ধৃত: রবিন দাস। নিজস্ব চিত্র।
এলাকায় নিজের ক্ষমতা বজায় রাখতে দলীয় নেতাকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল অনেক আগেই। সেই মতোই ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন করানোর অভিযোগ উঠল সন্দেশখালির তৃণমূলের অঞ্চল সম্পাদক রবিন দাসের বিরুদ্ধে।
পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেশখালির মণিপুর অঞ্চলের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন অরবিন্দ করণ। তাঁর খুনের অভিযোগে রবিবার রাতে ধামাখালি থেকে রবিনকে গ্রেফতার করা হয়। বেশ কয়েক লক্ষ টাকা সুপারি দেওয়া হয়েছিল ওই খুনিকে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। কিন্তু এখনও সে ধরা পড়েনি। সোমবার ধৃতকে বসিরহাট আদালতে তোলা হলে বিচারক ৭ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। সন্দেশখালির মণিপুরে বাড়ি রবিনের স্ত্রী স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সদস্য।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৭ মার্চ রাতে সভা শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে প্রাক্তন শিক্ষক তথা তৃণমূল নেতা অরবিন্দবাবু খুন হন। তাঁর বাড়ি জয়গোপালপুরে। এরপরেই নিহতের ছেলে পুষ্পেন্দু দশ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পরদিনই পুলিশ বিজেপি নেতা স্বপন দাস এবং সুশান্ত মাইতিকে গ্রেফতার করে। এরপরে ধরা পড়ে পূর্ব আতাপুর গ্রামের বাসিন্দা শুকুর মোল্লা, অরবিন্দ সুঁই এবং মোবারক লস্কর। এলাকায় তিনজনই রবিনবাবুর সাগরেদ বলে পরিচিত।
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, এলাকা পরিচালনার লোভ ছিল রবিনের। কিন্তু তার পথের কাঁটা ছিলেন অরবিন্দবাবু। অঞ্চল সম্পাদকের পদ থেকে রবিনকে সরিয়ে দেওয়ার কথাও তিনি ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছিলেন বলে রবিন জানতে পারে। এরপরেই সভাপতিকে খুনের পরিকল্পনা করে রবিন।
বিজেপির জেলা সভাপতি বিকাশ সিংহ এবং সিপিএমের সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে তৃণমূলের দলীয় কোন্দলের কথা সবার জানা। প্রথম থেকেই আমরা বলেছিলাম মাস্টারমশাইকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্তে জড়িত তৃণমূল। এখন সেটাই প্রমাণিত হল।’’
এলাকায় অরবিন্দবাবু খুব ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গ্রামের মানুষ জানান, অরবিন্দবাবু খুনের পর রবীনই মোবাইলে ফোন করে বহু মানুষকে খবর দেয়। সে মৃতদেহের সঙ্গে হাসপাতালে যায়। কী ভাবে দুষ্কৃতীরা অরবিন্দবাবুকে খুন করেছে তা ঊর্ধ্বতন নেতাদের জানায়। দলীয় নেতা খুনের ঘটনায় শোক মিছিলে প্রথম সারিতে হাঁটে রবীন। খুনের গল্প সামনে আসায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী জানান, রবিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে রবিন বলে, ‘‘আমি চক্রান্তের শিকার। এই খুনে আমাকে মিথ্যা জড়ানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy