এই প্রস্তাবনার রূপায়ণ ঘিরেই সংশয়। নিজস্ব চিত্র
কলকাতা পুরসভায় যত জন স্থায়ী কর্মী আছেন, তাঁদের একটা বড় অংশ অবসর গ্রহণ করায় সেই সংখ্যা ক্রমশ কমছে। উপরন্তু নতুন নিয়োগও বন্ধ বহু দিন। এই অবস্থায় রোজকার পুর পরিষেবা অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।
ওই কর্মীদের নিয়োগ করে বিভিন্ন সংস্থা।
এ ব্যাপারে সার্বিক নীতি স্থির করতে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গত ডিসেম্বরে পুর ভবনে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। সেখানে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল, আগামী অর্থবর্ষ থেকেই সেই নীতি বাস্তবায়িত করা হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, নতুন অর্থবর্ষ আসতে চললেও এখনও নীতিই তৈরি হয়নি! কারণ, পুরসভায় মেয়রের ধারাবাহিক অনুপস্থিতি। ফলে স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মী পদের পুনর্গঠনের বিষয়টি রয়ে গিয়েছে অন্ধকারেই।
পুরসভার তথ্য বলছে, স্থায়ী পদের সংখ্যা ৪৫ হাজারের মতো। সেখানে বর্তমানে আছেন ২৩ হাজার। আর সংস্থার মাধ্যমে নিয়োগ করা অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। রাজ্য সরকারের থেকে আর্থিক সাহায্য না পাওয়ায় এই কর্মীদের বেতন দিতে হয় পুরসভার ভাঁড়ার থেকে। রাজ্য শুধু মাত্র সরকার অনুমোদিত পদের জন্য অর্থ সহায়তা করে। তাই পুরসভার আর্থিক চাপ কমাতে এবং সংস্থার মাধ্যমে কর্মী নিয়োগে নিয়ন্ত্রণ আনতে কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছিলেন, স্থায়ী-অস্থায়ী পদের পুনর্গঠন করা হবে। তার পরে তা প্রস্তাব আকারে পাঠানো হবে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে। কিন্তু মেয়রের অনুপস্থিতি সেই চেষ্টায় কার্যত জল ঢেলে দিয়েছে।
যদিও সোমবার পুর ভবনে গিয়েছিলেন শোভনবাবু। কিন্তু কর্মী পদের পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা হয়নি বলে পুরসভা সূত্রের খবর। পাশাপাশি, বিভিন্ন পুর প্রকল্পের অগ্রগতি ও খরচ খতিয়ে দেখতে প্রতি মাসে একটি বৈঠক হয়। তাতে মেয়র সাধারণত থাকেন, কিন্তু এ দিন ছিলেন না। বৈঠকে নেতৃত্ব দেন পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। এর আগে ১৪ মার্চ, অর্থাৎ পুর-বাজেটের পর থেকে পুরসভায় যাননি মেয়র। তারও আগে কিছু দিন তিনি পুরসভায় নিয়মিত ছিলেন না বা গেলেও অল্প ক্ষণের জন্য যাচ্ছিলেন বলে জানাচ্ছেন পুরকর্তাদের একাংশ। ফলে গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণ সংক্রান্ত কোনও বিষয়েই আলোচনা করা যায়নি।
এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘পুর প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে সার্বিক কর্মী-নীতি স্থির করা এবং স্থায়ী-অস্থায়ী পদের পুনর্গঠন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মেয়র নিয়মিত না আসায় কিছুই এগোয়নি বিষয়টা।’’ এ ব্যাপারে শোভনবাবুর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পুর কমিশনার খলিল আহমেদ শুধু বলেছেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy