এই মোটর বাইকটি উদ্ধার হয়েছে পুকুর থেকে। ইনসেটে, নিখোঁজ গফ্ফর। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল কর্মীকে খুন করে দেহ লোপাটের অভিযোগ উঠল কংগ্রেসের কয়েক জন নেতা-কর্মীর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বসিরহাটের ঘোড়ারাস গ্রামে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে নিখোঁজ ব্যক্তির নাম আবদুল গফ্ফর মণ্ডল। বাড়ি বসিরহাটের ঘোড়ারাস গ্রামে। তিনি একজন সক্রিয় তৃণমূল কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত। অভিযোগ, তাঁকে উত্তর ঘোনা গ্রামের উত্তরপাড়ার কাছে খুন করে বিদ্যাধরী নদীতে ফেলে দেয় দুষ্কৃতীরা। মেছোভেড়ির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত গফ্ফর। পুলিশ ওই ব্যক্তির বাইকটি একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে। নদীতে জাল ফেলে খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে সঙ্গী রবিউল মণ্ডলকে নিয়ে মোটর বাইকে করে মেছোভেড়ি সংক্রান্ত আলোচনার জন্য হাড়োয়ার আমতা-খাগড়া বাজারে যান গফ্ফর। অভিযোগ, সে সময়ে তাঁর সঙ্গে ছিলেন কয়েক জন কংগ্রেস নেতা-কর্মী। ৪টি বাইকে নিয়ে তাঁরা গিয়েছিলেন। ভোর রাতে ফেরার পথে জনা দশেক দুষ্কৃতী আচমকাই তাঁদের পথ আটকায়। শুরু হয় বোমাবাজি। সঙ্গে চলে গুলি। বাকিরা পালিয়ে গেলেও আটকে পড়েন গফ্ফর ও রবিউল। বোমার আঘাতে রবিউল আহত হন। তিনি একটি বাড়ির পাঁচিলের আড়ালে লুকিয়ে পড়েন। গুরুতর আহত হন গফ্ফর। রবিউল পুলিশকে জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা বাইকটিকে পুকুরে ফেলে দেয়। জখম গফ্ফরকে টানতে টানতে তারা বিদ্যাধরী নদীর দিকে নিয়ে যায়।
পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বসিরহাট ও হাড়োয়া থানার এক বিশাল পুলিশ বাহিনী যায়। সেখানে গফ্ফরের পরিবারের লোকজন-সহ আশেপাশের স্থানীয় বাসিন্দারাও উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে চাপ চাপ রক্ত পড়ে রয়েছে। তা ছাড়া, বিদ্যাধরী নদীর দিকে গফ্ফরকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চিহ্নও স্পষ্ট। একজন সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হওয়ার জন্যই খুন হতে হয়েছে বলে পরিবারের দাবি। এ বিষয়ে ওই কর্মীর দাদা ছাব্দার মণ্ডল এবং স্ত্রী ফিরোজা বিবি বলেন, “তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলেই ওকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করিয়েছে কংগ্রেসের এক নেতা।” ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। রবিউলের প্রাথমিক চিকিত্সা করানো হয়। তাঁর সঙ্গেও কথা বলছে পুলিশ।
বসিরহাটে পর পর ৩ জন তৃণমূলকর্মী খুন এবং এক জন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বসিরহাটের সাংসদ তৃণমূলের ইদ্রিস আলি বলেন, “গত কয়েক দিন ধরেই মহকুমা জুড়ে আমাদের দলের লোকজনকে একের পর এক খুন করছে বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএমের কর্মীরা। আসলে ওরা শান্ত বসিরহাটকে অশান্ত করতে চাইছে।” অভিযোগ অস্বীকার করে কংগ্রেস নেতা অসিত মজুমদার বলেন, “ভেড়ি এলাকায় টাকা-পয়সা নিয়ে কোনও বিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা জড়িত ছিলেন বলে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে।” তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন অসিতবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy