Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
বসিরহাট

তরুণীকে ‘খুন’, পলাতক যুবক

তরুণীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসে অনার্স নিয়ে এমএ পড়তেন মিলি বেরা (২২) নামে ওই তরুণী। বসিরহাট থানার ছোট জিরাকপুরের স্কুলপাড়ার বাসিন্দা।

এই খাটেই পড়েছিলেন রক্তাক্ত মিলি । ছবি: নির্মল বসু।

এই খাটেই পড়েছিলেন রক্তাক্ত মিলি । ছবি: নির্মল বসু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৫
Share: Save:

তরুণীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসে অনার্স নিয়ে এমএ পড়তেন মিলি বেরা (২২) নামে ওই তরুণী। বসিরহাট থানার ছোট জিরাকপুরের স্কুলপাড়ার বাসিন্দা। তাঁর বাবা হরিপদ বেরা মিলির প্রেমিক বিশ্বজিৎ সর্দার ওরফে ঝন্টুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন থানায়। তদন্তে নেমেছে। ঝন্টু পলাতক।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর পাঁচেক ধরে মিলি এবং বিশ্বজিতের সম্পর্ক। দুই পরিবারই জানত সে কথা। পাড়ার ছেলে ঝন্টু রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। অভাবের সংসারের মিলি গৃহশিক্ষকতার পাশাপাশি বিউটি পার্লারে কাজ নিয়েছিলেন।

পুলিশের দায়ের করা অভিযোগে মিলির পরিবার জানিয়েছে, ঝন্টুকে বিশ্বাস করে তাঁর দাবি মতো মাঝে মধ্যে কিছু গয়না, টাকা তার হাতে তুলে দিয়েছিলেন মিলি। ইতিমধ্যে মিলির দাদা অভিজিৎ বিএসএফে চাকরি পান। সে জন্য কিছু টাকার দরকার পড়ে। ঝন্টুর কাছ থেকে টাকা, গয়না ফেরত চান মিলি। অভিযোগ, সে সব ফিরিয়ে দিতে নানা টালবাহানা শুরু করেন ঝন্টু। বিয়ের কথা বললেও স্পষ্ট উত্তর দিতেন না।

টাকা ফেরত চাইতেই মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্বজিতের বাড়িতে গিয়েছিলেন মিলি। দু’জনের ঝগড়া বাধে। সন্ধের দিকে পাড়ার বাসিন্দা কমল গাইন ঝন্টুকে ডাকতে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখেন, ঘরের বিছানায় অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে মিলি। কান দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে।

ঝন্টু বলে, সাইকেল চালানোর সময়ে পড়ে গিয়ে কানে চোট পেয়েছেন মিলি। তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে পাঠানো হয় আরজিকরে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় এনআরএসে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সেখানেই মারা যান মিলি।

পুরো সময়টাই মিলির পাশে থেকেছেন ঝন্টু। বৃহস্পতিবার দেহ বসিরহাটে আনার পরে ভেঙে পড়েন। তাঁর ব্যবহারে সে সময়ে নানা অসঙ্গতি দেখা যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষজন। এরপরেই হরিপদবাবু থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁদের সন্দেহ, ঝন্টুর মারধরেই অসুস্থ হয়েছিল মেয়ে। সন্ধ্যা সর্দার নামে এক পড়শি বলেন, ‘‘ঝন্টু খানিকটা উগ্র স্বভাবের। রেগে গেলে মদ্যপ অবস্থায় বাবা-মাকেও মারধর করে।’’ অভিজিৎ বলেন, ‘‘নগদ এবং অলঙ্কার মিলিয়ে লক্ষাধিক টাকা বোনের কাছ থেকে নিয়েছিল ঝন্টু। সে সব ফেরত চাওয়াতেই ভারী কিছু দিয়ে বোনের মাথায় মেরেছিল। তাতেই মৃত্যু হয়েছে।’’

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশও মনে করছে, মদ্যপ অবস্থায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করায় বা লোহার খাটের সঙ্গে মাথা ঢুকে দেওয়ার ফলেই মারা গিয়েছেন তরুণী। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট ভাবে জানা যাবে না বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা অফিসারেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

investigation Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE