প্রতীকী ছবি।
এক্স-রে করতে খরচ পড়েছিল শ’দুয়েক টাকা। স্বামী জানিয়ে দেন, তাঁর কাছে ১০ টাকার বেশি নেই।
এই নিয়ে কথা কাটাকাটির মাঝেই রেগেমেগে কোলের সন্তানকে রাস্তায় ছুড়ে ফেললেন মা। এক বার নয়। তিন বার। রীতিমতো আছড়ে মারার মতো অবস্থা ছ’মাসের একরত্তি মেয়েটাকে।
আশেপাশে যাঁদের চোখে পড়েছিল সেই দৃশ্য, সকলে শিহরিত হয়ে ওঠেন। শনিবার দুপুরে বসিরহাটের রেজিস্ট্রি অফিস মোড়ের এই ঘটনায় মহিলা, তাঁর স্বামী ও শাশুড়িকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বসিরহাটের গ্রামে থাকেন ওই দম্পতি। প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন যুবক। সপরিবার শ্বশুরবাড়িতেই থাকেন। তাঁদের একমাত্র মেয়ের সবে মাস ছ’য়েকের।
এ দিন স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে মোটর বাইকে ওই যুবক এসেছিলেন বসিরহাট শহরে। স্ত্রীর পায়ে চোট লেগেছিল। প্যাথলজি সেন্টারে এসেছিলেন তাঁরা। এক্স-রে করানোর কথা ছিল। গোল বাধে ছবি তোলার পরে দু’শো টাকা দেওয়া নিয়ে। সঙ্গে ১০ টাকার বেশি নেই, জানিয়ে দেন স্বামী। তেড়ে ওঠেন স্ত্রী।
ততক্ষণে সেখানে পৌঁছেছেন ওই যুবকের শাশুড়ি। মোটর বাইকে উঠে বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম করেন মেয়ের বাবা। স্ত্রী রাগের মাথায় বলেন, ‘‘আমার চিকিৎসার খরচ যখন দিতে পারবে না, তোমার মেয়ের দায়িত্বও আমি নিতে পারব না।’’ এই বলতে না বলতেই মেয়েকে ছুড়ে ফেলেন কোল থেকে।
বাইক থেকে নেমে বাচ্চাকে তুলে স্ত্রীর কোলে দেন যুবক। ‘‘আমি পারব না কিছু করতে’’— বলে ফের মেয়েকে ফেলে দেন ওই তরুণী। আবার তুলে দেওয়া হলে আবারও ফেলেন। একরত্তি মেয়েটা তখন তারস্বরে কাঁদছে। এ সবের মধ্যে স্ত্রীর গালে চড়ও কষিয়ে দেন যুবক।
পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে বুঝে আশেপাশের লোকজন সকলকে নিয়ে যান বোটঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে। সেখান থেকে থানায়।
বসিরহাট থানার পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। বরং বোঝানো হয়, নিজেদের মধ্যে যতই রাগারাগি হোক, কোলের সন্তানকে এ ভাবে কষ্ট দেওয়া কেন।
চোখের জল মুছে তরুণী বলেন, ‘‘ভুল বুঝতে পেরেছি। সত্যিই তো, স্বামীর রোজগার না থাকলে উনিই বা কী করবেন। মিছিমিছি মেয়েটাকে কাঁদালাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy