Advertisement
১১ মে ২০২৪

শিক্ষিকাকে খুনে ধরা পড়েনি কেউ, ক্ষোভ

হিঙ্গলগঞ্জের শিক্ষিকাকে নৃশংস ভাবে খুনের ঘটনার পরে কেটে গেছে বেশ কয়েকটা দিন। এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করা তো দূরের কথা, কী কারণে খুন হলেন মহিলা, তা নিয়েও সম্পূর্ণ অন্ধকারে। খুনের কিনারা করতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন নিহতের পরিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৪ ০১:০৩
Share: Save:

হিঙ্গলগঞ্জের শিক্ষিকাকে নৃশংস ভাবে খুনের ঘটনার পরে কেটে গেছে বেশ কয়েকটা দিন। এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করা তো দূরের কথা, কী কারণে খুন হলেন মহিলা, তা নিয়েও সম্পূর্ণ অন্ধকারে। খুনের কিনারা করতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন নিহতের পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, অজানা কোনও কারণে পুলিশ ঘটনাটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছে না। ইতিমধ্যে গ্রামে গিয়ে বিক্ষোভের মুখেও পড়েছেন বসিরহাটের আইসি। এ বিষয়ে বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিত্‌ বন্দ্যোপাধ্যয় বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। শিক্ষিকার ঘরে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞেরা খুনির হাতের ছাপ নিয়েছেন। আশা করা যায় খুব শীঘ্রই দুষ্কৃতীদের খোঁজ মিলবে।”

গত ১৫ জুলাই হিঙ্গলগঞ্জের কনকনগর গ্রামের বাসিন্দা ফুলরেণু সরকারকে তাঁর ঘরেই কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা। ফুলরেণুদেবী গ্রামেরই রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁর স্বামী দীনবন্ধু বেলুড় মঠের একজন কর্মী। ঘটনার দিন তিনি এবং সরকার দম্পতির একমাত্র ছেলে শঙ্কর বাড়িতে ছিলেন না। দুষ্কৃতীরা বাড়ির একপাশের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। ফুলরেণুদেবীকে কুপিয়ে খুন করে। মুখে একাধিক ক্ষতচিহ্ন থেকে পুলিশের অনুমান, প্রবল আক্রোশেই হামলা হয়েছে ওই মহিলার উপরে।

তদন্তে নেমে পুলিশের ভূমিকায় গ্রামের মানুষের ক্ষোভ আছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, ঘটনার সন্ধ্যায়, ফুলরেণুদেবীর বাড়িতে পড়তে গিয়েছিল প্রতিবেশী একটি শিশু। সে বন্ধ ঘরের মধ্যে থেকে দিদিমণির গোঙানির শব্দ শোনে। ‘মরে যাচ্ছি, একটু জল দাও’ বলেন দিদিমণি। ভয় পেয়ে বাড়িতে ফিরে সব কথা বলেছিল ওই শিশু। কিন্তু কেন তার পরিবারের কেউ তখনই ফুলরেণুদেবীর বাড়িতে গিয়ে খোঁজ-খবর করলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন দানা বেঁধেছে গ্রামের মানুষের মনে। ঘটনার পর দিন থেকেই ওই শিশুর বাবার খোঁজ মিলছে না। সে কথা পুলিশকে জানিয়েছেন গ্রামের মানুষ। তা-ও পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে না বলে তাঁদের দাবি।

ঘটনার পর থেকে গ্রামের চার বাসিন্দা এলাকা ছাড়ায় গ্রামের মানুষ চিন্তিত। দীনবন্ধুবাবু এবং তাঁর দাদা ষষ্ঠি সরকার বলেন, “সন্দেহজনক কয়েকজনের নাম পুলিশকে জানানো হলেও তাদের তরফে গা-ছাড়া ভাব দেখা যাচ্ছে। সন্দেহভাজনদের কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করা হচ্ছে না। সে জন্যই অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার ভাবছি।”

পুলিশের বক্তব্য, তদন্তে জানা গিয়েছে, এক পুরুষ ও তাঁর সঙ্গিণী ফুলরেণুর বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। বিয়ের আগে থেকেই তাঁদের সম্পর্ক ছিল। যদিও পরে পৃথক সংসার পাতেন দু’জন। পরে আবার তাঁদের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক তৈরি হয়। ঘটনার পর থেকে তাঁদের কোনও খোঁজ নেই। খুনের সঙ্গে ওই ব্যক্তি ও তাঁর সঙ্গিণী বা তাঁদের পরিবারের কোনও সম্পর্ক আছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে গ্রামের মানুষের মধ্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE