Advertisement
১১ মে ২০২৪
‘বাঁচাতে’ গিয়ে ছাত্রীকে চড়

শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ অভিভাবকের

সহপাঠীর ধাক্কায় বেসামাল হয়ে মাইক্রোফোনের উপর পড়ে গিয়েছিল এক ছাত্রী। সেই ‘অপরাধে’ স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলাকালীন তাকে চড় মারার অভিযোগ উঠল ক্রীড়া শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

হাসপাতালে মধুমিতা সামন্ত।

হাসপাতালে মধুমিতা সামন্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৪০
Share: Save:

সহপাঠীর ধাক্কায় বেসামাল হয়ে মাইক্রোফোনের উপর পড়ে গিয়েছিল এক ছাত্রী। সেই ‘অপরাধে’ স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলাকালীন তাকে চড় মারার অভিযোগ উঠল ক্রীড়া শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার দুপুরে আরামবাগের চাঁদুরে ওই ঘটনা ঘটে। বাড়ি ফেরার পর রাতে অসুস্থ বোধ করায় মধুমিতা সামন্ত নামে চাঁদুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ছাত্রীর বাবা বুধবার সকালে ওই ক্রীড়া শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের অবশ্য বক্তব্য, মাইক্রোফোনের কাছে ছড়িয়ে থাকা বৈদ্যুতিক তার থেকে ছাত্রীদের বাঁচাতেই তিনি ওই কাজ করেছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাসুদেব সামন্ত বলেন, “ছাত্রীটি অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমরা সকলেই উদ্বিগ্ন। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তিনি ওই আচরণ করেন বলে অভিযুক্ত শিক্ষক জানিয়েছেন। অভিভাবকদেরও সে কথা জানিয়েছি।” অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার চাঁদুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দু’দিনব্যাপী বাত্‌সরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ওই দিন সকাল থেকেই বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে নানা ইভেন্ট চলছিল। মাঠের এক প্রান্তে ছিল মাইকের সরঞ্জাম। সেখানে একটি বেঞ্চে রাখা মাইক্রোফোনে ক্রীড়াশিক্ষক শিশির দলুই প্রতি ইভেন্টের শুরুতে প্রতিযোগীদের নাম ঘোষণা করে ফের খেলা পরিচালনায় মাঠে চলে যাচ্ছিলেন। বেঞ্চের কাছেই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মধুমিতা সামন্ত-সহ তার বেশ কিছু সহপাঠী বসে অপেক্ষা করছিল তাদের ১০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতার জন্য। দুপুর আড়াইটা নাগাদ হঠাত্‌ই মাইক্রোফো থেকে নানা অবাঞ্ছিত কথাবার্তা এবং হাসাহাসি ভেসে আসতে থাকে। এর পরেই শিশিরবাবু এসে তাদের বকাবকি করে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার সময় মধুমিতাকে চড় মারেন বলে অভিযোগ।

অসুস্থ মধুমিতার বক্তব্য, “বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করার সময় কেউ আমাকে ঠেলে দেওয়ায় আমার হাত মাইক্রোফোনের উপর পড়ে যায়। তাতে একটা বিকট আওয়াজ হওয়ায় বন্ধুরা খুব হাসছিল। হঠাত্‌ স্যার সেখানে এসে সবাইকে চড়-চাপটা মেরে সরিয়ে দেন। আমার কানের ওপরে চড়টা পড়ায় আমি উল্টে পড়ি। খুব লেগেছিল। আমি আর দৌড়তে পারিনি।”

অভিযুক্ত শিক্ষক শিশির দলুই বলেন, “মাইকের সরঞ্জাম-সহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বৈদুতিক তারের কাছে জটলা করছিল ছাত্রীরা। মাইক্রোফোন থেকে অন্য শব্দ ভেসে আসার চেয়েও আমার কাছে বড় ছিল ওদের নিরাপত্তা। কয়েক বার তারগুলোর কাছ থেকে সরে যেতে বললেও ওরা না সরায় হাত তুলতে হয়।” তাঁর আরও বক্তব্য, “ওই ছাত্রীর অভিভাবক অভিযোগ করতেই পারেন। বিষয়টা আমারও খারাপ লাগছে। তবে আমি নিজের কাছে পরিষ্কার। ওদের সুরক্ষার জন্যই আমাকে ওই কাজ করতে হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arambagh slap southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE