বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে চলছে পড়াশোনা। নিজস্ব চিত্র।
সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় নতুন ঘর তৈরির কথা। টাকা এসে পড়েও আছে। কিন্তু কাজ হওয়ার উপায় নেই। কারণ স্কুলের সামনে বিপজ্জনক ভাবে রয়েছে একটি ট্রান্সফর্মার। স্কুলভবনের উপর দিয়ে গিয়েছে তার। ট্রান্সফর্মার না সরালে নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না।
সোহায় শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের খাঁপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছে এই পরিস্থিতি। বিপদের ঝুঁকি নিয়েই ক্লাসে আসে খুদে পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, খাঁপুর গ্রামে প্রাথমিক স্কুলে ৩ জন স্থায়ী শিক্ষক ও ২ জন পার্শ্বশিক্ষক। ১৫১ জন পড়ুয়ার জন্য বরাদ্দ ৩টি ঘর। অথচ সরকারি অনুমোদন আছে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত। মোট পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ দরকার সে জন্য। কিন্তু নতুন ঘর না হওয়ায় ৩টি ক্লাসঘরেই পড়াশোনা চালাতে হচ্ছে বলে জানালেন পার্শ্বশিক্ষক নুরুজ্জামান।
প্রধান শিক্ষক অমিতাভ দাস বলেন, ‘‘নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সর্বশিক্ষা মিশন থেকে ২০১১ সালে ৪ লক্ষ ২৮ হাজার ৮৪০ টাকার অনুমোদন মিলেছে। প্রায় ৬২৫ বর্গ মিটার জায়গায় কাজ হওয়ার কথা।’’ কিন্তু প্রধান শিক্ষক জানালেন, ব্লক অফিস থেকে ইঞ্জিনিয়ার অনুসন্ধানে এসে নতুন ভবন তৈরির অনুমোদন দেননি। তার কারণ, স্কুলভবনের উপরে ঝুলছে ইলেকট্রিকের তার। গ্রামবাসী আরাবুল মোল্লা, আকবর আলি, প্রসাদকুমার রায়, রমা মণ্ডল, হাসিমা খাতুনরা বলেন, ‘‘আমাদের ছেলেমেয়েদের ৩টি ঘরের মধ্যে ৫টি ক্লাস করা হয়। তাতে পড়াশোনায় অসুবিধা হয়। কিন্তু ইলেকট্রিকের তার সরানোর ব্যবস্থা না করলে নতুন ভবন তৈরি করা যাবে বলে শুনেছি।’’ গ্রামবাসীদের দাবি, স্কুলের সামনে বিপজ্জনক ট্রান্সফর্মার অবিলম্বে সরাতে হবে। সে জন্য গ্রামবাসীরা ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
দেগঙ্গার বিডিও মানসকুমার মণ্ডল জানান, স্কুলের তরফে বিষয়টি শুনেছি। ট্রান্সফর্মার সরানো নিয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির আধিকারিক ও দেগঙ্গা শাখার বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির বেড়াচাঁপা শাখার আধিকারিক গৌরাঙ্গভূষণ দত্ত জানান, সরকারি নিয়মে, খুঁটি সরানোর খরচ বহন করতে হবে স্কুলকেই। দেগঙ্গা শাখার বিদ্যালয় পরিদর্শক শাহওয়াজ আলম জানান, বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য সব রকম সহযোগিতা করা হবে। তবে কোন তহবিল থেকে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিকে ওই টাকা দেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে অন্ধকারে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ফলে, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার সমস্যা কী ভাবে কমবে তার উত্তর মেলেনি। কত দিন আর ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে যাবে ছেলেমেয়েরা, তা জানেন না অভিভাবকেরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy