Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
হাসনাবাদ

এইচআইভি আক্রান্তকে মারধরে ধৃত

এইচআইভি আক্রান্ত তরুণীকে মারধর করার অভিযোগ উঠল গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হাসনাবাদের গ্রামে। এই ঘটনায় পুলিশ রবিউল গাজি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণী বারাসত জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১২
Share: Save:

এইচআইভি আক্রান্ত তরুণীকে মারধর করার অভিযোগ উঠল গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হাসনাবাদের গ্রামে। এই ঘটনায় পুলিশ রবিউল গাজি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণী বারাসত জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্ত মোক্তার এবং মুমতাজ গাজির খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

এত প্রচারের পরেও যে সমাজ এইচআইভি সংক্রমণ সম্পর্কে সচেতন হয়নি তা এই ঘটনাই বুঝিয়ে দিল। এখনও মারণরোগে আক্রান্ত এই রোগীদের অনেক ক্ষেত্রে একঘরে করে রাখা হয়। দিন কয়েক আগে মিনাখাঁর এক এইচআইভি আক্রান্ত যুবকের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা সামনে আসে। তাঁকে মারধরের অভিযোগ ওঠে পরিবারেরই কিছু লোকের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ দিন ধরে গ্রামে একঘরেও হয়ে আছেন তিনি।

গ্রামের মানুষ তাঁকে একঘরে করে রেখেছিল বলে জানিয়েছেন হাসনাবাদের ওই তরুণীও। অভিযোগ, তাঁকে পানীয় জল নিতে দেওয়া হতো না। পুকুরে স্নান করারও অনুমতি ছিল না তাঁর। শুধু তাই নয়, পাড়ার কেউ তাঁর সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলত না। মাস কয়েক আগে ওই তরুণীকে ঘরে আটকে রেখে মারধর করেছিল আত্মীয়েরা, এমনও অভিযোগ উঠেছে।

তরুণীর বাবা নেই। মা মানসিক ভারসাম্যহীন। ভাই চোখে দেখতে পান না। ভয়ে ওই তরুণী পুলিশের কাছে অভিযোগও জানাতে পারেননি। কয়েক বছর আগে মুম্বইয়ের যৌনপল্লিতে পাচার হয়ে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। সেখানকার এক ট্রাফিক পুলিশের সহযোগিতায় বাড়ি ফেরেন।

২০১২ সালে তরুণী জানতে পারেন, শরীরে এইচআইভি বাসা বেঁধেছে। খবর জানাজানি হতেই গ্রামবাসীরা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করে। কটূক্তি আর অপমান নিত্যসঙ্গী হয়ে ওঠে জীবনে।

কী ঘটেছিল বুধবার? এ দিন সকালে দাদার বাড়িতে গিয়েছিলেন তরুণী। সেখানে সামান্য অজুহাতে কিছু লোক এসে মেয়েটিকে মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় তাঁকে। নাক-মুখ ফেটে রক্ত বেরোতে থাকে। খবর পেয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওই তরুণীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

তরুণী বলেন, ‘‘এইচআইভি আক্রান্ত বলে মারার সময়ে কেউ ঠেকাতে পর্যন্ত আসেনি। আমাকে এলাকা ছাড়া করার জন্যই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’’

ধৃত রবিউল অবশ্য মারধরের কথা অস্বীকার করেছে। তার কথায়, ‘‘দু’টো বাচ্চা খেলনা বন্দুক নিয়ে খেলছিল। খোঁচা লেগে যাতে এই ভেবে ওদের বারণ করা হয়। মাঝখান থেকে ওই মেয়েটা ঝগড়া বাধিয়ে দেয়।’’ সেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে সুব্রত বিশ্বাস বলেন, ‘‘আগেও ওই তরুণীকে মারধর করা হয়েছে। ফের মারধর করা হল। আমরা দোষীদের গ্রেফতার এবং শাস্তির দাবি করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

HIV Patient
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE