Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
হাওড়া

জামিন-অযোগ্য ধারা দুই তৃণমূল নেতার নামে

তোলাবাজি ও খুনের হুমকির অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। তবু পুলিশ এত দিন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। শেষমেশ আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করল পুলিশ। অভিযুক্তেরা হাওড়া পুরসভায় শাসক দলের দুই মেয়র পারিষদ বাণী সিংহরায় ও বিভাস হাজরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫০
Share: Save:

তোলাবাজি ও খুনের হুমকির অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। তবু পুলিশ এত দিন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। শেষমেশ আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করল পুলিশ। অভিযুক্তেরা হাওড়া পুরসভায় শাসক দলের দুই মেয়র পারিষদ বাণী সিংহরায় ও বিভাস হাজরা।

দিন কয়েক আগেই সালকিয়ায় বিজেপি-র সভা লক্ষ করে বোমা ছোড়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হাওড়ার আর এক মেয়র পারিষদ তথা তৃণমূলের উত্তর হাওড়ার সভাপতি গৌতম চৌধুরীর বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। হাওড়া পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরেরা পুলিশ কমিশনারের কাছে ওই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানালেও আমল দেওয়া হয়নি। আদালতের নির্দেশে হলেও মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে শাসক দলের আরও দুই মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে হাওড়া সিটি পুলিশের এই পদক্ষেপে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২৩ অগস্ট মালিপাঁচঘরার বাসিন্দা মনোরঞ্জন বণিক মজুমদার পুলিশের কাছে বাণী সিংহরায় ও বিভাস হাজরার বিরুদ্ধে টাকা চাওয়া, খুনের হুমকি দেওয়ার দু’টি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ব্যক্তি জানান, ৩১ নম্বর অরবিন্দ রোডে তাঁর নিজস্ব জমিতে বাড়ি রয়েছে। সেখানে প্রোমোটিংয়ের মালপত্র আনা-নেওয়ার রাস্তা নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে তিনি পুরসভার তত্‌কালীন মেয়র পারিষদ (বিল্ডিং) বাণী সিংহরায় ও মেয়র পারিষদ (রাস্তা) বিভাস হাজরার সঙ্গে যোগাযোগ করে বাড়ির সামনের রাস্তা ব্যবহারের অনুমতি চান।

মনোরঞ্জনবাবুর অভিযোগ, “বাণীবাবু ওই অনুমতি দেওয়ার জন্য নিজেই সরাসরি এক কোটি টাকা দাবি করেন। না দেওয়ায় লোকজন পাঠিয়ে বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখাতে শুরু করেন। উপরন্তু কিছু অপরিচিত লোক এসে বিভাসবাবুর নাম করে ২৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। না দিলে তারাও খুনের হুমকি দিতে থাকে। তবে বিভাসবাবু নিজে কখনও টাকা চাননি।” এর পরেই মালিপাঁচঘরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় শেষে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো বাণীবাবু ও বিভাসবাবুর দফতর কেড়ে নেওয়া হয়। মনোরঞ্জনবাবু বলেন, “এর পরে আমার নামে পাঁচ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন বাণীবাবু। তখন আমিও আদালতের দ্বারস্থ হই।”

গত ১৪ নভেম্বর আদালত মালিপাঁচঘরা থানাকে নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করতে। নড়েচড়ে বসে পুলিশ। সরাসরি দুই মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ধারায় তোলাবাজি ও প্রাণনাশের হুমকির মামলা দায়ের করা হয়। যদিও বাণী সিংহরায় ও বিভাস হাজরা দু’জনেরই বক্তব্য: “আদালতের নির্দেশ পেয়ে পুলিশ তদন্ত না করেই কেন এমন ধারা দিল বুঝতে পারছি না।” পাশাপাশি দু’জনেই টাকা চাওয়া এবং অনাদায়ে প্রাণনাশের হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তবে আদালত নির্দেশ দেওয়ায় ফের তদন্ত করা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগটির ভিত্তিতেই এফআইআরে জামিন-অযোগ্য ধারা দেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

howrah police tmc leaders salkia southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE