গয়নার সাজে থাকবে প্রতিমা। পুজো ২৩ বছরে পা দিল। অষ্টমীর সকালে খুব বড় করে অঞ্জলি দেওয়ার আয়োজন করি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

festival puja durga puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE