Advertisement
০৯ মে ২০২৪
Akshaya Tritiya

অক্ষয় তৃতীয়া, মহাভারত আর গণেশের ভাঙা দাঁতের যোগসূত্র ঠিক কোথায়

অক্ষয় তৃতীয়া, মহাভারত আর গণপতির ভাঙা দাঁতের মধ্যে একটা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। অন্ততপক্ষে প্রচলিত কিংবদন্তি সেই কথাই বলে।

বেদব্যাস ও গণেশ মহাভারত রচনায় রত। সূত্র: কোরা

বেদব্যাস ও গণেশ মহাভারত রচনায় রত। সূত্র: কোরা

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২১ ১৭:১৩
Share: Save:

শিরোনাম পড়ে যদি কেউ ধরে নেন ব্যাপারটা সুকুমার রায় বিরচিত ‘হ য ব রল’-য় বর্ণিত তিব্বত যাত্রার মানচিত্র, তাঁকে খুব একটা দোষ দেওয়া যাবে না। কিন্তু অক্ষয় তৃতীয়া, মহাভারত আর গণপতির ভাঙা দাঁতের মধ্যে একটা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। অন্ততপক্ষে প্রচলিত কিংবদন্তি সেই কথাই বলে।

ভারতের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য মহাভারতের আদিপর্বে শৌনক মুনির আশ্রমে সৌতি মুনি আতিথ্য গ্রহণ করেন। সৌতি রাজা জন্মেজয়ের সর্পযজ্ঞ থেকে ফিরছিলেন। সেখানে তিনি বৈশম্পায়নের মুখ থেকে মহাভারত-কথা শ্রবণ করেন। শৌনকের অনুরোধে সৌতি সেই কাহিনি শোনাতে শুরু করেন। সৌতিকথন থেকে জানা যায়, প্রজাপিতা ব্রহ্মার নির্দেশে কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস মহাভারত লিখনে রাজি হন। ব্যাসদেব আবার কুরুবংশের সাতটি প্রজন্মকে দেখেছেন এবং নিজেও এই ইতিহাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র। ফলে ঘনিয়ে ওঠা মহাকাব্যটির আকার-আয়তন কী দাঁড়াবে, তা তিনি ভালই জানতেন। সে কারণে ব্যাস ব্রহ্মার কাছে একজন লিপিকার চান। ব্রহ্মার মতে গণেশই একমাত্র, যিনি ওই মহাকাব্যকে কলমে ধরে রাখতে পারবেন। গণপতিকে লিপিকার হওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি বলেন, লিপিকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে তাঁর আপত্তি নেই। কিন্তু কলম তিনি থামাতে পারবেন না। ও দিকে ব্যাসদেব দেখলেন, মহাভারতের ৮ হাজার ৮ শত কূটশ্লোক তিনি ও তাঁর পুত্র শুক ছাড়া অন্য কেউ সহজে বুঝতে পারবেন না। তিনি জানালেন, গণেশও না বুঝে তাঁর শ্লোকগুলি লিপিবদ্ধ করতে পারবেন না। সেই ব্যবস্থাতেই চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে শুরু হয় মহাভারত রচনা। ওই দিনটিই অক্ষয় তৃতীয়া। তাই যে কোনও কাজের শুভারম্ভের জন্য দিনটি বিশেষ প্রশস্ত।

শুভকাজ তো শুরু হল। ব্যাস বলে যেতে লাগলেন তাঁর কাব্য। গণপতিও লিখে যেতে লাগলেন। কূটশ্লোক হৃদয়ঙ্গমের জন্য মাঝে মাঝে গণেশ খানিক শ্লথ হতেন আর ব্যাসদেবও পরবর্তী শ্লোকগুলি মনে মনে গুছিয়ে নিতেন। কিন্তু বলা আর লেখা থামত না। এক কিংবদন্তি অনুসারে, একদিন অতি দ্রুতবেগে চলছে শ্রুতিলিখন। এমন সময়ে হঠাৎ গণেশের কলম ভেঙে গেল। ও দিকে ব্যাসদেবের মুখ থেকে ক্রমাগত নিঃসৃত হয়ে চলেছে শ্লোকের পরে শ্লোক। গণপতি তাঁর লিখন না থামিয়ে নিজের একটা দাঁতকেই ভেঙে কলম হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করলেন। সেই ‘অক্ষয়’ গজদন্তেই নাকি লিখিত হয়েছিল মহাভারতের বাকি অংশ। গণপতিও জড়িয়ে গিয়েছিলেন এই তিথির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে। তাঁর ‘একদন্তা’ রূপটিই সবাই দেখেন। কিন্তু তার পিছনে থাকা অক্ষয় তৃতীয়া আর মহাভারতের কিস্‌সাটাকে তেমন মনে রাখে কি কেউ?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mahabharata Akshaya Tritiya Ganesha Vyasa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE