Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

নিম্নমানের রাস্তার সঙ্গে কলেজ ভবন নির্মাণের মান নিয়েও প্রশ্ন সিঙ্গুরে

কলেজে যাওয়ার রাস্তার মান নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। এ বার কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সেই রাস্তাই ধসে গেলে পুকুরে। তার উপর গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, কলেজের মধ্যে দিয়েই গ্রামের মানুষের যাতায়াতের রাস্তা রাখতে হবে। সব মিলিয়ে তিতিবিরক্ত কলেজ কর্তৃপক্ষ সমস্ত বিষয়টি নিয়ে তাঁদের আপত্তি লিখিতভাবে জেলাশাসককে জানিয়েছেন।

ভেঙে গিয়েছে রাস্তা। ছবি: দীপঙ্কর দে।

ভেঙে গিয়েছে রাস্তা। ছবি: দীপঙ্কর দে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:২৮
Share: Save:

কলেজে যাওয়ার রাস্তার মান নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। এ বার কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সেই রাস্তাই ধসে গেলে পুকুরে। তার উপর গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, কলেজের মধ্যে দিয়েই গ্রামের মানুষের যাতায়াতের রাস্তা রাখতে হবে। সব মিলিয়ে তিতিবিরক্ত কলেজ কর্তৃপক্ষ সমস্ত বিষয়টি নিয়ে তাঁদের আপত্তি লিখিতভাবে জেলাশাসককে জানিয়েছেন।

সিঙ্গুর কলেজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাধের প্রকল্প। কলেজের ন্যূনতম পরিকাঠামো না থাকলেও এক বছর আগে কলেজ তৈরির জন্য জমি খোঁজার কথা বলে কলেজের ছাড়পত্র দিয়েছিলেন তিনি। তড়িঘড়ি কোনও উপায় না পেয়ে সিঙ্গুরের একটি স্কুলের একাংশে কলেজও চালু হয়ে গিয়েছিল তখন। কথা ছিল যত দ্রুত সম্ভব কলেজ ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করতে হবে। এর পরে সিঙ্গুর হাসপাতাল লাগোয়া দুর্গাপুর এক্সপ্রেসের ধারে কলেজের বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু শুরুতেই বিপত্তি বাধে। কলেজের জমিতে যাওয়ার জন্য রাস্তা তৈরির দরকার হয়ে পড়ে। জেলা পরিষদ অনুমোদন দেওয়ার পরে রাস্তার কাজও শুরু হয়ে যায়। কিন্তু কাজ যখন শেষের দিকে তখনই রাস্তার মান নিয়ে উঠে যায় নানা প্রশ্ন। প্রথমত গণ্ডগোল দেখা যায় রাস্তার মাপে। চওড়ায় যে মাপের হওয়ার কথা ছিল, ঠিকাদার সংস্থা তার থেকে কম করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া যে পরিমাণ মোরাম এবং ইট দিয়ে রাস্তা উঁচু করার কথা ছিল, অভিযোগ ওঠে সেই পরিমাণ মোরাম ও ইট ব্যবহার করা হয়নি বলে। এ সবের পরেও রাস্তাটির দৈর্ঘ্যেও গণ্ডগোলের অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, রাস্তা তৈরির জন্য যে ব্যয়-বরাদ্দ ধরা হয়েছিল, আদতে তার চেয়ে অনেক কম টাকায় কাজ করার অভিযোগ ওঠে। জেলা পরিষদের যে সদস্যকে ওই কাজের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, প্রশ্ন ওঠে তাঁর ভূমিকা নিয়েও।

এখন যেখানে কলেজ।

তৈরি হচ্ছে নতুন ভবন।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে হুগলির জেলাশাসক সমস্ত অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত যখন মাঝপথে তখন বিপত্তি বাধে অন্যত্র। যে রাস্তা নিয়ে তদন্ত সেই রাস্তাই ধসে পাশের পুকুরে ঢুকে যায়। যে পুকুরের পাড় বাধানোর কথাও প্রকল্পে ছিল।

হুগলি জেলা পরিষদের এক পদস্থ অফিসার জানান, যে সব অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় সেই সব অভিযোগই যেন মান্যতা পেল। রাস্তা নিয়ে এমন কেলেঙ্কারির পর এ বার কলেজের ভবন নির্মাণে সামগ্রীর মান নিয়েও নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

এ দিকে, পায়ের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিড়ম্বনায় ফেলেছে গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি। তাঁরা দাবি তুলেছেন, যেখানে কলেজের ভবন তৈরি হচ্ছে সেখান দিয়ে তাঁরা যাতায়াত করতেন। এখন কলেজ তৈরি হলে যাতায়াতের জন্য কলেজের ভিতর রাস্তা রাখতে হবে। যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষ এ দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, এটা অসম্ভব। কলেজের ভিতর দিয়ে যাতায়াত করলে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে সমস্যার পাশাপাশি তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়বে। এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে কলেজের প্রিন্সিপাল জয়ন্ত চৌধুরী জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছেন। জেলাশাসক মনমীত নন্দা বলেন, “যে অফিসার সমস্ত ঘটনার তদন্ত করছেন তিনি আপাতত ছুটিতে। তদন্ত শেষ হলেই পুরো বিষয়টি জানা যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

southbengal singur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE