Advertisement
১১ মে ২০২৪

বনগাঁয় প্রার্থী বিদায়ী পুরপ্রধান ও তাঁর স্বামী

বনগাঁ পুরসভা নির্বাচনের জন্য সোমবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হল। তবে পুরসভার মোট ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টি ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী পরে ঘোষণা করা হবে দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে।

মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন শঙ্কর আঢ্য।

মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন শঙ্কর আঢ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৫ ০১:৫৬
Share: Save:

বনগাঁ পুরসভা নির্বাচনের জন্য সোমবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হল। তবে পুরসভার মোট ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টি ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী পরে ঘোষণা করা হবে দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে।

এ দিনই বনগাঁ মহকুমাশাসকের দফতরে ২১ জন তৃণমূল প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী পরে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। ২৫ মার্চ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। ২১ জন ঘোষিত প্রার্থীর মধ্যে নতুন মুখ আট জন। বর্তমানে দলের ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১০ জনকে দল এ বারও প্রার্থী করেছে। হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন শহর তৃণমূল সভাপতি শঙ্কর আঢ্য। তিনি ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছেন। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন চেয়ারম্যান জ্যোত্‌স্না আঢ্য। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন পুরসভার ভাইস চেয়াররম্যান কৃষ্ণা রায়। উল্লেখযোগ্য, কাউন্সিলর হিসাবে এ বার প্রার্থী হতে পারেননি ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তাপস মুখোপাধ্যায়। ওয়ার্ডটি এ বার মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। নতুন মুখের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির বনগাঁ শাখার সহ সম্পাদক দিলীপ মজুমদার, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেত্রী মৌসুমী চক্রবর্তী ও কার্তিক মণ্ডল।

২০১০ সালের পুরভোটে তৃণমূল পেয়েছিল ৬টি আসন। নির্দল একটি ও কংগ্রেস ৫টি। পরে নির্দল ও কংগ্রেস কাউন্সিলরেরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূলের আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১২টিতে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তাপসবাবু প্রার্থী হতে না পারলেও ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন তাঁর বৌমা সোমাঞ্জনা মুখোপাধ্যায়। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর কবিতা বালার বদলে প্রার্থী হয়েছেন তাঁর স্বামী তথা বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রশান্ত বালা। ৩ নম্বর ওয়ার্ডটি তপসিলি মহিলা হিসাবে সংরক্ষিত হওয়ায় বর্তমান কাউন্সিলর হিমাদ্রি মণ্ডলকে দল প্রার্থী করেছে ২ নম্বর ওয়ার্ডে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শম্পা মোহান্ত প্রার্থী হয়েছেন পাশের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডটি এ বার সাধারণ হিসাবে সংরক্ষিত। ফলে তিনি নিজের ওয়ার্ডেই দাঁড়াতে পারতেন। কিন্তু ১২ নম্বর ওয়ার্ডটি তপসিলি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় বর্তমান কাউন্সিলর টুম্পা রায়কে ১১ নম্বরে প্রার্থী করেছে দল। একই ভাবে ১০ নম্বর ওয়ার্ডটি তপসিলি সাধারণ হিসাবে সংরক্ষিত হওয়ায় সেখানকার কাউন্সিলর কৃষ্ণাদেবীকে প্রার্থী ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দীর্ঘদিনের তৃণমূল কর্মী দীপ্তেন্দু বিকাশ বৈরাগীকে ১০ নম্বরে প্রার্থী করা হয়েছে। কৃষ্ণাদেবী সম্পর্কে টুম্পাদেবীর শাশুড়ি।

সেই কাজেই ব্যস্ত তাঁর স্ত্রী।

শঙ্করবাবু ও জ্যোত্‌স্নাদেবী সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। শঙ্করবাবু বলেন, “দলের নির্দেশ ছিল, বর্তমান কাউন্সিলরদের দলীয় টিকিট দিতে হবে। নিজের ওয়ার্ডে দাঁড়াতে না পারলে পাশের ওয়ার্ডে তাঁকে দাঁড় করাতে হবে। না হলে কাউন্সিলরের মতামত নিয়ে ওয়ার্ডে কাউকে প্রার্থী করতে হবে। সেই মতো প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। একই পরিবারের দু’জন প্রার্থী হলেও প্রার্থীদের এলাকার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা দেখা হয়েছে।” দলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “আমাদের নির্দেশ ছিল, কাউন্সিলর বাদে একই পরিবার থেকে দু’জনকে প্রার্থী করা যাবে না। কিন্তু শঙ্কর আঢ্যের ক্ষেত্রে ওই ওয়ার্ডের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে থেকে তিনি ছাড়া আর কারও নাম আসেনি প্রার্থী হতে চেয়ে। স্বাভাবিক ভাবে তাঁকেই প্রার্থী করা হয়েছে।”

৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হওয়ার দাবিদার প্রথমে ছিলেন দু’জন জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি রতন ঘোষ ও তৃণমূল কর্মী মনোরঞ্জন বিশ্বাস। রতনবাবু বনগাঁ পুরসভার অধীন প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, তাঁকে প্রার্থী হতে গেলে নির্বাচনের তিরিশ দিন আগে চাকরি ছাড়তে হত। কিন্তু তিনি চাকরি ছেড়েছেন দিন কয়েক আগে। ফলে তাঁকে প্রার্থী করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে রতনবাবু দলের পরামর্শে প্রার্থী হিসাবে তাঁর স্ত্রী রত্নাদেবীর নাম প্রস্তাব করেছেন। প্রার্থী বাছাই কমিটির চেয়ারম্যান তথা বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিত্‌ দাস বলেন, “ওই ওয়ার্ডে কে প্রার্থী হবেন, তা ঠিক করার ভার জেলা সভাপতির হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।” দলীয় সূত্রের খবর, প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন রত্নাদেবীই।

এ দিন সকাল থেকেই বনগাঁ শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে প্রার্থীরা মিছিল করে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে জড়ো হতে থাকেন। সব থেকে বড় মিছিল এসেছিল ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। পুলিশের পক্ষ থেকে মহকুমাশাসকের দফতরের দু’দিকে ব্যারিকেড করা হয়েছিল।

মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে সাংবাদিক বৈঠক করে প্রার্থীদের নিয়ে নাম ঘোষণা করেন বিশ্বজিত্‌বাবু। ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠও। প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক ছিল গোপালবাবুর কাছে। তিনি প্রার্থীদের মধ্যে তা বণ্টন করেন। চেয়ারম্যান ও তাঁর স্বামী শঙ্করবাবু বিধায়ককে প্রণাম করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। গোপালবাবু বলেন, “কর্মীদের মধ্যে যে সাড়া আজ মিলেছে তাতে জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।”

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE