এক সময়ে দেশের সংবিধান ছাপা হয়েছিল ১৯২১ সালে তৈরি এই পেপার মিলে। পুজোর মুখে রবিবার, নৈহাটির ‘ইন্ডিয়ান পাল্প অ্যান্ড পেপার প্রাইভেট মিল’-এ সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস ঝোলালেন কর্তৃপক্ষ।
হাজিনগরের মিলটিতে শ’পাঁচেক শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের ভবিষ্যৎ আপাতত অন্ধকারে। মালিক পক্ষের সঙ্গে বোনাসের টাকা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় শনিবারই কর্মবিরতি পালন করেছিলেন শ্রমিকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, আলোচনা না গিয়ে শ্রমিক আন্দোলনের অজুহাতকে সামনে রেখে মিল বন্ধ করে দিলেন কর্তৃপক্ষ। জেলার সিটু নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী রঞ্জিত কুণ্ডু, আইএনটিইউসি নেতা বিপুল ঘোষালরা মিল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। রঞ্জিতবাবু বলেন, “পুজোর মুখে এত শ্রমিকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়াটা দুর্ভাগ্যজনক।” সম্প্রতি ২ হাজার টাকা ন্যূনতম বোনাসের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন শ্রমিকেরা। তাঁদের দাবি, মিল কর্তৃপক্ষ প্রথমটায় আপত্তি না জানালেও পরে বেঁকে বসেন। প্রতিবাদে শনিবার কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকদের একাংশ। এ দিন সকালে কাজে গিয়ে তাঁরা সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস দেখেন। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি স্বপন সেন বলেন, ‘‘আমরা আটশো টাকা করে বোনাস দিতে চেয়েছিলাম। তার বেশি দেওয়া দেওয়া সম্ভব ছিল না। ব্যবসায় একটু গতি এলে আরও কিছু টাকা দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ ভাবনা-চিন্তা করছিলেন। কিন্তু শ্রমিকদের একাংশ কোনও কথা মানতে নারাজ। ওঁরাই কাজ বন্ধ করে দিলেন।” তারই জেরে বাধ্য হয়ে সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস ঝোলানো হল বলে দাবি স্বপনবাবুর। নোটিসে লেখা হয়েছে, প্রায় দেড় হাজার টন মাল উৎপাদিত হয়ে পড়ে থাকলেও বাজার পাওয়া যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের দাবি মতো বোনাস মেটানো সম্ভব নয়।
এক সময়ে এশিয়ার অন্যতম নামী কাগজকল ছিল এটি। যদিও স্বাধীনতার পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত মিলটি নানা সময়ে উৎপাদনজাত পণ্য বিক্রি নিয়ে ধুঁকছিল। আগে কয়েক বার বন্ধও হয়েছে। ২০০৯ সালে অগ্রবাল গোষ্ঠী কারখানাটি লিজে নেয়। কিন্তু তার পরেও হাল ফেরেনি। ওই বছরই আগুনে পুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy