থমকে পথ। বুধবার সন্ধ্যায়, ডি এল খান রোডে। — নিজস্ব চিত্র
তড়িঘড়ি সল্টলেক পৌঁছতে হবে। তাই বুধবার বিকেলে ধর্মতলা থেকে এজেসি বসু রোড উড়ালপুল, পরমা উ়ড়ালপুল ধরে যেতে চেয়েছিলেন কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু হসপিটাল রোডে পৌঁছেই দেখলেন, সিগন্যাল লাল। ভরসন্ধেয় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ!
তত ক্ষণে এজেসি বোস রোডের গাড়ি এক্সাইড মোড়ের আগেই দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। আটকে গিয়েছে আশুতোষ মুখার্জি রোডে়র গাড়িও। এলগিন রোডের গাড়িও নড়তে দিচ্ছে না পুলিশ! সিগন্যাল সবুজ হওয়ার পরেও গাড়ির জট সহজে পিছু ছাড়ল না। যানজটে থমকাতে থমকাতে সল্টলেক পা়ড়ি দিলেন কাজলবাবু।
এ দিন বিকেলে তো শহরে কোনও বিপর্যয় ঘটেনি। বড় সভা-মিছিলও ছিল না! তবে এত যানজট কেন? পুলিশের ব্যাখ্যা, বিকেলে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বিমানবন্দর থেকে ভিআইপি রোড, বাইপাস, পরমা উড়ালপুল, এজেসি বসু উড়ালপুল, এজেসি বসু রোড, আশুতোষ মুখার্জি রোড ধরে যান নেতাজি ভবনে একটি অনুষ্ঠানে। তাই ভিভিআইপি নিরাপত্তা মোতাবেক পুলিশ ব্যবস্থা ও যান নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছিল। কিন্তু পূর্ব নির্ধারিত ওই কর্মসূচির জন্য যানশাসন এতটা জট পাকিয়ে যাওয়ার কথা নয়। তা হলে?
পুলিশের দাবি, ভিভিআইপি-র ওই গতিবিধির কিছু ক্ষণ আগে বিকেল ৪টে ৩৫ মিনিট থেকে ৪টে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ে ভাঙড়ের গোলমাল নিয়ে মানববন্ধন করে নকশালপন্থীদের কয়েকটি গণসংগঠন। বিমানবন্দর থেকে রাষ্ট্রপতির নেতাজি ভবনে যাওয়ার কথা মাথায় রেখে যে রকম ট্র্যাফিক ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সেটাই ঘেঁটে দেয় ওই মানববন্ধন। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘দুপুরে পরমা উড়ালপুলের উপরে একটি গা়ড়ি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তার জন্য এক প্রস্ত সমস্যা হয়। রাষ্ট্রপতি আসার আগেই সেটা সামাল দেওয়া গিয়েছিল। কিন্তু অতিবামদের কর্মসূচির ধাক্কা সামলে ওঠা যায়নি। টানা দশ মিনিট ডোরিনা ক্রসিং অবরুদ্ধ থাকায় চার দিকের গাড়ি আটকে পড়ে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, ডোরিনা ক্রসিং খালি করতে বিকেল পাঁচটা বেজে যায়। কিন্তু তত ক্ষণে রাষ্ট্রপতির শহরে ঢোকার সময় হয়ে গিয়েছিল। ফলে ফের থমকে যায় যান চলাচল। বিকেলে তৈরি হওয়া জট ছাড়াতে ছাড়াতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। নেতাজি ভবনের অনুষ্ঠান শেষে সন্ধে সাতটা নাগাদ আশুতোষ মুখার্জি রোড, জওহরলাল নেহরু রোড, কুইনস ওয়ে, রেড রোড হয়ে রাজভবনে পৌঁছেছেন। তখনও এক দফায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। ফের রাজপথে যানজটের মুখে পড়েন আম নাগরিকেরা।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘রাষ্ট্রপতির কনভয় কোনও রাস্তায় পৌঁছনোর মাত্র তিন মিনিট আগে সেখানে যান চলাচল বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। রাষ্ট্রপতির গাড়ি এলাকা পেরোনোর মিনিট দশেক পরেই যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।’’ যদিও আমজনতার অভিজ্ঞতা অন্য।
এ দিন বিকেল থেকে টানা যানজটে ভুগেছেন বাইপাস ধরে গন্তব্যে পৌঁছতে চাওয়া লোকজনও। সমস্যা হয়েছে ভিআইপি রোডে। কৈখালি থেকে শুরু হওয়া যানজট এয়ারপোর্ট ১ নম্বর গেট পেরিয়েও যশোর রোডে পৌঁছে গিয়েছিল। পুলিশের একাংশের ব্যাখ্যা, বিকেলে সল্টলেকের সিপিএমের সভা-ফেরত গাড়ির চাপ ছিল। রাষ্ট্রপতির কনভয়ের কারণে সেই সব গাড়ি আটকে ছিল। বিয়ের নির্ঘণ্ট থাকায় সন্ধ্যায় আরও গাড়ি পথে নেমেছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy