Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়া

সচেতনতার বার্তা দিতে পথে পুলিশ

সম্প্রতি বসিরহাটে যে ভাবে অশান্তি ছড়িয়েছিল, তাতে সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা ছিল বলেই জানতে পারে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও জানিয়েছিলেন, ফেসবুকে একটি পোস্ট থেকেই ছড়িয়েছিল উত্তেজনা। তারপর থেকে বিভিন্ন সময়ে ফেসবুককে ‘ফেকবুক’ বলেও নিজের উদ্বেগের কথা গোপন রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০২:৪৩
Share: Save:

তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বাড়ছে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব। লঘুচালের ঠাট্টা-রসিকতা যেমন থাকছে সেখানে, তেমনই নানা সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে আলোচনা, সমালোচনাও উঠে আসছে। মন্তব্যের দ্বার অবারিত। সকলে সকলের কথা জানতে পারছেন, পড়তে পারছেন, ছবি দেখতে পারছেন। আর তা থেকেই ছড়াচ্ছে নানা গুজব, বিভ্রান্তি, অসন্তোষ।

সম্প্রতি বসিরহাটে যে ভাবে অশান্তি ছড়িয়েছিল, তাতে সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা ছিল বলেই জানতে পারে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও জানিয়েছিলেন, ফেসবুকে একটি পোস্ট থেকেই ছড়িয়েছিল উত্তেজনা। তারপর থেকে বিভিন্ন সময়ে ফেসবুককে ‘ফেকবুক’ বলেও নিজের উদ্বেগের কথা গোপন রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী। সোশ্যাল মি়ডিয়ার উপযোগিতার কথাও স্বীকার করেন তিনি, পাশাপাশি, অপপ্রয়োগের জেরে যে সোশ্যাল মিডিয়া ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে, উস্কানি ছড়াতে পারে, সে কথাও মনে করিয়ে দেন মমতা।

সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ একগুচ্ছ পদক্ষেপ করছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কিছু এলাকায় সোশ্যাল মিডিয়ার উপরে নজরদারি চালাতে বিশেষ দলও তৈরি করেছে পুলিশ। বসিরহাট মহকুমার মানুষ বিলক্ষণ বুঝেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে কী ভয়ঙ্কর উত্তেজনার আগুন, বিদ্বেষ ছড়াতে পারে। এই এলাকায় সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার-অপব্যবহার নিয়ে মানুষকে সচেতন করার দিকটিকে গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশও।

পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হবে। ইতিমধ্যেই ফেসবুক এবং হোয়াটস অ্যাপের অপব্যবহার করলে আইনি সাজা কী হতে পারে, তা নিয়ে লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, পুলিশের তরফে বসিরহাট শহরে পোস্টারও সাঁটানো হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রচার চলছে। বিভিন্ন পাড়ায় গিয়ে প্রচারেরও পরিকল্পনা করেছেন পুলিশকর্তারা।

বাদুড়িয়ার যে তরুণের আপত্তিকর পোস্টকে কেন্দ্র করে বসিরহাটের নানা প্রান্তে গণ্ডগোল ছড়িয়েছিল, তাকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাকে জেরা করে পরে আরও একজন ধরা পড়ে। গোটা উত্তর ২৪ পরগনার নানা প্রান্তে দীর্ঘ দিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। জারি হয় ১৪৪ ধারা।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি করেছেন, বাদুড়িয়া কাণ্ডের পরেও মানুষ ফেসবুকে পোস্টের বিষয়ে সচেতন হননি। সে কারণে দিন কয়েক আগে অশোকনগর, বনগাঁ-সহ রাজ্যের বেশ কিছু জায়গা থেকে বিতর্কিত পোস্টের জন্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘প্রয়োজনে ফোন কল রেকর্ড এবং সেভ করা হবে। মনিটরিং করার কাজ চলবে হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুক এবং সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপে। কেউ যাতে আপত্তিকর বার্তা না দিতে পারেন, সে দিকে নজর রাখা হবে।’’ দেশের রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপাল, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রীদের সম্পর্কে কোনও বিতর্কিত বার্তা যাতে পোস্ট না করা হয়, সে দিকেও নজর রাখবে পুলিশ। শুধু তাই নয়, জাতি, ধর্ম, সংস্কৃতি সম্পর্কে উস্কানিমূলক কোনও পোস্ট লাইক করলে বা তাতে মন্তব্য করলেও সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম বিভাগ শাস্তির ব্যবস্থা নিতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এ সব কথাই মানুষকে জানাতে উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE