এত দিন নিষিদ্ধ শব্দবাজি আটক করে রাখা হত থানাতেই। পরে সেই বাজি বিলিও হয়ে যেত। কিন্তু সম্প্রতি হাবরা থানা চত্বরে বাজেয়াপ্ত করা বাজি গাড়ি থেকে নামানোর সময়ে বিস্ফোরণের পরে অন্য পরিকল্পনা নিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ। এ বার থেকে বিপুল পরিমাণে বাজি আটক হলে সঙ্গে সঙ্গে দমকলকে ডেকে ঘটনাস্থলেই সে সব জল দিয়ে ভিজিয়ে নষ্ট করে ফেলে দেওয়া হবে। মঙ্গলবার হাবরায় বেশ কিছু জায়গায় এ ভাবেই বাজি আটকের পরে দমকল ডেকে সে সব নষ্ট করেছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “হাবরা থানায় বাজি ফেটে যাওয়ার ঘটনার পরে বাজি আটক করে সেখানেই দমকলকে ডেকে বাজি নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। শব্দবাজির প্রকোপ বন্ধ কমাতে পুলিশ গত কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে। ধরপাকড়ও চলছে।” এ সবের জেরে বাজি কেনাবেচার পরিমাণ কমেছে বলে পুলিশ সুপারের দাবি। তিনি বলেন, “শব্দবাজিও ফাটছেও কম।”
বস্তুত, বিজয়া দশমীর দিন থেকেই শব্দবাজির দাপট চলতে থাকে গোটা রাজ্যে। ব্যতিক্রম নয় উত্তর ২৪ পরগনাও। লক্ষ্মীপুজো ছাড়িয়ে কালীপুজো পর্যন্ত চলতে তাকে বাজির রেশ। তবে পুলিশি তত্পরতার জন্য এ বার লক্ষ্মীপুজোয় জেলায় বিভিন্ন এলাকায় শব্দবাজির দাপট অনেকটাই কমেছে বলে স্থানীয় মানুষজনের অভিজ্ঞতা। যদিও প্রশ্ন, “কালীপুজোটাও এমন ভালয় ভালয় কাটবে তো?”
জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়ে প্রচুর নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১০ জনকে। এরমধ্যে বুধবার সকালেই হাড়োয়ার একটি ট্রাক থেকে মেলে ৮০০ কেজি শব্দবাজি। নিষিদ্ধ বাজি দেখলেই পুলিশ কন্ট্রোলে ফোন করার জন্য প্রচার চালিয়েছিল পুলিশ। ফোন-মারফত খবর পেয়েই আটক করা হয় ট্রাক-বোঝাই বাজি।
এই সব নিষিদ্ধ শব্দবাজি মূলত তৈরি হয় বারাসত-সংলগ্ন নীলগঞ্জ এলাকা থেকে। এই এলাকায় ঘরে-ঘরে কুটিরশিল্পের মতো বাজি তৈরি হয়। প্রকাশ্যে আতসবাজি তৈরি হলেও, লুকিয়ে-চুরিয়ে চলে শব্দবাজি তৈরি। বাজি তৈরির সময়ে ফেটে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে নীলগঞ্জে। বুধবার ওই এলাকাতেও হানা দিয়ে প্রায় হাজার কেজি শব্দবাজি ও মশলা আটক করেছে দত্তপুকুর থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে কয়েক জনকে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “গোটা জেলা জুড়ে শব্দবাজির ব্যাপারে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। বিক্রিই শুধু নয়, লুকিয়ে-চুরিয়ে বাজি ফাটালে তা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে কন্ট্রোল রুমের নম্বরও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শব্দবাজি-সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ পেলেই পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy