মেয়র রথীন চক্রবর্তীর সঙ্গে চিনা সংস্থার প্রতিনিধিরা। — নিজস্ব চিত্র
দেশীয় প্রযুক্তিতে হাওড়া শহরের নিকাশি সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এ বার বিদেশি সংস্থার সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল হাওড়া পুরসভা।
২১ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তায় জমে থাকা নর্দমার জলের খবর পেয়ে নড়ে চড়ে বসেন পুরকর্তারা। বুধবার বিকেলে মেয়র রথীন চক্রবর্তী তড়িঘড়ি বরো চেয়ারম্যান-সহ অন্যান্য পুরকর্তাদের বৈঠকে ডাকেন। নিকাশি নিয়ে একটি সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করার জন্য সম্প্রতি পুরসভার পক্ষ থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল একটি চিনা সংস্থাকে। তাদেরও দুই প্রতিনিধিকে এ দিনের বৈঠকে ডাকা হয়। বৈঠকে বরো চেয়ারম্যানদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওয়ার্ডগুলির সমস্যা আলাদা করে চিহ্নিত করে তা অবিলম্বে মেটাতে মেয়র নির্দেশ দেন।
ওই বৈঠকের পর মেয়র বলেন, ‘‘হাওড়ায় নিকাশি সমস্যা মেটাতে বিদেশি সংস্থার সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ নিকাশির সমস্যার মূল কারণ এতদিনে জানা গিয়েছে এবং তা সমাধান করতে বিদেশি সংস্থা ও তাঁদের প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।’’
মেয়র জানান, সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে শহরের ভূমির উচ্চতা মাপার পর একটি মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে। সেই বিশেষ মানচিত্র (কনট্যুর ম্যাপ) থেকে জানা গিয়েছে, এত বছর ধরে নদীর ঢাল যে দিকে আছে ধরে নিকাশি নর্দমা ও ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনগুলির ঢাল করা হয়েছে, আসলে তা হবে ঠিক উল্টো। এতদিন জানা ছিল গঙ্গার পূর্ব পাড় থেকে ভূমির ঢাল গিয়েছে পশ্চিম পাড়ে। কিন্তু ওই মানচিত্র তৈরির পর জানা গিয়েছে, শহরের মূল নিকাশি নালা ড্রেনেজ ক্যানেলের ভূমির উচ্চতা গঙ্গার পাড় থেকে প্রায় দেড় ফুট বেশি। যার ফলে নিকাশির জল ওই খালে যেতে গিয়ে যেমন মাঝপথে আটকে যায় তেমনি বৃষ্টির জল বেরোতে না পেরে শহর ভাসায়।
পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বটানিক্যাল গার্ডেন থেকে বালি সর্বত্রই এই অবস্থা। তাই এই সমস্যা মেটাতে ক্ষুদ্র ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করা হবে এবং এ ক্ষেত্রে বিদেশি প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো ছাড়া উপায় নেই।’’
মেয়র জানান, স্থায়ী ভাবে নিকাশির এই সমস্যা মেটাতে সাংহাই কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন নামে একটি চিনা সংস্থার সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে যে সব জায়গায় উচ্চতাজনিত কারণে জল নামছে না, সেই সব জায়গা চিহ্নিত করে সেখানে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরি করা হবে। এর পর সেখান থেকে জল শোধনের পর তা পাম্প করে গঙ্গায় ফেলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy