Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অপরাধ কমাতে উত্তরপাড়ায় নজর-ক্যামেরা

কয়েক মাস ধরেই দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য বেড়েছে গোটা হুগলি জেলার শহরাঞ্চলেই। কখনও শ্রীরামপুরে কারখানায় ডাকাতি করতে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষীকে খুন করছে দুষ্কৃতীরা।

বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। ছবি: দীপঙ্কর দে।

বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। ছবি: দীপঙ্কর দে।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৬ ০১:২৬
Share: Save:

কয়েক মাস ধরেই দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য বেড়েছে গোটা হুগলি জেলার শহরাঞ্চলেই। কখনও শ্রীরামপুরে কারখানায় ডাকাতি করতে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষীকে খুন করছে দুষ্কৃতীরা। কখনও জেলা সদর চুঁচুড়ায় খুন হচ্ছেন ট্রাক-চালক। কখনও আবার খুনের ঘটনাস্থল হয়ে উঠছে পান্ডুয়া। গঙ্গাপাড়ের উত্তরপাড়ায় এখনও এ জাতীয় ঘটনার নজির সামনে আসেনি। তাই আগেভাগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অপরাধমূলক কাজকর্ম রুখতে সিসিটিভি-র ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে গোটা শহরকে। একই সঙ্গে শহরের যানজট মোকাবিলারও অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ধরা হচ্ছে ওই নজর-ক্যামেরাকে।

গোটা উদ্যোগ উত্তরপাড়া পুরসভার। মোট ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে আপাতত শহরের গুরুত্বপূর্ণ ২৭টি এলাকাতে বসানো হচ্ছে ওই ক্যামেরা। চলতি মাসের ১৩ তারিখ পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের প্রকল্পটি উদ্বোধন করার কথা। পুরপ্রধান দিলীপ যাদবের দাবি, ‘‘কলকাতা এবং হাওড়ার একাংশ বাদ দিলে রাজ্যের আর কোনও পুর এলাকায় সার্বিক ভাবে সিসি-টিভি পরিষেবা চালু হয়নি। সে দিক থেকে আমাদের এই উদ্যোগ নতুন।”

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্টেশন, বাজার, শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের মতো জনবহুল এলাকাগুলিতে তো বটেই, গঙ্গার ঘাট, পার্কিং প্লেস, স্কুলের সামনে বা পুরসভার ভাড়া দেওয়া অনুষ্ঠান বাড়িতেও প্রথম পর্যায়ে বসানো হচ্ছে নজর-ক্যামেরা। যা দুশো মিটার দূরের ছবিও নিখুঁত ভাবে তুলে আনবে। এ জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সার্ভারও বসানো হচ্ছে। পরবর্তী পর্যায়ে আরও যে সব জায়গায় ওই ক্যামেরা লাগানো প্রয়োজন বলে মনে হবে, সেখানে তা বসবে। সার্ভারের ক্ষমতা বেশি হওয়ায় পরে ক্যামেরার সংখ্যা বাড়লেও প্রযুক্তিগত সমস্যা হবে না। এই ভাবে গোটা শহরকে আনা হবে নজর-ক্যামেরার আওতায়। তার উপরে পুলিশ এবং পুর কর্তৃপক্ষের সব সময় চোখ থাকবে।

নতুন এই ব্যবস্থায় শহরের অপরাধে অনেকটাই রাশ টানা যাবে বলেই মনে করছেন প্রবীণ এক পুলিশ কর্তা। তিনি বলেন, ‘‘অনেক সময়ই দেখেছি, নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পুলিশের হাতে না থাকায় আদালতে বেকসুর খালাস পেয়ে যায় অপরাধীরা। কিন্তু রাস্তায় সিসিটিভি-র নজরদারি থাকলে কোনও অপরাধের তথ্যপ্রমাণের অভাব হবে না। ক্যামেরার ছবি কাজ অনেক সহজ করে দেবে। অপরাধী চিহ্নিত করা বা ধরা সহজ হবে। অপরাধের সংখ্যাও কমবে।”

নজর-ক্যামেরা বসানো নিয়ে ইতিমধ্যেই শহরবাসীর মধ্যে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। সকলেই পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। উত্তরপাড়ায় জিটি রোডে যানজট নিত্যদিনের সমস্যা। অনেকে মনে করছেন ওই ক্যামেরা বসলে যানজট কমবে। পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবে। মধ্যভদ্রকালী অঞ্চলের ব্যবসায়ী প্রণব চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘সকালের দিকে যানজটে নাজেহাল হয়ে যাই। আশা করি, এ বার সমস্যা মিটবে।’’ দোলতলার বাসিন্দা পিন্টু পাণ্ডে বলেন, ‘‘এই ক্যামেরার ছবি দেখে পুলিশ অপরাধী ধরবে বলে শুনছি। তেমন হলে তো ভালই। যা দিনকাল পড়েছে!’’

সকলেই এখনও নতুন ব্যবস্থা চালু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CCTV district
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE