Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
আনন্দবাজারের খবরের জের

মোল্লা পরিবার পাশে পাচ্ছেন অনেককেই

প্রশাসনের তরফে নাসিরুদ্দিন ও তার বাবা আরিফ মোল্লার চিকিৎসা-পথ্যের ব্যবস্থা হল। পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতার পক্ষে চাল ও পোশাকও দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে দেগঙ্গার বিডিওর তরফে ত্রাণ দফতরের আধিকারিক ধ্রুবজ্যোতি করের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল হাদিপুর-ঝিকড়া ১ পঞ্চায়েতের পশ্চিম হাদিপুর গ্রামের মোল্লাপাড়ায় আরিফের বাড়িতে যায়। ধ্রুবজ্যোতিবাবু বলেন, “পরিবারটি সত্যিই খুব দুঃস্থ। তাদের বিশেষ ত্রাণ ও ঘরের ফুটোফাটা ঢাকতে পলিথিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেন সদ্যোজাত সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তাঁরা, সে সম্পর্কে রিপোট তৈরি করে পাঠাব।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:০০
Share: Save:

প্রশাসনের তরফে নাসিরুদ্দিন ও তার বাবা আরিফ মোল্লার চিকিৎসা-পথ্যের ব্যবস্থা হল। পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতার পক্ষে চাল ও পোশাকও দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে দেগঙ্গার বিডিওর তরফে ত্রাণ দফতরের আধিকারিক ধ্রুবজ্যোতি করের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল হাদিপুর-ঝিকড়া ১ পঞ্চায়েতের পশ্চিম হাদিপুর গ্রামের মোল্লাপাড়ায় আরিফের বাড়িতে যায়। ধ্রুবজ্যোতিবাবু বলেন, “পরিবারটি সত্যিই খুব দুঃস্থ। তাদের বিশেষ ত্রাণ ও ঘরের ফুটোফাটা ঢাকতে পলিথিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেন সদ্যোজাত সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তাঁরা, সে সম্পর্কে রিপোট তৈরি করে পাঠাব।”

এ দিনই গ্রামে আসেন দেগঙ্গার বিএমওএইচ সুরজ সিংহ। তিনি মিনু বিবির পঞ্চম সন্তান নাসিরুদ্দিনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। আরিফেরও শরীর পরীক্ষার পরে জানান তাঁর টিবি হয়েছে। মা এবং শিশু-সহ আরিফ যাতে চিকিৎসার পাশাপাশি সরকারি খরচে ওষুধ-পথ্য পান, সেই ব্যবস্থা করেন বিএমওএইচ। বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ হাদিপুর-ঝিকড়া ১ পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তথা তৃণমূল নেতা সরিফুল ইসলাম-সহ কয়েক জন পোশাক, চাল নিয়ে মোল্লাপাড়ায় হাজির হন। পরিবারটি বিপিএল তালিকাভুক্ত নয়। ফলে ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘর পাওয়ার কথা নয়। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনও সরকারি প্রকল্পে যাতে পরিবারটির জন্য ঘরের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়, সে জন্য আরিফকে দিয়ে লিখিত আবেদন করানোর ব্যবস্থা করান নেতারা। কোনও রকম সাহায্য দরকার হলে আরিফ যেন জানান, সেই আশ্বাসও মেলে।

গত শুক্রবার আরিফের স্ত্রী মিনু বিবি পঞ্চম সন্তানের জন্ম দেন। বেড়াচাঁপা ২ পঞ্চায়েতের যাদবপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি নিঃসন্তান হাফিজুল মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী নাসিমার হাতে সেই শিশুকে তুলে দেন আরিফরা। বিনিময়ে ১০ হাজার টাকা ও কিছু পোশাক মেলে।

এ দিকে, টাকার বিনিময়ে শিশু অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার খবর চাউর হতেই বেকায়দায় পড়ে মোল্লা পরিবার। তাঁদের দাবি, অত্যন্ত গরিব পরিবারে চার ছেলেমেয়ের ভরণপোষণই করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে পঞ্চম সন্তানকে তাঁরা মানুষ করবেন কী ভাবে? পুলিশ-প্রশাসনের লোকজন গিয়ে তাঁদের বোঝান। এরপরেই ছেলেটিকে নাসিমাদের হাত থেকে ফেরত আনেন আরিফ।

প্রাথমিক ভাবে সরকারি কোনও সাহায্যই পৌঁছয়নি আরিফের বাড়িতে। ক্ষুব্ধ গ্রামের মানুষ চাঁদা তুলে মোল্লা পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সদ্যোজাতের চিকিৎসা ও পথ্যের ব্যবস্থা করেন। তবে বৃহস্পতিবার অবশ্য ছবিটা ছিল অন্য রকম। সকলেই খোঁজ-খবর করা শুরু করেছেন। মোল্লা দম্পত্তি বলেন, “খবরের কাগজে লেখা বেরনোয় এখন যে ভাবে মানুষ পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তেমনটা আগে হলে কী কেউ নিজের ছেলেকে বিক্রির কথা স্বপ্নেও ভাবে?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nasiruddin molla southbengal deganga basirhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE