পাঁচ তলার কার্নিসে বসে মোবাইল ঘাঁটছে অঙ্কিত। তাকে মই দিয়ে নামানোর চেষ্টা করছে দমকল।
গাঁওওয়ালো... বাসন্তীর প্রতি প্রেম যাচাই করতে অনেক উঁচু জলের ট্যাঙ্কের উপরে দাঁড়িয়ে বীরু। যত ক্ষণ না বাসন্তী বিয়ে করতে রাজি হয়েছে, ক্রমাগত সে দিয়ে যাচ্ছে ‘আত্মহত্যা’র হুমকি।
রমেশ সিপ্পির শোলে-র সেই দৃশ্যই যেন একটু অন্য রকম ভাবে দেখা গেল এ বার দমদমে। তবে, এ বার বাসন্তীর জায়গায় বাইক। বাইক-প্রেমের জেরে পাঁচতলা আবাসনের কার্নিসে উঠে পড়ল এক কিশোর। সেখান থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার হুমকিও দিতে থাকে সে!
কখনও ছাদ থেকে, তো কখনও বা নীচে থেকে মই লাগিয়ে— প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে দমকলের কালঘাম ছুটে গেল তাকে উদ্ধার করতে। তবু, কার্নিস থেকে তাকে নামানো যায়নি। বরং, কার্নিস থেকে কার্নিসে লাফিয়ে বেড়াল সে। সকাল ১১টায় উঠেছিল। অবশেষে বিকেল পৌনে পাঁচটা নাগাদ নিজেই মই বেয়ে নীচে নেমে আসে ওই কিশোর।
আরও পড়ুন: ভিক্ষুক খুঁজে দিলেই মিলবে ৫০০ টাকা!
তার নাম অঙ্কিত সিংহ। অঙ্কিতের এই ‘কাণ্ড’ ঘিরে সোমবার দিনভর উত্তেজনা রইল দমদমের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের এমএম ঘোষ রোডে। রীতিমতো হইচই পড়ে গেল এলাকায়। বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পাড়া-প্রতিবেশীরা ভিড় জমালেন অঙ্কিতদের ওই আবাসনের নীচে।
ঘটনার সূত্রপাত গত কাল রবিবার। ওই দিন রাতে বাইক চালানো নিয়ে বাবার সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে অঙ্কিত। সোমবার সকালে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা ছিল তার। তার আবদার ছিল, সে নিজেই বাইক চালিয়ে বাবাকে ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে যাবে। তাতে বাবা রাজি হননি। কারণ, অঙ্কিতের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। সোমবার সকালেও এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। কথা কাটাকাটি চরম পর্যায়ে পৌঁছয় এবং অঙ্কিতকে সজোরে চড় মারেন তার বাবা।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এর পরেই বেলা ১১টা নাগাদ পাঁচতলার কার্নিসে উঠে পড়ে সে। ওই আবাসনেই তিন তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকে অঙ্কিতরা। হাজার কাকুতি-মিনতি করেও তাকে কার্নিস থেকে নামানো যায়নি। শেষে দমকলে খবর পাঠানো হয়। কিন্তু দমকল কর্মীরা মই দিয়ে তার কাছে পৌঁছনোর আগেই সে লাফিয়ে অন্য কার্নিসে চলে যায়। এ ভাবেই দিনের বেশির ভাগ সময়টা কেটেছে। যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, তাই আশপাশের ভিড় সরিয়ে নীচে জাল বিছিয়ে রাখার ব্যবস্থা করে ফেলে দমকল। পাশাপাশি তাকে বোঝানোরও চেষ্টা চালিয়ে যান তাঁরা। পরে বিকেল ৪টে ৫০ নাগাদ সে নিজেই দমকলের মই বেয়ে নীচে নেমে আসে। নীচে তত ক্ষণে এসে পৌঁছেছে অ্যাম্বুল্যান্স। তাতে করেই তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy