হাবরায় সম্প্রতি কাপড়ের দোকান, মোবাইলের দোকান থেকে কয়েকটি মোবাইল চুরি হয়েছিল। তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে এলাকার দাগি চোরদের উপরে পুলিশের নজর পড়ে। কিন্তু কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও মোবাইলের সন্ধান মেলেনি।
অবশেষে সোমবার হরিণঘাটা এলাকা থেকে চোরকে পাকড়াও করে তদন্তের কিনারা করেছে পুলিশ। রবিবার হাবরা শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকার একটি মোবাইলের দোকানে একটি মোবাইল চুরি হয়েছিল। ওই দোকানের সিসি ফুটেজ দেখে অপরাধীকে শনাক্ত করা হয়।
কিন্তু গোটা ঘটনায় পুলিশের চোখ কপালে উঠেছে। জানা গিয়েছে, যে পর পর মোবাইল চুরি করছিল, সে অষ্টম শ্রেণির এক পড়ুয়া।
দোকানের মালিক আগে থেকে চিনতেন ছেলেটিকে। বছর দেড়েক আগেও সে একই দোকানে মোবাইল চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে। সে যাত্রায় অবশ্য দোকান মালিক থানা-পুলিশ করেননি। বাচ্চা ছেলে দেখে উল্টে তাকে ভাল খাইয়ে-দাইয়ে বাড়ি পাঠিয়েছিলেন।
ছেলেটির এখনও গোঁফের রেখাও ওঠেনি। বয়স মেরেকেটে পনেরো। এই বয়সেই চুরি বিদ্যায় হাত পাকিয়েছে। এর আগে আরও একবার হরিণঘাটায় মোবাইল সরাতে গিয়ে ধরা পড়ে সে। সে বার স্থানীয় পঞ্চায়েতে সালিশি সভা বসেছিল। ছেলেটি নাক-কান মূলে কথা দিয়েছিল, আর চুরি করবে না।
কিন্তু থামেনি তার দৌরাত্ম্য। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, এখন পর্যন্ত গোটা ২৫ মোবাইল সে চুরি করেছে। হাবরা, মছলন্দপুর, বনগাঁ, নগরউখরা, হরিণঘাটায় যাতায়াত ছিল তার। নানা জায়গা থেকে মোবাইল হাপিস করে দিত ছেলেটি।
নদিয়ার হরিণঘাটায় থাকে ছেলেটি। পুলিশকে সে জানিয়েছে, দু’মাস ধরে সে স্কুলে যায় না। জানিয়েছে, স্কুলে যেতে তার ভাল লাগে না।
কিন্তু শুধু মোবাইলের দিকেই নজর কেন তার?
ছেলেটির উত্তর আরও বিস্মিত করেছে তদন্তকারীদের। ওই নাবালকের কথায়, ‘‘বাবার কাছে একটি ভাল মোবাইল চেয়েছিলাম। বাবা বলেছিল, টাকা নেই। তাই দামী মোবাইলের খোঁজে চুরি করা শুরু করি।’’
কিন্তু তা হলে একটা মোবাইল হাতিয়েই থামতে পারত শখ পূরণের বিপজ্জনক এই অভ্যাস। ২৫টা মোবাইল চুরির দরকার কী ছিল?
ছেলেটি জানিয়েছে, কোনও মডেলই পছন্দ হচ্ছিল না তার। সেগুলো বিক্রি করে দিত। ফের আরও দামী মোবাইলের খোঁজ শুরু করত। একবার নাকি হাবরায় দোকানে জামা কিনতে গিয়ে দোকানির মোবাইল পর্যন্ত উঠিয়ে নিয়েছিল।
মোবাইল ছাড়া অন্য কিছুতে অবশ্য হাত দেয় না ছেলেটি। সে ধরা পড়েছে জেনেও বাবা-মা অবশ্য আসেননি থানায়। পুলিশ তাদের খবর পাঠিয়েছে। সল্টলেকের জুভেনাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে ছেলেটিকে। ফোনের নেশায় এরপরেও ছেলেটি ফের অপরাধের জগতে ফিরে যাবে কিনা, তা ভাবাচ্ছে পুলিশ কর্তাদেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy