Advertisement
E-Paper

চার্জশিট সাত পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে, নাম বাদ বিধায়কের

পুলিশি হেফাজতে তৃণমূল নেতা শেখ নাসিরুদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় ধনেখালি থানার তৎকালীন ওসি-সহ সাত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল সিবিআই। যদিও ওই ঘটনায় বারেবারেই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল যে তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে, ধনেখালির বিধায়ক সেই অসীমা পাত্রের নাম চার্জশিটে নেই বলেই সিবিআই সূত্রের খবর। খবর জেনে হতাশ নাসিরুদ্দিনের স্ত্রী মানুজা বিবি। তাঁর দাবি, “বিধায়কের নির্দেশেই আমার স্বামীকে পিটিয়ে মারে পুলিশ। চার্জশিটে কেন বিধায়কের নাম নেই, বুঝতে পারছি না!”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:২০
তৃণমূল নেতা শেখ নাসিরুদ্দিন

তৃণমূল নেতা শেখ নাসিরুদ্দিন

পুলিশি হেফাজতে তৃণমূল নেতা শেখ নাসিরুদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় ধনেখালি থানার তৎকালীন ওসি-সহ সাত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল সিবিআই। যদিও ওই ঘটনায় বারেবারেই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল যে তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে, ধনেখালির বিধায়ক সেই অসীমা পাত্রের নাম চার্জশিটে নেই বলেই সিবিআই সূত্রের খবর। খবর জেনে হতাশ নাসিরুদ্দিনের স্ত্রী মানুজা বিবি। তাঁর দাবি, “বিধায়কের নির্দেশেই আমার স্বামীকে পিটিয়ে মারে পুলিশ। চার্জশিটে কেন বিধায়কের নাম নেই, বুঝতে পারছি না!”

২০১৩-র ১৮ জানুয়ারি মারা যান নাসিরুদ্দিন। বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের তরফে মামলার তদন্তকারী অফিসার বলবীর শর্মা সাত জন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে চুঁচুড়া আদালতে চার্জশিট দেন। ওই পুলিশকর্মীদের মধ্যে ধনেখালি থানার প্রাক্তন ওসি বরুণ ঘোষ এখন চুঁচুড়া আদালতে কর্মরত।

সিবিআই সূত্রের দাবি, মোট ১৮ পাতার ওই চার্জশিটের ছত্রেছত্রে সেই সময় ধনেখালি থানার পুলিশকর্মীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত ভাবে খুন, ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আঘাত করা, অবৈধ ভাবে আটকে রাখা এবং তথ্য লোপাটের অভিযোগ রয়েছে।

ধনেখালির ডাকাবুকো তৃণমূল নেতা ছিলেন নাসিরুদ্দিন। এক সময় তিনি অসীমাদেবীর অনুগামী ছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিধায়কের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। ধনেখালিতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তীব্রতা বাড়ে। গত বছর সেখানকার মদনমোহনতলায় পুলিশকর্মীদের মারধরের ঘটনায় নাম জড়ায় নাসিরুদ্দিনের। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। পরিবারের অভিযোগ, হেফাজতে পেয়ে বছর পঁয়ত্রিশের নাসিরুদ্দিনকে বেধড়ক মারধর করে পুলিশ। অসুস্থ হয়ে পড়া ওই তৃণমূল নেতাকে ধনেখালি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালেই তিনি মারা যান।

মানুজা বিবি এবং অন্য আত্মীয়েরা অভিযোগ তোলেন, স্থানীয় বিধায়কের নির্দেশেই পুলিশ পিটিয়ে মেরেছে নাসিরুদ্দিনকে। ওই অভিযোগে ধনেখালি থানা ঘেরাও করা হয়। দিনভর পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীদের খণ্ডযুদ্ধ হয়। এর পরে ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করে আদালতে যায় নাসিরুদ্দিনের পরিবার। শেষ পর্যন্ত গত বছর ১৩ মে আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। বিধায়ক অবশ্য বারেবারেই ওই ঘটনায় তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দেন।

গত বছর জুনে দায়িত্ব নিয়ে ধনেখালিতে ক্যাম্প বসিয়ে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। কলকাতার দফতরে অন্য অনেকের সঙ্গে ডেকে পাঠানো হয় বিধায়ক অসীমা পাত্রকেও। সেখানে তাঁকে জেরাও করা হয়।

চার্জশিটে বিধায়কের নাম বাদ গেল কেন? সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়েছে, বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ ভাবে ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ এখনও তারা হাতে পায়নি। তাই তাঁর নাম চার্জশিটে রাখা হয়নি।

তবে শুরু থেকে নাসিরুদ্দিনের মামলার গতিপ্রকৃতির উপরে নজর রাখা কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের প্রতিক্রিয়া, “শাসক দলের বিধায়কের ভয়ে কেউ সিবিআইয়ের কাছে ঠিকঠাক মুখ খোলেনি। সিবিআই ছিল বলে এটুকু অন্তত হল।”

প্রতিক্রিয়া জানতে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি অসীমাদেবী। এসএমএস করা হলেও জবাব পাওয়া যায়নি। তবে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্তর বক্তব্য, “বিধায়কের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছিল। সিবিআইয়ের চার্জশিটেই সেটা স্পষ্ট।”

sekh nasiruddin dhonekhali police tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy