কার প্রভাব বেশি, এই নিয়ে প্রধান ও উপপ্রধানের দ্বন্দ্বে হাওড়ার উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের খলিসানি পঞ্চায়েতের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম কার্যত স্তব্ধ। ১০০ দিনের কাজ প্রায় হয়নি বললেই চলে। বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় যে সমস্ত কাজ হওয়ার কথা তার রূপায়ণও ঠিকমতো হচ্ছে না। জব কার্ডধারীরা পঞ্চায়েতের কাছে কাজ চেয়েও না পেয়ে ব্লকে দরবার করছেন। প্রশাসনের তরফে দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করলেও কোনও সমস্যার সমাধান হয়নি।
উলুবেড়িয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মদন মণ্ডল বলেন, “ওই পঞ্চায়েতে প্রধান ও উপপ্রধানের মধ্যে ঝামেলা রয়েছে। তবে তা তেমন কিছু নয়। আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া হবে।” উন্নয়নমূলক কাজকর্ম আটকে যাওয়ার প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “কাজ শীঘ্রই শুরু হয়ে যাবে।” বিডিও দেবব্রত রায় বলেন, “সমস্যা একটা রয়েছে ঠিকই। তবে তার সমাধান করে উন্নয়নমূলক কাজ চালু করার ব্যাপারে প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছে।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর,১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য হাওড়ার যে তিনটি ব্লককে বাছা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে উলুবেড়িয়া-২ ব্লক। অথচ, চলতি অর্থবর্ষে সাত মাসে এখানে কাজ হয়েছে মাত্র ৮৫০ দিন। টাকার অঙ্কে দেড় লক্ষ টাকা মাত্র। অথচ ওই ব্লকেরই অন্য পঞ্চায়েতে ৩০ লক্ষ টাকার বেশি কাজ হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, ১০০ দিনের কাজ না হওয়ায় এলাকার রাস্তাঘাট, পুকুর কাটা, নিকাশি নালা সংস্কার তো হচ্ছেই না। বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় যে সব কাজ হচ্ছিল সেগুলিরও যথাযথ রূপায়ণ হচ্ছে না। ১০০ দিনের কাজ না হওয়ায় কাজ পাচ্ছেন না এলাকার জবকার্ডধারীরা। সমস্যার কথা বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতির কাছে বার বার জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। এমনকী, বহু ক্ষেত্রে প্রশাসনিক বৈঠকেও প্রধান ও উপপ্রধান অনুপস্থিত থাকছেন।
কিন্তু প্রধান ও উপ-প্রধানের মধ্যে এ হেন দ্বন্দ্বের কারণ?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পঞ্চায়েত সদস্য জানান, প্রথম দিকে কোনও সমস্যা ছিল না। কারণ পঞ্চায়েতের যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালনার জন্য প্রধান অনেকটাই উপ-প্রধানের উপরে নির্ভরশীল ছিলেন। সমস্যার শুরু হয়, যখন প্রধান ধীরে ধীরে সমস্ত কাজকর্ম উপ প্রধানের কাছে বুঝে নিতে থাকেন। আগের মতো আর উপ-প্রধানের উপরে নির্ভর করতেন না। তখন থেকেই দু’জনের মধ্যে মতবিরোধ শুরু হয়। ফলে আটকে যেতে থাকে বিভিন্ন উন্নয়ননূলক কাজ।
কাজ না হওয়ার প্রসঙ্গে প্রধান এবং উপপ্রধান নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করে আর্থিক সঙ্কটকেই দায়ী করেছেন। প্রধান বলেন, “কাজ করিয়ে যদি টাকা না পাই, তখন কী হবে? কিন্তু অন্য পঞ্চায়েত কী ভাবে কাজ করছে, সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা না মেনে তাঁর বক্তব্য, “আমরা সকলে একই দলের। বাইরের কে কী বলল জানি না।” উপপ্রধান শেখ নাসিরুদ্দিনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করেন। তাঁর কথায়, “আমাদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। তবে, সকলকে নিয়েই কাজ করা উচিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy