এখানেই চলত পিকনিক। —নিজস্ব চিত্র।
পিকনিকে এসে মদ্যপান এবং তার জেরে কিছু লোকের হুজ্জুতের ফলে বকখালিতে বেড়াতে আসা সাধারণ পর্যটকদের শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে মাঝে মধ্যেই। ক্যালেন্ডারে সরকারি ছুটির দিন হোক বা বিশেষ কোনও উপলক্ষ— বকখালির পিকনিক স্পটে গেলে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। কিন্তু পর্যটকদের অনেকেই সেই ভিড়ভাট্টা বা মদ্যপদের হইচই ভাল ভাবে নেন না। নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন। মাঝে মধ্যে ঝুটঝামেলাও বাধে। অনেক দিন ধরেই সেটা পুলিশ-প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। তাই গাড়ি পার্কিং লটের পাশে পিকনিক স্পট না রেখে তা সরানো হচ্ছে দূরে। এ রকমই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ।
পর্ষদের এক সদস্য বলেন, ‘‘পিকনিকের মরসুম এলেই এখানে গাড়ির ভিড় জমে যায়। পর্যটকদের গাড়ির সঙ্গে পিকনিক পার্টির প্রতিনিয়ত ঝামেলা, ঠোকাঠুকি লেগেই রয়েছে। তা ছাড়াও, পিকনিক হলেই এলাকায় প্রচুর যানজট হচ্ছে। এ সব সমস্যা সমাধানের কথা ভেবেই পিকনিক স্পট সরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
পার্কিং লটের পাশে ঝাউবনের মধ্যে যে এলাকা পিকনিকের জন্য বরাদ্দ রয়েছে, সেখানে দিন দিন পিকনিক পার্টির ভিড় বাড়তে থাকায় জায়গারও সংকুলান হচ্ছে না। সরকারি ছুটির দিনগুলিতে অন্তত ৫০-৮০টি করে পিকনিক দল বকখালিতে আসে। তারস্বরে মাইক বাজিয়ে নাচানাচি, হইহুল্লোড় চলে। যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এক এক সময়ে। কে কোথা থেকে আসছে, তার কোনও খতিয়ান থাকে না পুলিশের কাছে। তাই আপাতত পিকনিক স্পটটিকে সরিয়ে নতুন করে গড়ে তোলা হচ্ছে গাড়ি পার্কিয়ের পূর্ব দিকে, সরকারি লজের পিছনে।
পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা, সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘পিকনিক স্পটটিকে সরিয়ে বনবিবির মন্দিরের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান বাথরুম, পানীয় জলের মতো কিছু পরিকাঠামোও গড়া হবে।’’
পুজোর আগেই এই কাজ সেরে ফেলতে চান পর্ষদের কর্তারা। তাঁদের দাবি, বনবিবির মন্দিরের দিকে অনেকটাই নিরিবিলি এবং ঘন ঝাউবনে জায়গাও অনেকটা প্রশস্ত। পুলিশ ফাঁড়ির সামনে থেকে সরকারি লজের পাশ দিয়ে যে রাস্তাটি গিয়েছে, সেটিও নতুন করে গড়ে তোলা হবে। যাতে পিকনিক করতে আসা দলগুলি সরাসরি সে দিকে ঘুরে যেতে পারে।
নামখানার সেতু তৈরি হয়ে গেলে ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করছে প্রশাসন। সে দিকে তাকিয়েও এই সিদ্ধান্ত জরুরি ছিল বলে মত পর্ষদ কর্তাদের। পাশাপাশি সার্বিক ভাবে এলাকায় কিছু নতুন রাস্তা এবং সৈকতের আরও সৌন্দর্যায়নেও উদ্যোগী হয়েছে তারা। বর্তমান পিকনিক স্পটটিতে শিশুদের খেলার পার্ক গড়ারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ইদানীং পিকনিক স্পটের বাইরেও বনবিবির মন্দিরের দিকে এমনিতেই অনেকে পিকনিক করতে ঢুকে যাচ্ছে বলে নজরে এসেছে পর্ষদের। ফলে দু’তিন জায়গায় এক সঙ্গে নজরদারি চালাতেও অসুবিধা হচ্ছে পুলিশের। পিকনিকের একটি নির্দিষ্ট জায়গা করে সেখানে নথিভুক্তকরণের ব্যবস্থাও করতে চান পর্ষদ কর্তারা। যা আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে বলে তাঁরা মনে করছেন।
পুরো পিকনিক দলের ঠাঁই-ঠিকানা লেখা না হলেও গাড়ির নম্বর আর কতজন ওই গাড়িতে এসেছে, এখন সেটুকুও লিখে রাখার ব্যবস্থা নেই। যা পর্যটকদের ক্ষেত্রে প্রতিটি হোটেলেই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতে নিরাপত্তাই মার খাচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy