উল্টোডাঙার ক্যানাল ইস্ট রোডের একটি জায়গায় বেড়ে উঠছে মশার লার্ভা। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সেখানে পৌঁছে গিয়েছিল পুরসভার দল। তারা লার্ভা নিধনের কাজ শুরু করার আগে হঠাৎই রে রে করে তেড়ে এলেন একদল যুবক। মশা দমনের কাজ করতে দেবেন না তাঁরা। পুরসভার যে দলটি গিয়েছিল, সেই দলের সকলেই মহিলা। বাধা পেয়ে অবশ্য আর এগোতে সাহস করেননি তাঁরা। ফিরে গিয়ে সংশ্লিষ্ট বরোর স্বাস্থ্য দফতরে পুরো বিষয়টি জানিয়েছেন।
যা শুনে হতবাক পুর ভবনের পদস্থ অফিসারেরাও। শহরের বুকে মশা মারার কাজে যে এ ভাবে বাধা আসতে পারে, ভাবতে পারেননি তাঁরা। পুরসভা সূত্রের খবর, শুধু ক্যানাল ইস্ট রোডই নয়। দক্ষিণ কলকাতার ৯১ ও ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডেও এমন ঘটেছে। অভিযোগ, যাঁরা বাধা দিচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই শাসক দলের কর্মী-সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত। পুরসভার পক্ষে থেকে অবশ্য এ দিনের ঘটনার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে এক জন।
কী হয়েছিল এ দিন?
পুরসভা সূত্রের খবর, উল্টোডাঙার ওই জায়গায় ক্যানাল ইস্ট রোডে একটি মন্দির আছে। তার পাশেই কয়েকটি ফুলের টবে জমা জলে প্রচুর এডিস মশার লার্ভা জন্মেছিল। সেই খবর পেয়েই পুরকর্মীরা গিয়েছিলেন। এলাকার এক পুর স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই মহিলারা খুব ভয় পেয়েছেন। তাঁদের কী ভাবে এখন কাজে লাগাব, তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’’ ওই আধিকারিকের আশঙ্কা, এ ভাবে চলতে থাকলে মশা মারার কাজও বিঘ্নিত হবে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনা জেনে রীতিমতো ক্ষুব্ধ মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষও। তাঁর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, ‘‘মশাবাহিত রোগ থেকে শহরবসীকে রক্ষা করতে পুর প্রশাসন তৎপর। ওই কাজে কেউ বাধা দিলে তাঁকে ছাড়া হবে না।’’ তিনি জানান, পরবর্তী কালে কেউ যাতে এই কাজে বাধা দেওয়ার সাহস না পান, সে জন্য পুলিশ কমিশনারকে লিখিত অনুরোধ জানানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘এমনিতেই ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী মশার উপদ্রব এখন সবচেয়ে বেশি। তা রোধ করতে পুরসভা শহর জুড়ে কাজ করছে। এই কাজে প্রথম ধাপই হল মশার লার্ভা মেরে ফেলা। তাতে বাধা দেওয়া মানে ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশাকে বাড়তে দেওয়া। এমন চলতে থাকলে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া মহামারীর আকার নিতে পারে।’’
কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, যাঁরা বাধা দিয়েছেন তাঁরা তো শাসক দলের অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত? অতীনবাবু জানান, কে কোন দল করছে সেটা বড় কথা নয়। কোনও রাজনৈতিক রং দেখা হবে না। শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডে এখন মশা নিধনের কাজ চলছে। তা যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, সে জন্য প্রতিটি থানাকে সজাগ থাকতে পুলিশ কমিশনারের কাছে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy