Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভোজালি মেরে অ্যান্টিসেপ্টিক লাগিয়ে দিল ডাকাত

ডাকাতের চালানো ভোজালি রুখতে গিয়ে হাতে কোপ পড়েছিল প্রৌঢ়ের। তা দেখে চেঁচিয়ে ওঠেন তাঁর মেয়ে। বেগতিক বুঝে সেই ডাকাতই প্রৌঢ়কে টেনে রান্নাঘরে নিয়ে যায়। এ তাক ও তাক হাতড়ে খুঁজে বের করে অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম। ক্ষতে তা লেপে দিয়ে হাত-পা বেঁধে প্রৌঢ়কে ফেলে রেখে বাইরে থেকে শিকল তুলে দেয়।

চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে জয়ন্ত হালদার। বুধবার। ছবি: তাপস ঘোষ।

চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে জয়ন্ত হালদার। বুধবার। ছবি: তাপস ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধনেখালি শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৫৬
Share: Save:

ডাকাতের চালানো ভোজালি রুখতে গিয়ে হাতে কোপ পড়েছিল প্রৌঢ়ের। তা দেখে চেঁচিয়ে ওঠেন তাঁর মেয়ে।

বেগতিক বুঝে সেই ডাকাতই প্রৌঢ়কে টেনে রান্নাঘরে নিয়ে যায়। এ তাক ও তাক হাতড়ে খুঁজে বের করে অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম। ক্ষতে তা লেপে দিয়ে হাত-পা বেঁধে প্রৌঢ়কে ফেলে রেখে বাইরে থেকে শিকল তুলে দেয়।

মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। বুধবার হুগলির চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে শুয়ে ঘটনার কথা জানাতে গিয়েও বারবার শিউরে উঠছিলেন ধনেখালির পোড়াবাজারের বাসিন্দা, পেশায় সরকারি চাকুরে জয়ন্ত হালদার। দলে আট জন ছিল বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। তবে রাত পর্যন্ত কেউই ধরা পড়েনি।

জয়ন্তবাবু জানান, রাতে খাওয়া সেরে তাঁরা শুয়ে পড়েছিলেন। হঠাৎই খুটখাট শব্দে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। কান খাড়া করে বোঝেন, একতলার ছাদের দরজা থেকে শব্দটা আসছে। কী হচ্ছে দেখতে সিঁড়ি দিয়ে উঠে তিনি দরজাটা সামান্য ফাঁক করেন। আর তখনই তাঁকে ধাক্কা মেরে আট জন হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে। জয়ন্তবাবুর কথায়, ‘‘ওদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওরা আমার হাত বেঁধে সিঁড়িতে শুইয়ে দিয়ে নীচে চলে যায়। স্ত্রী ও মেয়েকে অস্ত্র দেখিয়ে হাতের-কানের সোনার গয়না ছিনিয়ে নেয়। আলমারির চাবি কেড়ে নিয়ে লুঠপাট চালায়।’’

পরিবার সূত্রের খবর, খানিক বাদে কোনও রকমে হাতের বাঁধন খুলে নীচে নেমে আসেন জয়ন্তবাবু। বাধা দিতে গেলে এক ডাকাত ভোজালি দিয়ে তাঁর মাথার এক পাশে মারে। তিনি পড়ে যেতেই গলা লক্ষ করে ফের ভোজালি চালায় ডাকাতটি। তা আটকাতে গেলে কোপ এসে পড়ে জয়ন্তবাবুর বাঁ কবজিতে। রক্ত ঝরতে থাকে। তাঁর মেয়ে ভয়ে চিৎকার করে ওঠেন। ডাকাতটি জয়ন্তবাবুকে টেনে রান্নাঘরে নিয়ে চলে যায়। পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিতে অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম লাগিয়ে বেরিয়ে আসে সে।

কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। যন্ত্রণায় চিৎকার করত‌ে থাকেন জয়ন্তবাবু। পাড়াপড়শি উঠে পড়ছে বুঝে সদর দরজা খুলে লুঠের মালপত্র নিয়ে ডাকাতেরা পালায়। প্রতিবেশীরা এসে জয়ন্তবাবুকে প্রথমে ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। চোট গুরুতর হওয়ায় পরে তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

জয়ন্তবাবুর স্ত্রী আইভি দেবী বলেন, ‘‘ডাকাতেরা যে ভাবে অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দিচ্ছিল, টুঁ শব্দ করার সাহসটুকু ছিল না আমাদের।’’ তাঁদের অভিযোগ, নগদ কয়েক হাজার টাকা ও লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না লুঠ হয়েছে। হুগলির পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘মামলা শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE