Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গলা দিয়ে জল নামে নগদ গুনে

টাকা ধার চাইলে পাওয়া যাবে। কিন্তু এক গ্লাস জল চাইলেই মুখ ভার মগরাহাট ২ ব্লকের হরিশঙ্করপুর পশ্চিম পাড়ার বধূদের। এই পাড়ায় নলকূপের কোনও ব্যবস্থা নেই। জলও সরবরাহ করা হয় না।

জলই-জীবন: নিজস্ব চিত্র

জলই-জীবন: নিজস্ব চিত্র

দিলীপ নস্কর
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০০:৩৪
Share: Save:

টাকা ধার চাইলে পাওয়া যাবে। কিন্তু এক গ্লাস জল চাইলেই মুখ ভার মগরাহাট ২ ব্লকের হরিশঙ্করপুর পশ্চিম পাড়ার বধূদের।

এই পাড়ায় নলকূপের কোনও ব্যবস্থা নেই। জলও সরবরাহ করা হয় না। এ দিকে, এই গরমে জলের জন্য মানুষ হাহাকার করছেন। প্রায় আধঘণ্টা হেঁটে জল আনতে যেতে হয় এলাকার মানুষকে। সারা দিনে যা জল আনা হয় তা দিয়ে কোনও রকমে চলে বলে জানালেন বাসিন্দারা।

বিডিও অনির্বাণ সেন বলেন, ‘‘গরম পড়তেই গভীর জলের নলকূপগুলি প্রায় খারাপ। এ দিকে নোদাখালির ডোঙাড়িয়া জল প্রকল্প থেকে পাইপ লাইনে যে জল সরবরাহ হচ্ছে তা যথেষ্ট নয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানানো হয়েছে।’’

ওই ব্লকে ডোহাড়িয়া জল প্রকল্প থেকে পাইপ লাইনে জল সরবরাহ করা হয়। তা থেকে বজবজ ১ ও ২ ব্লক, নোদাখালি, সোনারপুর, বারুইপুর, জয়নগর হয়ে মগরাহাট ব্লকে জল ঢোকে। মগরাহাট ব্লকে রয়েছে ১১টি জলের ট্যাঙ্ক। প্রকল্পের জল এতগুলি জায়গা পার করে মগরাহাটে ঢোকার পরে জলের তোড় কমে যাচ্ছে। ওই ব্লকের ১৪টি পঞ্চায়েতে ৮৬টি মৌজায় বসবাসকারী প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষ প্রয়োজন মতো জল পাচ্ছেন না। এ দিকে ভরা গরমে গ্রামের পর গ্রাম পুকুর, খাল, বিল শুকিয়ে গিয়েছে। কোথাও বা জল থাকলেও তা দুর্গন্ধে ভরা।

স্থানীয় মহিলাদের অভিযোগ, ট্যাপ কলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকাই সার। কপাল ভাল থাকলে জল মেলে আর না হলে নয়। লাইনের শেষে দাঁড়ালে কখনও সখনও জল মেলে। পাশের গ্রাম থেকে জল এনে সংসারের কাজ করা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু খাওয়ার ও রান্নার জন্য জল কিনতে হচ্ছে। এ ভাবে কত দিন চালানো সম্ভব, জানেন না মানুষজন।

স্থানীয় তৃণমূল নেতা অনিমেশ রাহার অভিযোগ, এলাকার অধিকাংশ গ্রামে পাইপ লাইনের জল সরবরাহ প্রায় বন্ধ। পাশের পাড়া বা স্কুল থেকে সামান্য জল সংগ্রহ করে কোনও ভাবে তেষ্টা মেটাতে হচ্ছে। বিষয়টি পঞ্চায়েত সমিতি ও প্রশাসনকে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে মগরাহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি খইরুল আলম বলেন, ‘‘দ্রুত বেশ কয়েকটি ট্যাঙ্কের পাশে গভীর জলের নলকূপ বসিয়ে তাতে মোটরের সাহায্যে জল তুলে ট্যাঙ্ক ভর্তি করে সরবরাহ করতে হবে। এতে খরচ পড়বে ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা।’’

সমস্ত বিষয়ে প্রশাসনিক সভায় একাধিকবার বলা হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও সুরাহা হল না বলে তাঁর আক্ষেপ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water Crisis Magrahat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE