পুরসভার সভাঘরে বৈঠকে প্রশাসনের কর্তারা। নিজস্ব চিত্র।
স্মার্ট সিটি হওয়ার দৌড়ে দেশের প্রথম একশোর তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে এই শহর। তাদের মধ্যে কারা প্রথম ধাপে নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের বরাদ্দ অর্থ পাবে, সে জন্য প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে মহড়া দিচ্ছে দুর্গাপুরও। কিন্তু অন্যান্য শহরের তুলনায় এখানে বাসিন্দাদের যোগদান অনেক কম। শহরের বাসিন্দাদের বিভিন্ন উদ্যোগে সামিল করতে তাই পুরসভার ও প্রশাসনের তরফে চালু করা হল ‘স্মার্ট দুর্গাপুর’ আ্যাপ। বুধবার অ্যাপটির উদ্বোধন করেন রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিব দেবাশিস সেন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কোনও অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে ডাউনলোড করা যাবে ‘স্মার্ট দুর্গাপুর’ নামের অ্যাপটি। শহরের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহণ, রাস্তাঘাট, পুর পরিষেবা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য হাতের মুঠোয় পেয়ে যাবেন শহরবাসী। শুধু তাই নয়, শহরের কোন কলেজে কী কী বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে, আসন সংখ্যাই বা কত— এমনই সব বিভিন্ন তথ্য মিলব এই অ্যাপ থেকে। পুর কর্তৃপক্ষের আশা, এলাকায় কোথায় স্কুল, হাসপাতাল রয়েছে— তারও হদিস পেতে গেলে অ্যাপই হয়ে উঠবে প্রধান ভরসা। এ ছাড়াও রেস্তোঁরা, হোটেল, গণ পরিবহন ব্যবস্থার যাবতীয় তথ্যও মিলবে অ্যাপ থেকে। পুর পরিষেবাগুলি সম্পর্কেও সাধারণ মানুষকে ওয়াকিবহাল করার জন্যও এই অ্যাপের উপরেই ভরসা করছেন প্রশাসনের কর্তারা। বিভিন্ন বিষয়ে আবেদন, এমনকী করও দেওয়া যাবে অ্যাপটির মাধ্যমে। কোনও পুর পরিষেবা সম্পর্কে অভিযোগ থাকলে, তা জানানোরও ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। শহরকে ‘স্মার্ট’ করার জন্য নাগরিক মতামতের লেনদেনও সম্ভব হবে বলে আশা প্রশাসনের। দুর্গাপুর পুরসভার কমিশনার তথা মহকুমাশাসক কস্তুরি সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘নতুন এই অ্যাপটি দুর্গাপুরকে কার্যত হাতের মুঠোয় নিয়ে আসবে।’’
এ দিন অ্যাপ উদ্বোধন উপলক্ষে পুরসভার সভাগৃহে একটি আলোচনাচক্রেরও আয়োজন করা হয়। অ্যাপের উদ্বোধনের পাশাপাশি শহরকে প্লাস্টিক মুক্ত করতেও বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হবে বলে জানা কস্তুরীদেবী। সরকারি দফতরগুলির পরিচ্ছন্নতার উপর জোর দেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। দেবাশিসবাবু প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ই-পরিষেবা চালুর পক্ষে সওয়াল করেন। দুর্গাপুরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অ্যাপটির মাধ্যমে আসলে শহরে ‘ই-গভর্ননেন্স’ তৈরি করতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করবে।’’ এ দিন একটি বেসরকারি ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে আলোচনায় যোগ দেন প্রাক্তন পুলিশকর্তা গৌতমমোহন চক্রবর্তী। ওই সংস্থাটি শহরের একটি শপিং মলে ইতিমধ্যেই নিখরচায় ওয়াই-ফাই পরিষেবার সংযোগ দিয়েছে। গৌতমমোহনবাবুর আশ্বাস, ‘‘স্মার্ট সিটি প্রকল্পেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।’’
সম্প্রতি স্মার্ট সিটির দৌড়ে টিকে থাকতে নাগরিক যোগদানের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নচিহ্নের মুখেই পড়ে গিয়েছে বলে মনে করছে প্রশাসনের একটি সূত্র। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও তেমন নাগরিক সাড়া মেলেনি। এরপরই বিষয়টি নিয়ে টনক নড়ে পুর কর্তৃপক্ষের। নাগরিক যোগদান বাড়াতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। শহরের পাঁচটি বোরোতে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে সরাসরি দরবার বসিয়ে মতামত নেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে। শহরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নাগরিক যোগদান বাড়াতেই অ্যাপ চালু করা হল বলে মনে করছেন শহরের বাসিন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy