লন্ডভন্ড: ঝড়ে গাছ পড়েছে বসিরহাটে। ছবি: নির্মল বসু
ঘণ্টাখানেকের ঝড়-বৃষ্টি এবং বজ্রপাত— সোমবার সকালে দেগঙ্গায় এবং বসিরহাটে যার জেরে ৩ জনের মৃত্যু হল। দেগঙ্গায় দেওয়াল চাপা পড়ে গুরুতর জখম হলেন আরও এক মহিলা। অন্য দিকে, হাসনাবাদে গাছ পড়ে আহত হন এক ব্যক্তি।
দেগঙ্গায় মৃত্যু হয়েছে এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএমের এক প্রার্থী-সহ এক প্রতিবন্ধী তরুণীর। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত সিপিএম প্রার্থীর নাম আজমিরা বিবি (৩২)। অন্যজন মূক-বধির আনোয়ারা খাতুন (২৫)। হাসনাবাদের পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে বাজ পড়ে মৃত্যু হয় উৎপল পাত্রের (৪০)।
বৃষ্টির জল থেকে জমির ধান বাঁচাতে স্বামী জাহাঙ্গির আলমের সঙ্গে গিয়েছিলেন আজমিরা। জাহাঙ্গির বলেন, ‘‘আমরা এক সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলাম। স্ত্রী কিছুটা আগে ছিলেন। প্রচণ্ড জোরে বাজ পড়ে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন স্ত্রী। চোখের সামনে ছটফট করতে করতে প্রাণ বেরিয়ে যায়।’’
আজমিরার মৃত্যুর খবর পেয়ে এলাকায় যান উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা ইমতিয়াজ হোসেন। দেগঙ্গা ২ পঞ্চায়েতে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন আজমিরা। দেগঙ্গার বিডিও অনিন্দ্য ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছে। বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বেড়াচাঁপা ২ পঞ্চায়েতের চাঁদপুর-গিলেবাড়ি এলাকার আনোয়ারা মাঠে ছাগল চরাতে গিয়েছিলেন। ঝড়ের মধ্যে দ্রুত পায়ে বাড়ি ফিরছিলেন। বাজ পড়ে মাঠেই ঝলসে যান তিনি। আনোয়ারাকে উদ্ধার করে বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান।
এ দিনের বজ্রপাতে গুরুতর জখম হন দেগঙ্গার বেলিয়াঘাটা এলাকার বাসিন্দা লিন্টু ঘোষ। তাঁর পরিবার জানায়, বজ্রপাতের ঝলকানিতে ছিটকে পড়ে জ্ঞান হারান লিন্টু।
এ দিন ঝড়ে দেগঙ্গা থানার কাছেই নাগের ঝিলের সামনে টাকি রাস্তার ধারে একটি দোতলা বাড়ির চিলেকোঠার ইটের পাঁচিল ভেঙে পাশের একটি টালির ঘরের উপরে পড়ে। সেখানে ছিলেন বছর পঁয়তাল্লিশের পূর্ণিমা দাস। চাপা পড়ে চিৎকার করতে থাকেন তিনি। প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে যান। পরে পাঠানো হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে। পূর্ণিমার হাত ভেঙেছে, চোট আছে মাথাতেও।
বসিরহাটেও প্রবল ঝড়বৃষ্টি শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে। বহু গাছ ভেঙে পড়ে, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, হাসনাবাদের মহিষপুকুর গ্রামের উৎপল পাত্র মাছ ধরতে বেরিয়েছিলেন। বাজ পড়ে পুকুরেই জখম হন তিনি। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ দিনই ঝড়-বৃষ্টিতে হিঙ্গলগঞ্জ ঘোষপাড়ার কাছে রাস্তার পাশের কৃষ্ণচূড়া গাছ ভেঙে দু’টি দোকানের উপরে পড়ে। দোকান ভেঙে গুরুতর আহত হন সাজাহান সাহাজি। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
বৃষ্টির সময়ে বসিরহাট শহরে খানবাহাদুর রোডের একাংশ বিপজ্জনক ভাবে ধসে পড়ে। রাস্তার পাশে পুকুর থাকায় ভাঙন বড় আকার নেয়। এই পরিস্থিতে যাতায়াত বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই পথে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy