বেচাকেনা: কাকদ্বীপের একটি সারের দোকানে। নিজস্ব চিত্র।
রবীন্দ্র পঞ্চায়েতের চাষি নিত্যানন্দ জানা মুগ ডাল চাষ করবেন বলে সার কিনতে গিয়েছিলেন কাকদ্বীপে। খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। আধার কার্ড ছাড়া সার দিতে চাননি দোকানি।
আধার কার্ডের ভিত্তিতেই কেবলমাত্র রাসায়নিক সার বিক্রি করা যাবে বলে কিছু দিন আগে নির্দেশ দিয়েছে কৃষি দফতর। তাতে সমস্যা বেড়েছে চাষিদের। বিষয়টির প্রচার নেই বলে বেশিরভাগ চাষিই আধার কার্ড দেখিয়ে সার নিতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছেন। সার বিক্রেতাদের বিক্রিও কমেছে। যদিও কৃষি দফতরের কর্তাদের দাবি, প্রচার যথেষ্টই রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অসুবিধা হলেও পরে কেটে যাবে।
আনাজ চাষি নিত্যানন্দ জানার কথায়, ‘‘সার নিতে গিয়ে জানতে পারলাম, আধার কার্ড লাগবে। নতুন নিয়ম হয়েছে। সব সময়ে আধার কার্ড সঙ্গে থাকে না। আবার ঘুরে আসতে হবে।’’
সম্প্রতি কাকদ্বীপ মহকুমার সমস্ত রাসায়নিক সার বিক্রেতাদের একটি করে অ্যান্ড্রয়েড ডেটা এন্ট্রি মেশিন দেওয়া হয়েছে। আধার কার্ডের তথ্য দিয়ে সার বিক্রির করার সঙ্গে সঙ্গেই তা কেন্দ্রীয় কৃষি দফতরের তথ্য ভাণ্ডারে জমা পড়ছে। কিন্তু এই ব্যবস্থায় সারের বিক্রি অনেকটাই কমে গিয়েছে বলে দাবি করছেন বিক্রেতারা।
কাকদ্বীপের এক বড় দোকানের সার বিক্রেতা শঙ্কর দাসের কথায়, ‘‘আধার কার্ড চাইলেই অনেক চাষিই তা দেখাতে পারছেন না। সপ্তাহে প্রায় ৪০ শতাংশ সার বিক্রি কমে গিয়েছে। এ এক নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে লড়তে হচ্ছে আমাদের।’’
প্রভাব পড়েছে বীজ বিক্রির ক্ষেত্রেও। কাকদ্বীপের এক বীজ বিক্রেতা ফণিভূষণ হাজরা বলেন, ‘‘যে সমস্ত চাষি নিয়মিত বীজ কেনেন, তাঁরা অনেকেই আসছেন না। একজনকে জিজ্ঞাসা করে জানলাম, সার কিনতে সমস্যা হচ্ছে বলে এই মরসুমে আপাতত বীজ কেনা বন্ধ রেখেছেন।’’
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, অনেকে প্রয়োজনের তুলনা। বেশি সার কিনে মজুত করেন গ্রামে। যাঁর জমি নেই, তিনিও নানা ভাবে ভর্তুকির সার কিনে খোলা বাজারে বেচে দেন। এ সব কালোবাজারি রুখতেই আধার কার্ডের তথ্য রাখা হচ্ছে। অতিরিক্ত কৃষি অধিকর্তা অভিনন্দন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘স্বচ্ছ ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে কৃষি দফতর। প্রাথমিক ভাবে কিছু সমস্যা থাকতে পারে। তবে প্রচার নেই এ কথা ভুল।’’
তবে চাষিদের একাংশের কথায়, ‘‘স্রেফ হয়রান করা হচ্ছে। এ ভাবে কখনও কালোবাজারি আটকানো যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy