Advertisement
০৫ মে ২০২৪

প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় নালিশ সাংসদের

বৌদি-দেওরের লড়াই ফের পৌঁছল থানা-পুলিশ পর্যন্ত। নিজের দেওর তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের বিরুদ্ধে গাইঘাটা থানায় হুমকি, কটূক্তি ও সম্মানহানির লিখিত অভিযোগ করলেন বনগাঁর সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর।

যুযুধান দু’পক্ষ, মঞ্জুলকৃষ্ণ ও মমতাবালা। নিজস্ব চিত্র।

যুযুধান দু’পক্ষ, মঞ্জুলকৃষ্ণ ও মমতাবালা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০১:৪৪
Share: Save:

বৌদি-দেওরের লড়াই ফের পৌঁছল থানা-পুলিশ পর্যন্ত। নিজের দেওর তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের বিরুদ্ধে গাইঘাটা থানায় হুমকি, কটূক্তি ও সম্মানহানির লিখিত অভিযোগ করলেন বনগাঁর সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর।

গাইঘাটার মতুয়াবাড়ির দু’পক্ষের মধ্যে আকচাআকচি নতুন ঘটনা নয়। নানা সময়ে তা থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে। এ বার মমতাবালার অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ মঞ্জুল ও তাঁর ছোট ছেলে শান্তনুর নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন যুবক মমতাদেবীর বাড়ির ভিতরে ঢুকে হুজ্জুত বাধায়। সাংসদকে কটূক্তি, গালিগালাজ ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন মঞ্জুলরা। তাঁকে হুমকিও দেওয়া হয়। তবে কী কারণে মঞ্জুলরা এমনটা করলেন, তার উল্লেখ মমতাদেবী পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে লেখেননি। তাঁর কথায়, ‘‘সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের বার্ষিক সম্মেলনের জন্য মতুয়া ভক্তরা এখন ঠাকুরবাড়িতে এসেছেন। তাঁদের সামনে ওই ঘটনা ঘটার ফলে আমার সম্মানহানি হয়েছে। প্রশাসনের কাছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করছি।’’

সাংসদ তাঁর নিজের প্যাডে অভিযোগ করেছেন পুলিশের কাছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।

মঞ্জুলবাবুরা অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, মমতা ঠাকুরের বাড়ির মধ্যে ঢোকেননি কেউ। বাইরে দাঁড়িয়ে মতুয়া ভক্তদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। মঞ্জুলবাবু বলেন, ‘‘বারো বছর ওর সঙ্গে আমি কথা বলি না। ওর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে।’’ মমতাবালার কিছু ব্যক্তিগত কাজকর্মে ঠাকুর পরিবারের সদস্য হিসাবে তাঁর ‘মাথা হেঁট’ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মঞ্জুল।

তবে মঙ্গলবারের গোলমালের অন্য প্রেক্ষিত আছে বলে মনে করছেন ঠাকুরবাড়িরই একাংশ। প্রতি বছর রাস পূর্ণিমার দিন (এ বার যা পড়েছিল বুধবার) মতুয়া মহাসঙ্ঘের নতুন কমিটি তৈরি হয়। গতবার মঞ্জুলের দাদা, মমতাবালার স্বামী তথা সাংসদ কপিলকৃষ্ণের মৃত্যুর পরে মতুয়াবাড়িতে দু’টি কমিটি তৈরি হয়েছিল। একটির মাথায় ছিলেন মঞ্জুল। অন্যটিতে মমতাবালা। বড়মা বীণাপানিদেবীকে প্রধান উপদেষ্টা রেখে এ বারও ওই কমিটির সঙ্ঘাধিপতি হয়েছেন মমতা নিজেই।

অন্য দিকে, মঞ্জুলরাও পৃথক কমিটি গড়েছেন। সেখানেও সঙ্ঘাধিপতি মঞ্জুল। উপদেষ্টা বড়মা। কিন্তু ঘটনাক্রম বলছে, মন্ত্রিত্ব যাওয়ার পর থেকে মঞ্জুলের প্রভাব কমেছে মতুয়াদের মধ্যে। মমতাবালা সাংসদ হওয়ার পরে স্বভাবতই তাঁর প্রভাব বেড়েছে। ঠাকুরবাড়ির এই ডামাডোলেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে।

শান্তনুর কথায়, ‘‘মতুয়া মহাসঙ্ঘের কমিটি গঠন নিয়ে জেঠিমাকে ওঁর আশপাশের লোকজন ভুল বোঝাচ্ছেন। উনিও তাদের কথা শুনছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE