প্রতীকী ছবি।
শুধু পাঠ্য বই নয়, পড়ুয়াদের ঝোঁক থাকতে হবে নাচ, গান ও অন্য সংস্কৃতিমূলক কাজেও। পাঠ্য বই পড়ানোর জন্য নয়, উল্টে পাঠ্য বই-এর বাইরে তাদের বের করে আনতে এ বার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করল সর্বশিক্ষা মিশন। আজ, বুধবার থেকে দমদমের একটি স্কুলে কলকাতার ২৮টি মাধ্যমিক স্তরের স্কুলের প্রতিনিধিদের নিয়ে এই প্রশিক্ষণ শুরু হল।
কলকাতা জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, পড়ুয়াদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানো এবং পড়াশোনার একঘেয়েমি থেকে মুক্ত করতে গেলে তাদের সহপাঠ্যক্রমিক কাজে ঝোঁক বাড়াতে হবে। নাচ, গান, অঙ্কন, ক্যারাটে, খেলাধুলো ইত্যাদিতে যুক্ত থাকলে পড়ুয়ারা বেশি সক্রিয় থাকে। সর্বশিক্ষা মিশন থেকে শিক্ষকদের এই প্রশিক্ষণই দেওয়া হবে।
বিকাশ ভবনের এক কর্তা জানান, সম্প্রতি অনূর্ধ্ব ১৭ ফুটবল বিশ্বকাপের খেলা দেখতে সল্টলেকে বিভিন্ন জেলার স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে আসা হয়েছিল। স্কুলশিক্ষা দফতর ও পরিবহণ দফতরের সেই যৌথ উদ্যোগ যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। তিনি জানান, পড়ুয়াদের, বিশেষ করে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ ও উৎসাহ নিয়ে বিকাশ ভবনে আলোচনাও হয়েছে। তার পরেই ঠিক করা হয় পড়াশোনার পাশাপাশি পড়ুয়াদের অন্য কাজেও যুক্ত করতে হবে। কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনে থাকা স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর কালচারাল রিসোর্স অ্যান্ড ট্রেনিং’ বা সিসিআরটি-র পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষকদের তিন দিন এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
সর্বশিক্ষা মিশনের এক কর্তা জানান, ভারতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বাঁচানোর আগ্রহ বর্তমান পড়ুয়াদের মধ্যে খুবই কমে গিয়েছে। শিক্ষকদের একটা বড় অংশও আর পড়ুয়াদের নাচ, গান, আবৃত্তি, বিতর্কসভায় অংশ নিতে উৎসাহিত করেন না। তাই প্রথমে শিক্ষকদেরই নির্দিষ্ট পথে নিয়ে আসতে চাইছে সর্বশিক্ষা মিশন। প্রথম ধাপেই শহরের সমস্ত স্কুলকে এই আওতায় আনা হচ্ছে না বলে জানান ওই কর্তা। প্রথমে আহিরীটোলা বঙ্গ বিদ্যালয়, মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন মেন, বঙ্গবাসী কলেজিয়েট স্কুল, নারকেলডাঙা হাই স্কুল, বিজয়গড় বিদ্যাপীঠ, তালতলা হাইস্কুল-সহ মোট ২৮টি স্কুলের প্রতিনিধিরা থাকবেন। শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য এটা খুবই জরুরি বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মহলের কর্তারা।
নারকেলডাঙা হাইস্কুল (উচ্চ মাধ্যমিক)-এর প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। আমাদের স্কুল থেকেও প্রতিনিধি যাচ্ছেন। তিনিই ফিরে এসে পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াবেন।’’
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের সর্বাঙ্গীন বিকাশে কো-কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আজকাল শিক্ষা ব্যবস্থায় এগুলোকে পাত্তা দেওয়া হয় না। সরকার এর উপর জোর দিলে নিশ্চয়ই ভাল হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy