Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

২ ছাত্রীকে ‘মার’, গ্রেফতারির পরে জামিন শিক্ষিকার

এ দিন ওই ছাত্রীরা অভিযোগে জানায়, মোবাইল চার্জার দিয়ে তাদের শক দেওয়ার ভয় দেখান দীপিকাদেবী। এতেও কাজ না হলে চেয়ারের সঙ্গে দড়ি দিয়ে পিঠের দিকে হাত মুড়ে বেঁধে রাখা হয়।

অভিযোগকারিণী মণি বৈরাগী।

অভিযোগকারিণী মণি বৈরাগী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০১:১২
Share: Save:

দ্বিতীয় শ্রেণির দুই ছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগে গ্রেফতার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে। পুলিশ জানায়, যাদবপুর থানা এলাকার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের কাছে রাজেন্দ্রপ্রসাদ কলোনির রাজেন্দ্র শিক্ষা সদন প্রাথমিক স্কুলের ঘটনা। মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয় প্রধান শিক্ষিকা দীপিকা ঘোষকে। রাতে জামিনও পান তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দ্বিতীয় শ্রেণির দুই ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকেরা যাদবপুর থানায় অভিযোগ জানান, দীপিকাদেবী প্রায়ই তাদের ক্লাসের টেবিল পরিষ্কার করতে বলেন এবং নিজের টিফিন বাক্স ধুয়ে দিতেও চাপ দেন। গত শুক্রবার ওই দুই শিশু প্রধান শিক্ষিকার হুকুম মানতে রাজি না হওয়াতেই নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ।

এ দিন ওই ছাত্রীরা অভিযোগে জানায়, মোবাইল চার্জার দিয়ে তাদের শক দেওয়ার ভয় দেখান দীপিকাদেবী। এতেও কাজ না হলে চেয়ারের সঙ্গে দড়ি দিয়ে পিঠের দিকে হাত মুড়ে বেঁধে রাখা হয়। মুখে রুমাল চেপে বেধড়ক মারধরও করা হয়। এর পরে অবশ্য শিক্ষিকার কথা মতো কাজ করে তারা। অভিভাবককে জানালে এর থেকে বড় শাস্তি পেতে হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার ফের একই ঘটনা ঘটে। এক নির্যাতিতা ছাত্রী জানায়, ‘‘হেড দিদি খবর পায় যে বাড়িতে সব বলে দিয়েছি। তাই হাত বেঁধে স্কেল দিয়ে আমায় মেরেছে।’’ ছাত্রীর মা মণি বৈরাগী বলেন, ‘‘ঘুমের মধ্যে ভয়ে চিৎকার করে উঠত মেয়ে। শনিবার প্রধান শিক্ষিকাকে বলি, ছাত্রীদের এ ভাবে মারা ঠিক নয়। তাও সোমবার ফের মারধর করলে থানায় যাই।’’ অন্য ছাত্রী বলে, ‘‘বাড়িতে সব বলে দিয়েছি বলে সোমবার তো ক্লাস থেকে বের করে উনি ঘুষিও মেরেছেন।’’

মঙ্গলবার বেলায় স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। গ্রেফতার হওয়ার পরে দীপিকাদেবী পাল্টা অভিযোগ করেছিলেন, কয়েক জন শিক্ষিকা ক্লাস না-করায় তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন তিনি। সে কারণেই তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।

কলকাতা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, শিক্ষার অধিকার আইন (২০০৯) অনুযায়ী পড়ুয়াদের শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন করা অপরাধ। সংসদের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না বলেন, ‘‘আইন মেনে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।’’ স্কুলের পরিচালন সমিতির চেয়ারপার্সন তথা এলাকার কাউন্সিলর অর্চনা সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ওই স্কুলে শিক্ষিকাদের মধ্যে অনেক সমস্যা রয়েছে। বহু বার মেটানোর চেষ্টা করেছি, মেটেনি।’’ শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই ঘটনা শিশুর অধিকার ও শিক্ষার অধিকার আইনের বিরোধী। অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Teacher Arrest Bail Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE