যাত্রী-বোঝাই: বিপজ্জনক যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র
কখনও অতিরিক্ত যাত্রী তোলে। কখনও বেপরোয়া ভাবে রেষারেষি করে।
হাবরার রাস্তায় অটোর রোগ অনেক। আর তার খেসারত দিতে হচ্ছে যাত্রীদের।
সম্প্রতি একাধিক অটো দুর্ঘটনা ঘটেছে হাবরায়। মারা গিয়েছে এক শিশু-সহ ২ জন। জখম হয়েছেন অন্তত জনা কুড়ি। সোমবারও স্টাফ কোয়ার্টার মোড়ের কাছে বাসকে ওভারটেক করতে গিয়ে এক অটো যাত্রীর পায়ে গুরুতর চোট লেগেছে। গত কয়েক দিন একাধিক অটো দুর্ঘটনায় আতঙ্কিত শহরবাসী। চালকদের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের অভিযোগও আছে ভুরি ভুরি। কিছু দিন আগে মছলন্দপুর এলাকায় অটো থেকে পড়ে এক যাত্রী জখম হন। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি রাস্তায় পড়েছিলেন। অটো চালক সেখান থেকে পালান।
দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে দু’টি যুক্তি উঠে আসছে।
প্রথমত, অটোর বেপরোয়া গতি। দ্বিতীয়ত, অতিরিক্ত যাত্রী তোলা। বেশি যাত্রী থাকার ফলেই চালকেরা জোরে অটো চালানোর সময়ে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছেন না বলে মনে করছেন অনেকেই। বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘‘উপায় না থাকায় অটোতে উঠতেই হয়। কিন্তু ভয়ে ভয়ে থাকি, এই বুঝি অটো উল্টে গেল। চালকদের আস্তে চালাতে বললে তাঁরা অনেকে সটান জানিয়ে দেন, না পোষালে নেমে যান।’’
যশোর রোড, হাবরা-মগরা সড়ক, হাবরা-বসিরহাট সড়ক, জিরাট রোড সর্বত্র চোখে পড়বে, গাদাগাদি করে যাত্রী নিয়ে চলছে অটো। বেআইনি অটোর দাপট তো রয়েইছে।
হাবরা শহরে যশোর রোড দখল করে বেআইনি ডিজেল অটো সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। সড়ক দখল হয়ে যাওয়ায় যানজটও বাড়ে। শহরবাসীর বক্তব্য, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা অটো চালকদের এতটাই দাপট, পুরসভার ট্রাফিক কর্মীদের পর্যন্ত তাঁরা পাত্তা দেন না। লাঠি উঁচিয়ে শাসাতে গেলে উল্টে ধমক খেতে হয়। এক সিভিক ভলান্টিয়ারের কথায়, ‘‘অটোকে কিছু বলতে গেলে আমাদেরও ভয় করে। হয় তো বলে দিল, অমুক দাদাকে ডেকে আনবে। কিংবা বলল, পরে বুঝে নেবে!’’
পুলিশ ও পুরসভার নাকের ডগায় কী ভাবে সড়ক দখল করে বেআইনি পার্কিং হচ্ছে, কী ভাবেই বা আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী তুলে বেপরোয়া গতিতে চলছে অটো— সে প্রশ্ন সকলেরই। শাসক দলের একাংশের মদতেই এমন কারবার চলে বলে মনে করেন অনেকে।
নিয়ম-মাফিক বক্তব্য দিয়েই দায়িত্ব সেরেছেন হাবরার পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস। তিনি বলেন, ‘‘বেআইনি অটো বন্ধ করতে পরিবহণ দফতরকে বলা হয়েছে। অটো চালকেরা যাতে অতিরিক্ত যাত্রী তুলে বেপয়োরা গতিতে অটো না চালান, সে জন্য তাদের নিয়ে শীঘ্রই বৈঠক করা হবে।’’
জেলা পরিবহণ দফতরের সরকারি প্রতিনিধি গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘হাবরার অটো চালকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন দ্রুত বেআইনি ডিজেল অটো পাল্টে আইনি এলপিজি অটো নেন। আমরা তার ব্যবস্থা করব। চালকেরা তা না করলে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’ বাসিন্দারা অবশ্য জানালেন, এমন প্রতিশ্রুতি আগেও বহুবার মিলেছে, কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে বেআইনি অটোর বিরুদ্ধে ধরপাকড় হয় না।
হাবরার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেছেন, অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলা অটোর বিরুদ্ধে ধরপাকড় নিয়মিত চলে। অটো বাজেয়াপ্ত করে চালকদের গ্রেফতারও করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy