Advertisement
১১ মে ২০২৪

মৌসুনির বালিয়াড়ায় ‘হোম স্টে-র’ সুযোগ

এটা সম্ভব হয়েছে এক প্রাক্তন তথ্য প্রযুক্তিকর্মীর হাত ধরে। বালিয়াড়ার সমুদ্র সৈকত ঘেঁষে অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষের জন্য ফেলা হয়েছে তাঁবু।

আশ্রয়: এরকম দু’টি তাঁবুতেই এসে থাকছেন পর্যটকরা। নিজস্ব চিত্র

আশ্রয়: এরকম দু’টি তাঁবুতেই এসে থাকছেন পর্যটকরা। নিজস্ব চিত্র

শান্তশ্রী মজুমদার
মৌসুনি শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৩
Share: Save:

অজপাড়া গাঁয়ে দ্বীপের একেবারে প্রান্তভূমিতে লুকিয়ে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এত দিন অধরা থাকলেও এখন রাজ্যের পর্যটন‌ মানচিত্রে বেড়ানোর একটি নতুন ঠিকানা হয়ে উঠছে। জায়গার নাম, মৌসুনি।

এটা সম্ভব হয়েছে এক প্রাক্তন তথ্য প্রযুক্তিকর্মীর হাত ধরে। বালিয়াড়ার সমুদ্র সৈকত ঘেঁষে অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষের জন্য ফেলা হয়েছে তাঁবু। পঞ্চায়েতের সাহায্যে তা ঘিরেই ক্রমে বাড়ছে পর্যটনের সম্ভাবনা। তৈরি হচ্ছে কর্মসংস্থান। দুর্গম এলাকা বলে পর্যটন বাড়ানোর সরকারি উদ্যোগ ছিল না দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৌসুনিতে। এখন ছোট উদ্যোক্তারাও এগিয়ে আসছেন।

প্রায় চার মাস হল ‘হোম স্টে’ চালু হয়েছে মৌসুনির বালিয়াড়ায়। একেবারে সমুদ্র সৈকত-লাগোয়া এলাকা। পক্ষী বিশারদ থেকে শুরু করে অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয় মানুষ এবং যাঁরা একটু নিরিবিলি পছন্দ করেন— তাঁদের কাছে নতুন বেড়ানোর জায়গা হয়ে উঠছে মৌসুনি দ্বীপের বালিয়াড়া। প্রাক্তন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী, তথা কলকাতার বাসিন্দা সিন্টু ভট্টাচার্য ও তাঁর এক সহযোগী শুভ্রাংশু ভাণ্ডারির সঙ্গে মৌসুনি পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় গড়ে তুলছেন নতুন বেড়ানোর এই জায়গা।

উদ্যোক্তাতা জানালেন, কয়েক মাস হল স্থানীয় এক কৃষকের সমুদ্রের ধারে পড়ে থাকা জায়গা ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। ওই জায়গাতেই তাঁবু ফেলা হয়েছে। সিন্টুবাবুর কথায়, ‘‘আমি বরাবরই ঘুরতে ভালবাসি। সে ভাবেই ঘুরতে ঘুরতে এসে পড়া মৌসুনিতে। পরিবেশ দেখে খুবই ভাল লাগল। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে অল্প পুঁজি লগ্নি করে শুরু হয় কাজকর্ম।’’

দু’টি তাঁবুতে ৬ জনের জায়গা হবে। খোলা আকাশের নীচে তাঁবুতেই থাকা খাওয়া। ঘরোয়া রান্নার আয়োজনে স্থানীয় একটি পরিবারের সদস্যদের কাজে লাগানো হয়েছে। কয়েকজনের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হয়েছে। সোলার প্যানেল দিয়ে আলো এবং মোবাইল চার্জের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁবুর পাশেই রয়েছে শৌচাগার। খোলা আকাশের নীচে ছাতা ফেলে মধ্যাহ্নভোজ এবং নৈশাহারের ব্যবস্থা। ক্যাম্প ফায়ার করার উপাদান থাকছে।

কয়েক মাস হল পর্যটকেরা সিন্টুবাবুর ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকেই আসছেন। সোস্যাল মিডিয়ায় মৌসুনির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, লাল কাঁকড়া এবং বিভিন্ন রকমের পাখির ছবি শেয়ার করছেন পর্যটকেরা।

মৌসুনি পঞ্চায়েতের প্রধান আদালত খাঁ বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে একদফা কথা বলে চালু হয়েছে এই মিনি পর্যটনের ব্যবস্থা। তবে আরও কিছু নিয়মকানুন এবং পদ্ধতিগত ব্যাপারের জন্য উদ্যোক্তাদের পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এবং পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে কথা বলা দরকার।’’ পঞ্চায়েত সব রকম সাহায্যের জন্যই প্রস্তুত বলে জানান তিনি।

সিন্টুবাবুরা জানিয়েছেন, অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয় মধ্যবিত্ত অনেকেই আসছেন। জাপান থেকেও কয়েকজন ঘুরে গিয়েছেন।

মৌসুনির যেতে গেলে নামখানা থেকে নৌকোয় মৌসুনির বাগডাঙা ঘাটে যেতে হবে। অথবা নামখানার দশমাইল বাজার থেকে খেয়া পেরিয়ে বাগডাঙা। সেখান মাত্র কয়েক কিলোমিটার বালিয়াড়া পৌঁছতে ভ্যান পাওয়া যায়। এলাকাবাসী দীর্ঘ দিন ধরে বালিয়াড়ার উল্টো দিকে নামখানায় দুর্গাপুর ঘাটটি চালু করার চেষ্টা করছেন। তা হলে নামখানা থেকে আরও সহজে মৌসুনি পৌঁছনো যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mousuni Baliara Home stays
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE