Advertisement
০১ মে ২০২৪

সাম্বিয়া জেলেই, জামিন দুই বন্ধুর

তথ্যপ্রমাণের অভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনতে পারেনি পুলিশ। রেড রোডে বেপরোয়া গাড়িতে বায়ুসেনা অফিসারের পিষে যাওয়ার মামলায় শাহনওয়াজ খান ওরফে শানু এবং নুর আলম ওরফে জনির বিরুদ্ধে চার্জশিটে শুধু তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জামিনযোগ্য ধারা দিয়েছিলেন তদন্তকারীরা।

শানু ও জনি। —নিজস্ব চিত্র।

শানু ও জনি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৬ ০৩:১৭
Share: Save:

তথ্যপ্রমাণের অভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনতে পারেনি পুলিশ। রেড রোডে বেপরোয়া গাড়িতে বায়ুসেনা অফিসারের পিষে যাওয়ার মামলায় শাহনওয়াজ খান ওরফে শানু এবং নুর আলম ওরফে জনির বিরুদ্ধে চার্জশিটে শুধু তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জামিনযোগ্য ধারা দিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সেই চার্জশিটকে হাতিয়ার করেই শুক্রবার জামিন পেয়ে গেলেন শানু ও জনি।

১৩ জানুয়ারি রেড রোডে মহড়া কুচকাওয়াজে বায়ুসেনার অফিসার অভিমন্যু গৌড়কে পিষে দেয় সাম্বিয়া সোহরাবের অডি গাড়ি। সাম্বিয়ার পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয় জনি-শানুকেও। সাম্বিয়ার বাবা, তৃণমূল নেতা মহম্মদ সোহরাব পলাতক।

সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় শুক্রবার কলকাতার মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জয়রঞ্জন পালের এজলাসে জানান, শানু ও জনির জামিনের ব্যাপারে পুলিশের আপত্তি নেই। তার পরেই দু’জনকে দেড় হাজার টাকার বন্ডে জামিন দেন বিচারক। মূল অভিযুক্ত, সাম্বিয়াকে ফের জেল-হাজতে পাঠানো হয়।

শানু-জনির জামিনের পরেই উঠে এসেছে সোহরাবের আগাম জামিনের প্রসঙ্গ। চার্জশিটে শানু-জনির বিরুদ্ধে যে-অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই অভিযোগই আছে সোহরাবের বিরুদ্ধে। তথ্যপ্রমাণ লোপাট ছাড়াও রয়েছে সাম্বিয়াকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করার অভিযোগ। হুলিয়া জারি করেও সোহরাবকে ধরা যায়নি। যদিও পুলিশের একাংশের মতে, কিছু ‘ঘনিষ্ঠ’ পুলিশ অফিসারের ঘেরাটোপে ধারেকাছেই আছেন সোহরাব। জনি-শানুর জামিনের পরে তিনি সরাসরি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিতে পারেন।

শাসক দলের নেতা সোহরাবের সঙ্গে লালবাজারের অনেক অফিসারেরই ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তবে রেড রোড কাণ্ডের পরে সেনাবাহিনীর প্রবল চাপের মুখে পড়ে পুলিশ। ফলে ঘনিষ্ঠতা অস্বীকার করতে বেশি সময় লাগেনি। পুলিশের একাংশের প্রশ্ন, অজানা ডেরায় লুকিয়ে থাকা সোহরাব যাতে গ্রেফতারি এড়িয়ে সরাসরি আত্মসমর্পণ করতে পারেন, চার্জশিটে কি সেই পথই কার্যত তৈরি করে দেওয়া হল? ‘‘সোহরাব তো আর দাউদ ইব্রাহিম নন যে, তাঁর অজানা ডেরার হদিস মিলবে না,’’ বলছেন লালবাজারেরই এক কর্তা।

১৩ জানুয়ারি অভিমন্যুর মৃত্যুর পরে ১৬ জানুয়ারি সাম্বিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। ১৭ জানুয়ারি দিল্লিতে শানুকে এবং ১৮ জানুয়ারি বন্দর এলাকা থেকে জনিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গোড়া থেকেই শানু ও জনির পরিবার দাবি করছিল, ঘটনার সঙ্গে ওই দু’জনের কোন যোগ নেই। সাম্বিয়ার কথা শুনেই কলকাতা ছেড়েছিলেন তাঁরা। তদন্তকারীদের একাংশও স্বীকার করে নিচ্ছেন, শানু ও জনি যে গাড়িতে ছিলেন না, শনাক্তকরণের পরেই নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল। চার্জশিট পেশের পরে জনি ও শানুকে আটকে রাখার কোনও পথ ছিল না পুলিশের কাছে। এ দিন জামিনের পরে শানু-জনির আইনজীবী ফজলে আহমেদ খান ও দানিশ হক বলেন, অহেতুক দু’মাস জেলে আটকে রেখে ওই দু’জনকে হেনস্থা করা হল।

সাম্বিয়ার আইনজীবী রানা মুখোপাধ্যায় আদালতে দাবি করেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধেও খুনের মামলা প্রযোজ্য নয়। সরকারি আইনজীবীর দাবি, এ ব্যাপারে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE