এলাকায় পুলিশি টহল। বৃহস্পতিবার। ছবি: নিজস্ব চিত্র
দুর্ঘটনার দু’ দিন পরে ছন্দে ফিরছে বিষ্ণুপুর থানার রসপুঞ্জ এলাকা। রসপুঞ্জ থেকে সামালি পর্যন্ত অবরুদ্ধ বাখরাহাট রোড বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে পুলিশ প্রশাসন। আপাতত এক মাসের জন্য ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
গত দু’দিন ধরে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছতে যতটা কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছিল, এ দিন তেমন কিছু করতে হয়নি। কার্যত বিনা-বাধায় পৌঁছে যাওয়া গিয়েছে সেখানে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ দিন ওই এলাকায় গা়ড়ি চলাচলও স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এলাকার কয়েকটি দোকানপাটও খুলতে শুরু হয় সকাল থেকে। বাখরাহাট রোডের উপরে রয়েছে বেশ কয়েকটি স্কুল। জনরোষের জেরে সেগুলিও গত দু’ দিন বন্ধ রাখতে হয়েছিল। এ দিন দু’ একটি স্কুল খুললেও বাকিগুলি বন্ধই ছিল। গত দু’দিন বন্ধ ছিল এলাকার ছোট ছোট কারখানা। এ দিন অবশ্য সেখানে কাজ শুরু হয়েছে। যদিও কিছু দোকান এ দিন বন্ধ ছিল।
গত সোমবার বিকেলে রসপুঞ্জের স্কুল মোড়ে একটি বেপরোয়ার গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান এক খুদে পড়ুয়া ও তার মা। ওই ঘটনায় আহত হয় আরও ছ’জন স্কুল পড়ুয়া। বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় বাসিন্দা কাল্লু মোল্লা ও তার দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, নিয়মিত স্কুলছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করতে কাল্লু ওখানে গাড়ি নিয়ে আসত। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দিন কাল্লুর বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জেরেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিল কাল্লু।
ওই দুর্ঘটনার পর থেকে বিক্ষোভের আগুন জ্বলতে শুরু করে এলাকায়। সোমবারের পর থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ওই এলাকা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় মানুষ বিভিন্ন জায়গায় বাঁশ, ইট, গাছের গুঁড়ি দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। মঙ্গলবার, ওই রাস্তায় শুধুমাত্র অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে দেওয়া হয়েছিল। যদিও বুধবারে অ্যাম্বুল্যান্সও ছাড় পায়নি।’’
বাখরাহাট রোডের একটি বড় অংশ বন্ধ করে ক্ষুব্ধ জনতা রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। বাদ পড়েনি রসপুঞ্জ ফাঁড়িও। থানার বাজেয়াপ্ত করা গাড়িগুলিকে রাস্তার মাঝখানে এনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা এ দিন জানান, ঘটনা এত দূর গড়াতোই না, যদি না সোমবার দুর্ঘটনার পরে সাধারণ মানুষের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করত। এর জন্যই প্রশাসনের উপরে মানুষের দীর্ঘ দিন ধরে জমে থাকা ক্ষোভ ফেটে পড়েছিল।
তবে, স্থানীয় মানুষদের দাবি মেনে এ দিন সকাল দশটা থেকে রসপুঞ্জ স্কুল মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বাখরাহাট রোডের ওই দুর্ঘটনাস্থলে বসানো হয় গার্ড রেলও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy