Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নির্মীয়মাণ আবাসনে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ছিনতাই

মাঝদুপুরে একটি নির্মীয়মাণ আবাসনের চার তলায় উঠে শ্রমিকদের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে মোবাইল এবং টাকা ছিনিয়ে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ভয়ে চুপচাপই ছিলেন শ্রমিকেরা। কিন্তু বাড়তি ‘দাদাগিরি’ দেখিয়ে ঘরের ভিতর বোমা মেরে শাসানি দেওয়াটাই কাল হল দুষ্কৃতীদের। বোমার শব্দে ছুটে এলেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বমাল ধরা পড়ল পাঁচ দুষ্কৃতী। পুলিশ এসে তাদের গ্রেফতার করল। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির কোন্নগরের বড় বহেরা এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোন্নগর শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:২২
Share: Save:

মাঝদুপুরে একটি নির্মীয়মাণ আবাসনের চার তলায় উঠে শ্রমিকদের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে মোবাইল এবং টাকা ছিনিয়ে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ভয়ে চুপচাপই ছিলেন শ্রমিকেরা। কিন্তু বাড়তি ‘দাদাগিরি’ দেখিয়ে ঘরের ভিতর বোমা মেরে শাসানি দেওয়াটাই কাল হল দুষ্কৃতীদের। বোমার শব্দে ছুটে এলেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বমাল ধরা পড়ল পাঁচ দুষ্কৃতী। পুলিশ এসে তাদের গ্রেফতার করল। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির কোন্নগরের বড় বহেরা এলাকায়।

পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম নির্মল শীল ওরফে কুট্টি, সুদীপ সূত্রধর ওরফে ছোটকা, মনোজ ভদ্র, সুরজিৎ দত্ত এবং প্রদীপ সাউ। তাদের কাছ থেকে দু’টি পাইপগান, ৬ রাউন্ড গুলি এবং ৮টি তাজা বোমা মিলেছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাদের নিয়ে আসা সাদা রঙের ‘প্রেস’ স্টিকার লাগানো একটি দামি গাড়ি। ধৃতদের মধ্যে শ্রীরামপুরের বাসিন্দা প্রদীপ গাড়িটির চালক। বাকিরা ভদ্রেশ্বরের বিভিন্ন এলাকায় থাকে। ওই দলে থাকা দুই দুষ্কৃতী পালায়।

তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের দাবি, কুট্টি এবং ছোটকা কুখ্যাত দুষ্কৃতী। তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতি, রাহাজানি-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে পুলিশের খাতায়। প্রদীপ জেরায় জানিয়েছে, গাড়িটি সে-ই চালাত। গাড়ির মালিক শ্রীরামপুরের জনৈক সতীশ অগ্রবাল। সংবাদমাধ্যমের একটি দফতরের কার্ড রয়েছে সতীশবাবুর কাছে। সেই সুবাদেই গাড়িতে ‘প্রেস’ স্টিকার সাঁটা ছিল। পিকনিকে যাওয়ার কথা বলে দুষ্কৃতীরা গাড়িটি ভাড়া নেয়। ধৃতের বক্তব্য খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এসডিপিও (শ্রীরামপুর) সুবিমল পাল জানান, আরও কয়েক জন দুষ্কৃতীর নাম পাওয়া গিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বড় বহেরার ওই নির্মীয়মাণ আবাসনে জনা সাতেক সশস্ত্র দুষ্কৃতী হানা দেয়। তারা সোজা চার তলায় উঠে যায়। সেখানে কর্মরত ছিলেন জনা ত্রিশ শ্রমিক। তাঁরা মূলত মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। প্রায় সকলের কাছেই মোবাইল ছিল। সেই মোবাইল এবং শ্রমিকদের কাছে থাকা নগদ বেশ কয়েক হাজার টাকা কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। এর পরে দুষ্কৃতীরা শ্রমিকদের বলে, আবাসনের ঠিকাদার যেন কার্তিক নামে এক দুষ্কৃতীকে ফোন করে। তা হলেই তাঁরা মোবাইল ফেরত পাবেন। এ কথা বলে ঘরের মধ্যেই একটি বোমা ফাটিয়ে নেমে আসতে থাকে দুষ্কৃতীরা। বোমায় অবশ্য কেউ হতাহত হননি।

বোমার শব্দে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ছুটে আসেন। পুলিশকেও ফোনে খবর দেওয়া হয়। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে দুষ্কৃতীরা পালানোর চেষ্টা করে। চার জনকে নাগালের মধ্যে পেয়ে যান ব্যবসায়ীরা। তাদের উত্তম-মধ্যম দেওয়া হয়। মারের চোটে এক দুষ্কৃতীর মুখ ফাটে। সেই সময় পুলিশের একটি ভ্যান স্থানীয় একটি ব্যাঙ্কের কাছে টহল দিচ্ছিল। খবর কানে যেতেই ওই পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে চলে আসেন। চালক-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

উত্তরপাড়া, কোন্নগর, শ্রীরামপুর, চুঁচুড়া-সহ হুগলির নানা জায়গায় প্রোমোটারি শিল্পকে ঘিরে অপরাধমূলক কার্যকলাপ লেগেই থাকে বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ। এর আগেও একাধিকবার জেলার নানা জায়গায় তোলা চেয়ে নির্মীয়মাণ আবাসনে হামলা করেছে দুষ্কৃতীরা। তা সত্ত্বেও দুষ্কৃতীদের দাপট যে বন্ধ হয়নি, এ দিনের ঘটনা আরও এক বার তা প্রমাণ করে দিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

southbengal nirmal shil sudip sutrodhor konnagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE