লাঠি উঁচিয়ে সিটুর কর্মী-সমথর্কদের হটিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।
আইএনটিটিইউসি এবং সিটুর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বোমাবাজি ও মারপিটের ফলে বুধবার সারাদিন বন্ধ থাকল হাওড়ার সাঁকরাইলের ধুলাগড় সব্জি বাজার।
গোলমালের রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে ব্যবসা করতে আসা পাইকারি সব্জি বিক্রেতারা বিপাকে পড়েন। সব্জি বহনকারী অন্তত ৫০টি ট্রাক এদিন সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ব্যবসা বন্ধ থাকার ফলে এ দিন বহু লক্ষ টাকা ক্ষতি হয় বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
এ দিনের ঘটনা আসলে সোমবারের সংঘর্ষের জের। ওই দিন তৃণমূলের একটি বিজয় মিছিলকে কেন্দ্র করে দুই শ্রমিক সংগঠনের লোকজনদের মধ্যে সর্ংঘ, হয়। সিটুর অভিযোগ, এ দিন তাদের কর্মী-সমর্থকদের লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে আইএনটিটিইউসি। পাল্টা অভিযোগে একই কথা জানিয়েছে আইএনটিটিইউসি। সিটুর অভিযোগ, এ দিন তাদের সমর্থকদের সব্জিবাজারে কাজে যোগ দিতে দেয়নি আইএনটিটিইউসি। এর প্রতিবাদে সিটুর সমর্থকেরা ধুলাগড়-সাঁকরাইল রাস্তা অবরোধ করেন। আইএনটিটিইউসি-র পাল্টা অভিযোগ, তাদের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করেছে সিটু। অবরোধ পুলিশ তুলে দেয়। সিটুর অভিযোগ, পুলিশ অবরোধ তুলতে গিয়ে বেধড়ক লাঠি চালিয়েছে। পুলিশ অবশ্য লাঠি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গণ্ডগোলের জেরে সারাদিন দাঁড়িয়েই ছিল সব্জিবোঝাই লরি।
বনগাঁ এবং কৃষ্ণগঞ্জের উপ-নির্বাচনে জেতার ফলে ধুলাগড়িতে তৃণমূল কংগ্রেস মঙ্গলবার একটি বিজয় মিছিল বের করে। তাতে যোগ দেন সব্জিবাজারে কর্মরত আইএনটিটিইউসি-র সমর্থক মজুরেরা। এই বাজারেই কর্মরত সিটুর সমর্থকদের সঙ্গে তাঁদের বাকবিতণ্ডা হয়। তা থেকে মারপিট বেধে যায়। উভয়পক্ষই পরষ্পরের উপরে বাঁশ, লোহার রড ও লাঠি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মোট ১২ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকেরাই রয়েছেন। উভয় পক্ষই থানায় অভিযোগ জানায়।
সিটুর অভিযোগ বুধবার তাদের কর্মী-সমর্থকেরা কাজে যোগ দিতে এলে আইএনটিটিইউসি বাধা দেয়। তার পরেই শুরু হয়ে যায় বোমাবাজি, মারপিট ও রাস্তা অবরোধ। বুধবার উভয় সংগঠনের মোট ২০ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এখানে প্রায় ৪০০ মজুর কাজ করেন। একসময়ে এখানে সিটুর প্রভাব বেশি থাকলেও পরিবর্তনের পরে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে চাইছে আইএনটিটিইউসি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এর আগেও একাধিকবার এখানে দু’টি সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারপিট হয়েছে। তার ফলে এই সব্জিবাজারে ব্যবসার বেশ ক্ষতি হচ্ছে। অবিলম্বে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমস্যার সমাধানের দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। এবিষয়ে রাজ্যের কৃষি বিপননমন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “ধুলাগড়ি সব্জিবাজারে ব্যবসা বিঘ্নিত হয় এমন কোনও কাজ বরদাস্ত করা হবে না। আমি প্রশাসনকে বলেছি শান্তি ফিরিয়ে বাজার চালু করার জন্য ব্যবস্থা নিতে। আমাদের দলের নেতাদেরও বলা হয়েছে শান্তি ফিরিয়ে এনে বাজার চালু করতে তাঁরা যেন প্রশাসনকে সাহায্য করেন।”
ছবি: সুব্রত জানা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy